আবারো মহাকাশ ঘুরে এলেন চার্লস সিমোনি
১১ এপ্রিল ২০০৯মার্কিন সাময়িকী ফোর্বস-এর তৈরি করা বিশ্বের শীর্ষ ধনীদের তালিকায় সিমোনির নাম স্থান না পেলেও, তিনি ১০ দিনের এ মহাকাশ ভ্রমণের জন্য ৩৫ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছেন৷ ৬০ বছর বয়সী সিমোনির সাথে ছিলেন পেশাদার মহাকাশচারী মার্কিন নাগরিক মিচেল ফিংকে এবং রাশিয়ার নাগরিক ইউরি লংকাকভ৷ তাঁরা ২৬ মার্চ বৃহস্পতিবার গ্রিনউইচ মিনটাইম ১১ টা ৪৯ মিনিটে যাত্রা শুরু করেন৷ সিমোনি কাজাখস্তানের মহাকাশযান উৎক্ষেপণ কেন্দ্র বোইকনুর থেকে রাশিয়ান সয়ুজ রকেটে করে মহাকাশের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়েছিলেন৷ এই অভিযানের জন্য ব্যবহৃত উৎক্ষেপণ স্থান থেকেই ১৯৬১ সালে রুশ মহাকাশচারী ইউরি গ্যাগারিন প্রথম মহাকাশ যাত্রা করেছিলেন৷ মহাকাশ যান সয়ুজের গতি ছিল ঘন্টায় ২২,০০০ কিলোমিটার৷
আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন (আইএসএস) থেকে তাঁদের ৭ এপ্রিল পৃথিবীতে অবতরণের কথা থাকলেও অবতরণস্থল স্যাঁতস্যাঁতে থাকায় একদিন পরে তাঁরা পৃথিবীতে ফিরে আসেন৷ তাঁরা মহাকাশ ভ্রমণ শেষে ৮ এপ্রিল সফলভাবে পৃথিবীতে অবতরণ করেন৷ বুধবার গ্রিনউইচ মিনটাইম ৭ টা ১৫ মিনিটে নিরাপদে ভূমিতে নেমে আসেন৷ এর আগে ২০০৭ সালের এপ্রিল মাসে সিমোনি প্রথমবার মহাকাশ ভ্রমণ করেছিলেন৷ ঐ সময় তিনি বিশ্বের শীর্ষ পর্যায়ের ধনী ব্যক্তিদের সাথে দলগতভাবে মহাকাশ ভ্রমণ করেন৷ উল্লেখ্য, ২০০১ সাল থেকে এ পর্যন্ত মোট ছয়জন মহাকাশ পর্যটক আইএসএস ভ্রমণ করার সুযোগ পেয়েছেন৷
এই মহাকাশ অভিযানের পর মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা'র সাথে এক যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে রসকসমস প্রধান আনাতোলি পারমিনভ তাদের ১৮তম এই মহাকাশ অভিযানকে বেশ ফলপ্রসূ এবং উৎসাহব্যঞ্জক বলে উল্লেখ করেছেন৷ তিনি বলেন, এই অভিযানে নির্ধারিত সকল কার্যক্রম সঠিকভাবে সম্পন্ন হয়েছে এবং অনেক গুরুত্বপূর্ণ বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা করা সম্ভব হয়েছে৷ পারমিনভ বলেন, এই অভিযান মহাকাশ গবেষণায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার সহযোগিতামূলক যৌথ উদ্যোগের ক্ষেত্রে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে৷
তবে পারমিনভ এই সময় নিশ্চিত করে বলেছেন, যে সিমোনিই তাদের সংস্থার সর্বশেষ মহাকাশ পর্যটক৷ রাশিয়া কি এরপর আর কোন পর্যটকের জন্য মহাকাশ ভ্রমণের আয়োজন করবে না – এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, দুঃখজনক হলেও তা সত্য৷ ভবিষ্যতে এ ধরনের অভিযানে শুধু তারাই অংশ গ্রহণ করবে যারা আইএসএস-এতে কাজের জন্য যাবে৷ পারমিনভ জানান, মহাকাশ স্টেশনে শীঘ্রই দু'টি নতুন গবেষণাগার চালু করা হচ্ছে৷ একটি হচ্ছে জাপানের 'কিবো' এবং অন্যটি হচ্ছে ইউরোপীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থার 'কলাম্বাস' মডিউল৷
প্রতিবেদক: হোসাইন আব্দুল হাই, সম্পাদনা: আবদুল্লাহ আল-ফারুক