ক্যাপিটল হাঙ্গামার আগে ঠিক কথাই বলেছি: ট্রাম্প
১৩ জানুয়ারি ২০২১ট্রাম্প বদলাবেন না। ক্যাপিটলের মতো ঘটনার পরও নয়। ক্যাপিটলে তাঁর সমর্থকদের তাণ্ডবের আগে ট্রাম্প অত্যন্ত বিতর্কিত একটি ভাষণ দিয়েছিলেন। যার জেরেই তাঁর সমর্থকরা ক্যাপিটলে যান এবং সহিংস তাণ্ডব করেন বলে অভিযোগ। তারপর অ্যামেরিকা তো বটেই, সারা বিশ্ব ট্রাম্পের নিন্দায় মুখর।
তাঁর সমর্থকদের ক্যাপিটলে যাওয়ার উস্কানি নিয়ে ট্রাম্পের সমালোচনা কম হয়নি। কিন্তু মার্কিন প্রেসিডেন্ট মনে করেন, তিনি একটিও অন্যায্য কথা বলেননি। তিনি যা বলেছেন ঠিক বলেছেন।
হোয়াইট হাউস থেকে ট্রাম্প এদিন টেক্সাস যান। মেক্সিকোর সীমানায় দেওয়াল তৈরির কাজ দেখতে। তার আগে ওয়াশিংটনে ট্রাম্প যা বলেছেন, তার মধ্যে দুইটি বিষয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমত, তিনি তাঁর সমর্থকদের যা বলেছিলেন তা একেবারে ঠিক কথা। দ্বিতীয়ত, ডেমোক্র্যাটরা তাঁকে ইমপিচ করার চেষ্টা করায় মানুষ অত্যন্ত ক্রুদ্ধ।
বুধবারই ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিশংসন প্রস্তাব নিয়ে হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভে ভোটাভুটি হতে পারে। তারপর তা সেনেটে যাবে। তার আগে ট্রাম্পের বক্তব্য, অভিশংসন প্রস্তাব দেশের ভাবমূর্তিতে ধাক্কা দিয়েছে এবং এর ফলে প্রবল ক্রোধও তৈরি হয়েছে।
এফবিআই আগে থেকেই মার্কিন প্রশাসনকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, বাইডেন প্রেসিডেন্ট পদে দায়িত্ব নেয়ার দিন বা তার আগে অথবা পরে ট্রাম্প সমর্থকরা সশস্ত্র হাঙ্গামা করতে পারে। সে জন্য ওয়াশিংটনে প্রচুর নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
ট্রাম্প কী বলেছিলেন
গত ৬ জানুয়ারি ট্রাম্প তাঁর সমর্থকদের সরাসরি বলেছিলেন, ''আমরা ক্যাপিটলে যাব, আমাদের সাহসী সেনেটর ও কংগ্রেস সদস্যদের উৎসাহিত করব। তবে কয়েকজনকে উৎসাহিত করার জন্যই আমরা সেখানে যাব না। আপনাদের শক্তি দেখাতে হবে।''
ট্রাম্প বলেছিলেন, ''ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সের নিজের কর্তব্য পালনের সাহস থাকা উচিত।'' তার মানে ট্রাম্প চেয়েছিলেন, পেন্স তাঁর সাংবিধানিক ক্ষমতা প্রয়োগ করে ভোটের ফলকে অগ্রাহ্য করুন।
সমর্থকদের ট্রাম্প সরাসরি বলেন, ''আমি জানি, আপনারা তাড়াতাড়ি ক্যাপিটলে যাবেন এবং শান্তিপূর্ণভাবে এবং দেশভক্তিকে সঙ্গী করে আপনাদের ক্ষমতা প্রদর্শন করবেন।''
এরপরই ট্রাম্প সমর্থকরা ক্যাপিটলে যান, তাণ্ডব করেন, এর ফলে পাঁচজন মারা গেছেন, ভবনের ক্ষতি হয়েছে, গণতন্ত্র আক্রান্ত হয়েছে বলে বিশ্ব জুড়ে রব উঠেছে।
রিপাবলিকানরা কী করবেন
ডেমোক্র্যাটরা ট্রাম্পকে অবিলম্বে ইমপিচ করতে চান। হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভে প্রস্তাব পাস করানো তাদের পক্ষে সম্ভবত অসুবিধাজনক হবে না। কারণ, এখানে সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতায় প্রস্তাব পাস করানো যাবে। প্রশ্ন হলো সেনেটে কী হবে? সেখানে প্রস্তাব পাস করাতে গেলে দুই তৃতীয়াংশ ভোট লাগবে। তাই জরুরি প্রশ্ন হলো রিপাবলিকানরা কী করবেন?
নিউ ইয়র্ক টাইমস জানাচ্ছে, রিপাবলিকান নেতা ম্যাকনেল ঘনিষ্ঠমহলে জানিয়েছেন, ডেমোক্র্যাটরা অভিশংসন প্রস্তাব আনায় তিনি খুশি। তিনি মনে করেন, ট্রাম্পকে ইমপিচ করা হলে পার্টি থেকেও তাঁকে ছেঁটে ফেলা সম্ভব হবে। ওয়াশিংটন পোস্ট জানিয়েছে, ম্যাকনেল তাঁর সহযোগীদের বলেছেন, ট্রাম্প গুরুতর অপরাধ করেছেন, তাই তাঁকে ইমপিচ করা উচিত। আরেক রিপাবলিকান সদস্য লিজ চেনি জানিয়েছেন, তিনি অভিশংসন প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেবেন।
রিপাবলিকান সদস্যদের মধ্যেও ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ্যে আসছে। তবে এক, দুই জন অভিশংসন প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিলে হবে না, বেশ কিছু রিপাবলিকান সেনেটরকে প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিতে হবে। তা হলেই একমাত্র ট্রাম্পকে ইমপিচ করা যাবে।
জিএইচ/এসজি(এপি, রয়টার্স, এএফপি)