আরজি কর-কাণ্ড: অধ্যক্ষের ইস্তফা, বদলি, অবশেষে ছুটি
আরজি কর থেকে ইস্তফা দেয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ন্যাশনাল মেডিক্যালে অধ্যক্ষ করা হয় সন্দীপ ঘোষকে। হাইকোর্টের নির্দেশে তিনি এখন ছুটিতে।
অধ্যক্ষের ‘ক্ষমতা’ দেখে আদালত বিস্মিত, হতাশ
প্রশ্নটা তুলেছেন হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি শিবজ্ঞানম। আরজি কর হাসপাতালে চিকিৎসককে ধর্ষণ করে হত্যার মামলায় শুনানি চলার সময় প্রধান বিচারপতি বলেন, ''সকালে অধ্যক্ষ নৈতিকতার কথা বলে পদত্যাগ করলেন। বিকেলে তাকে পুরস্কার দিয়ে অন্য জায়গায় বসানো হলো? কীভাবে এই কাজ করা হলো? আপনি কি এত পাওয়ারফুল মানুষ? আপনার যদি নির্যাতিতার প্রতি সহানুভূতি না থাকে তো কার থাকবে? কেউই আইনের উপরে নয়।
'ছুটিতে যেতে বলুন'
বিচারপতি শুনানির শেষে বলেন, ''বিকেল তিনটের মধ্যে সন্দীপ ঘোষকে বলুন ছুটির আবেদন করে লম্বা ছুটি নিতে। না হলে আমরা প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেবো।'' তারপর সন্দীপ ঘোষ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ১৫ দিনের ছুটির আবেদন করেন। ন্যাশনাল মেডিক্যালে আগের অধ্যক্ষই কাজ চালাবেন।
আলামত নষ্টের আশঙ্কা
প্রধান বিচারপতি বলেন, ''আশঙ্কা করা হচ্ছে, যত দেরি হবে, ততই প্রমাণ নষ্ট করা হতে পারে।'' আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্য আদালতে বলেন, ''পুলিশ, সকাল সাড়ে দশটায় বাড়িতে বলে, মেয়ে অসুস্থ। ১৫ মিনিট পরে জানায়, সে আত্মহত্যা করেছে। তিন ঘণ্টা বসিয়ে রেখে দেহ দেখতে দেয়া হয়।'' বিকাশের অভিযোগ, ''পুলিশ মিটমাট করে নিতে বলেছিল। চিটফান্ড কাণ্ডে প্রমাণ নষ্ট করা হয়েছিল। এবারও তাই হবে। তাই সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয়া হোক।''
সিবিআই তদন্তের নির্দেশ
প্রধান বিচারপতি শিবজ্ঞানমের বেঞ্চ আরজি করে চিকিৎসককে ধর্ষণ ও হত্যা vf/s সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। সব তথ্য, নথি, সিসিটিভি ফুটেজ সিবিআইকে দিতে হবে। পুলিশের কাজে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন প্রধান বিচারপতি।
পড়ুয়াদের দাবি
আন্দোলনরত পুড়ুয়ারা বলেছেন, তাদের দাবি হলো, বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে তদন্ত করতে হবে। সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সামনে আনতে হবে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট প্রকাশ্যে আনতে হবে। প্রধান বিচারপতি বলেছেন, চিকিৎসকরা ধরনা দিলে রোগীরা ভুগবেন। এটা ঠিক নয়। আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, তারা কোনো হাসপাতালেই জরুরি বিভাগ বন্ধ রাখেননি। সেখানে রোগীরা পরিষেবা পাচ্ছেন।
ন্যাশনাল মেডিক্যালে বিক্ষোভ
সন্দীপ ঘোষ যাতে ন্যাশনাল মেডিক্যালের অধ্যক্ষ হিসাবে দায়িত্ব না নিতে পারেন, সেজন্য ছাত্ররা সকাল থেকেই গেট বন্ধ করে রাখেন। অধ্যক্ষের অফিস ঘিরে রাখেন। তারা কাউকেই ঢুকতে দেননি। এমনকি বিধায়ক স্বর্ণকমল সাহা ও মন্ত্রী জাভেদ খান ন্যাশনাল মেডিক্যালে গেলে তাদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখানো হয়। আওয়াজ ওঠে, 'গো ব্যাক'। তারা ছাত্রদের বক্তব্য মুখ্যমন্ত্রীকে জানাবার কথা বলে চলে যান।
এনআরএসে বিক্ষোভ
আরজি করে চিকিৎসককে ধর্ষণ ও হত্যার প্রতিবাদে কলকাতার প্রায় সব সরকারি হাসপাতালে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে পড়ুয়া ও জুনিয়র ডাক্তাররা। নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল বা এনআরএসে বিক্ষোভের ছবি।
আরজি করে বিক্ষোভ চলছে
আরজি করে পড়ুয়া ও জুনিয়র ডাক্তারদের বিক্ষোভ চলছে। বিক্ষোভকারীরা জানিয়ে দিয়েছেন, তাদের দাবি না মানা পর্যন্ত বিক্ষোভ-আন্দোলন চলবে। দোষীর শাস্তি, বিচারবিভাগীয় তদন্ত, সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা, সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ করা এবং ময়নাতদন্তের রিপোর্ট প্রকাশের দাবি জানিয়েছে তারা।