বরফে গড়া নতুন শহর
চীনের হারবিন শহর এখন বরফ এবং তুষার উৎসব নিয়ে মুখর৷ যেনতেন উৎসব নয়, এটা বরফের বিশ্ব গড়ার অনিন্দ্য সুন্দর এক আন্তর্জাতিক উৎসব৷ ছবিঘরে দেখুন স্রেফ বরফ আর তুষারের এক স্বপ্নের পৃথিবী...
বরফের শহর
চীনের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় শহর হারবিন প্রতি বছর এই সময়টায় সেজে ওঠে নতুন সাজে৷ শীতে তো বরফ পড়েই আর সেই বরফ দিয়েই ভাষ্কররা গড়েন নানা কিছু৷ সব মিলিয়ে গড়ে ওঠে অসাধারণ এক নতুন শহর৷ ভাষ্করদের এই কর্মযজ্ঞের নামই আন্তর্জাতিক বরফ ও তুষার উৎসব৷ আবহাওয়া ঠিক থাকলে এবারও ৫ জানুয়ারি শুরু হয়ে এক মাস চলবে এ উৎসব৷
শেষ ছোঁয়া
হারবিনে এখন চলছে ইন্টারন্যাশনাল আইস অ্যান্ড স্নো ফেস্টিভ্যাল শুরুর শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি৷ সোংহুয়া নদীর বরফের চাঁই কেটে তৈরি এক ভবনকে আরো সুন্দর, আরো নিখুঁত করতে ‘ফিনিশিং টাচ’ দিচ্ছেন এক শিল্পী৷ হারবিনে এখন প্রচণ্ড শীত৷ রাতে তাপমাত্রা মাইনাস ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত নেমে যায় আর দিনে শীত একটু কমলেও তাপমাত্রা কখনো মাইনাস ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে ওঠে না৷
শতভাগ সতর্কতা
ইট-পাথরের ভবন তৈরির মতোই পূর্ণ সতর্কতা আর যত্নে বরফ কেটে তৈরি করা হয় এ ধরনের ব্লক আর একের পর এক ব্লক সাজিয়েই গড়ে তোলা হয় বিশাল বিশাল বরফ-বাড়ি৷
পানি দিয়ে বরফ জোড়া
বিশাল বিশাল বরফের চাঁই কেটে তৈরি হয় ব্লক আর অসংখ্য ব্লক থরে থরে সাজিয়ে গড়ে তোলা হয় সুউচ্চ ভবন৷ ব্লকগুলো ঠিকভাবে জোড়া না লাগলে যে কোনো সময় ঘটে যেতে পারে ভয়াবহ দুর্ঘটনা৷ দুর্ঘটনা এড়াতে প্রতি দুটি ব্লকের মাঝে পানি ঢেলে দেন ভাষ্কররা৷ সেই পানিও বরফ হয়ে দুটো ব্লককে পুরোপুরি মিলিয়ে দেয়৷
লোহার কাঠামো
ভবনের কাঠামো তৈরিতে ব্যবহার করা হয় লোহার রড৷ বিশ্বের সবচেয়ে বড় বরফ উৎসবের আয়োজকরা জানান, প্রতিবছর বরফের শহর গড়ে তোলার কাজ করেন অন্তত ১২ হাজার কর্মী৷
মধ্যাহ্ন বিরতি
কাজ করতে করতে ঠান্ডায় জমে যায় হাত৷ দুপুরের খাবার খেতে প্লাস্টিকের তাঁবুতে ঢুকে কর্মীদের প্রথম কাজ তাই হাত দুটো গরম করে নেয়া৷ তারপর শুরু হয় ভুরিভোজ৷
বরফ-রাজ্যে স্নিগ্ধ সৌন্দর্য
উৎসব প্রাঙ্গনে প্রকাণ্ড এক বুদ্ধমূর্তি৷ ভাষ্করদের হাতের ছোঁয়ায় ধীরে ধীরে আরো স্বচ্ছ, আরো স্নিগ্ধ হয়ে উঠছেন বৌদ্ধ ধর্মের প্রবর্তক৷
দীর্ঘ ঐতিহ্য
হারবিনের এই বরফ উৎসব প্রথম হয়েছিল ১৯৯৫ সালে৷ তবে চীনে বরফ দিয়ে ভবন এবং নানা ধরনের শিল্প সৃষ্টির ঐতিহ্য অনেক পুরোনো৷ কুইং রাজবংশের শাসনামলে এর সূচনা হয়েছিল বলে জানা যায়৷ কুইং রাজবংশের শাসনকাল সতের শতক থেকে বিশ শতকের প্রথম দিক পর্যন্ত বিস্তৃত৷
রঙিন পৃথিবী
রাতে এভাবেই নানা রঙের আলোয় রাঙানো হয় উৎসব প্রাঙ্গন৷ দেখে মনে হয় যেন স্বর্গ নেমে এসেছে মর্ত্যে৷
বরফে বিস্ময়কর স্থাপত্য
বরফের তৈরি হলে কী হবে, উৎসবের কোনো কোনো কাজ দেখে আপনি অবাক হয়ে যাবেন৷ উৎসবের ভবনগুলোর আকার-আকৃতিই তো বিস্ময় জাগানোর জন্য যথেষ্ট, একেকটির উচ্চতা ৫০ থেকে ১৬৫ ফুট!