সবুজসম্পদের হিসেব
৭ জানুয়ারি ২০১৫এর ফলে কঙ্গো গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রের বনভূমির পরিস্থিতি হয়ত বদলাবে না, কিন্তু কার্বন নির্গমন সার্টিফিকেট বেচার সময় কঙ্গোর ভবিষ্যতে লাভবান হবার সম্ভাবনা থাকবে৷ ধরা যাক একটি বিমান নির্দিষ্ট রুট বরাবর পশ্চিম আফ্রিকার কঙ্গো নদীর অববাহিকার উপর দিয়ে উড়ে চলেছে৷ একই সঙ্গে বিমানে রাখা বিশেষ যন্ত্র দিয়ে নীচের গাছপালা, বনজঙ্গল মাপা হচ্ছে৷
বিমানটিতে রয়েছে তথাকথিত ‘লিডার' প্রণালী: এটি এমন একটি রাডার, যা দিয়ে ভূপৃষ্ঠে যা কিছু আছে, তা স্ক্যান করা চলে৷ এই তথ্য থেকে পরে বনভূমির পরিস্থিতি যাচাই করা চলে: বনজঙ্গল অক্ষত আছে কিনা, নাকি তা ইতিমধ্যেই গাছ কাটা কিংবা গোচারণের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে৷
স্ক্যানের ফলাফল থেকে যে ত্রিমাত্রিক মানচিত্র তৈরি হবে, তাতে জঙ্গলের বিভিন্ন গাছের উচ্চতা, বাড়িঘর, রাস্তা, ফাঁকা মাঠ, সব কিছু দেখা যাবে৷ এই সব তথ্য মিলিয়ে জানা যাবে, এলাকাটি কী পরিমাণ কার্বন ডাই-অক্সাইড ধরে রাখতে পারে৷
কঙ্গো নদীর অববাহিকা আয়তনে প্রায় পশ্চিম ইউরোপের সমান৷ এখানকার সব তথ্য সংগ্রহ করে তার মূল্যায়ন করতে বেশ কয়েক মাস সময় লাগবে৷ কিন্তু সেই তথ্য হবে অত্যন্ত কাজের, বলে মনে করেন ডাব্লিউডাব্লিউএফ বা ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ফান্ড ফর নেচার-এর এলভিস শিবাসু:
‘‘অরণ্য সংরক্ষণ এবং ভবিষ্যতে সিওটু সার্টিফিকেট নিয়ে ব্যবসার প্রস্তুতি হিসেবে এটা গণপ্রজাতন্ত্রী কঙ্গোর পক্ষে ভালো৷''
যদি কখনো এমিশন বাণিজ্য থেকে এই অঞ্চলে অর্থসমাগম হয়, তাহলে মধ্য আফ্রিকার দেশগুলি কঙ্গো অববাহিকার অরণ্যাঞ্চলকে বাঁচিয়ে রেখে অনেক বেশি রোজগার করবে৷ অবশ্য সে প্রক্রিয়া শুরু হতে এখনো অনেক বাকি – ওদিকে সময় ফুরিয়ে আসছে৷ জনসংখ্যা ক্রমেই বেড়ে চলেছে; সেই ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার জ্বালানির চাহিদা মোটানোর জন্য গাছ কেটে কাঠকয়লা তৈরি করে, ট্রাক-ট্রাক কাঠকয়লা শহরে পাঠানো হচ্ছে৷
‘লিডার' লাইট ডিটেকশন অ্যান্ড রেঞ্জিং পদ্ধতিতে কঙ্গো-র ‘বায়োমাস' বা অরণ্যসম্পদের পরিমাপ করার প্রকল্পের দায়িত্বে আছেন অরেলি শাপিরো৷ শুধু বিমান থেকে তোলা ছবি দিয়ে সে কাজ করা সম্ভব নয়৷ সেজন্য স্যাটেলাইট থেকে তোলা ছবিরও প্রয়োজন পড়ে, জানালেন শাপিরো:
‘‘বিমান থেকে পাওয়া লিডার-তথ্যকে স্যাটেলাইট থেকে পাওয়া তথ্যের সঙ্গে মিলিয়ে দেখা হয়৷ মহাকাশ থেকে গোটা দেশের বনভূমিকে এক নজরে দেখা যায়৷''