বার্সেলোনা: ভূ-মধ্যসাগরের অপূর্ব শহর

১৯৯২ সালে অলিম্পিক গেমস উপলক্ষ্যে এই ভবনটি নির্মাণ করা হয়েছিল৷ এর কারণে বন্দরটি অবশ্য লাভবানই হয়েছে৷ ঐ অলিম্পিকের পর থেকে এখানকার বার, রেস্তোরাঁগুলো পর্যটকের জনপ্রিয় ভ্রমণ স্থান হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে৷ ১৯৯২ সালের অলিম্পিকের জন্য বিশাল আকৃতির এই ‘স্বর্ণ মৎসটির’ নকশা করেছিলেন বিখ্যাত স্থপতি ফ্রাংক গেহরি৷

নাগরিক জীবন থেকে ছুটি চান বা কয়েকটা দিন সৈকতে কাটাতে চান? এ দু’টোর দারুণ সংমিশ্রণ হলো বার্সেলোনা৷ শহরে থেকেও এক পা বাড়ালেই সমুদ্র, তাই নাগরিক জীবনের সাথে সামঞ্জস্য করা ভীষণ সুবিধা৷ বার্সেলোনাকে ঘিরে আছে সাতটি সমুদ্র সৈকত, যেখান থেকে আপনি ভূ-মধ্যসাগরে সূর্যস্নানের সুযোগ পাবেন৷

শহরের অদূরে যে সমুদ্র সৈকতটি, তার থেকে খুব কাছেই বার্সেলোনার ঐতিহাসিক এই কেন্দ্রস্থলটি৷ এর আয়তন এক কিলোমিটার৷ ফুটপাতের পাশে ক্যাফেগুলো ফ্রেশ হওয়ার জন্য যেন আপনাকে হাতছানি দিতে থাকে৷ শেরি ওয়াইন, তাপাস, মানে বিভিন্ন ধরনের স্ন্যাক্স’সহ নানারকম সুস্বাদু খাবার পাবেন এখানে৷

লা রাম্বলার উত্তরে বারি গোতিক, পুরোনো শহরের গথিক কোয়ার্টার৷ এখানকার বেশিরভাগ ঐতিহাসিক ভবন ১৪ বা ১৫ শতকে তৈরি৷

অনেক জায়গায় পুরোনো শহরের রাস্তাগুলো ছোট বা বড় স্কয়ার বা চত্বরে গিয়ে মিলেছে৷ প্লাকা রিয়াল সিটি সেন্টার রাতের পর্যটকদের অন্যতম পছন্দের জায়গা৷

আধুনিক বার্সেলোনার গুরুত্বপূর্ণ নজির সৃষ্টি করেছেন আন্তোনি গাউডি৷ তাঁর নকশায় বানানো সাগ্রাদা ফামেলিয়া চার্চ বার্সেলোনার অন্যতম দ্রষ্টব্য স্থান৷ বিশ্বের বিখ্যাত ভবনগুলোর অন্যতম এটি৷

আলো আর রঙের এমন অপূর্ব সংমিশ্রণ বিশ্বের আর কোনো চার্চের ভেতরে হয়ত দেখতে পাবেন না৷ গাউডি তাঁর স্থাপত্যে প্রকৃতি থেকে অনুপ্রেরণা পেয়েছেন৷ ছাদটা এমনভাবে নির্মিত যে, মনে হবে এর কলামগুলো গাছের মতো আকাশের দিকে মুখ করে আছে৷

বার্সেলোনা এমন একটা শহর, যে শহর আপনাকে অনেক কাজে উৎসাহ দেবে৷ মন্টউইক পাহাড়ের উপর জাদুঘরটি জোয়ান মিরোর স্মরণে তৈরি৷ এই শিল্পীর কাজে কাতালান ফোক আর্টের বিষয় ও রং চোখে পড়ে৷ তাঁর তৈরি বর্নিল ভাস্কর্য এবং সেরামিকের কাজ বার্সেলোনা জুড়ে চোখে পড়বে৷

বার্সেলোনার সবচেয়ে রোম্যান্টিক জায়গা ফন্ত মাগিকা৷ ১৯২৯ সালে নির্মিত এই ঝর্ণাটিতে আলোর ৫০ট রকমের বর্ণচ্ছটা আপনাকে অভিভূত করবে৷ শহরের সবচেয়ে বড় ঝর্ণা এটি৷

বার্সেলোনা দু’টো পাহাড় দিয়ে ঘেরা৷ এর একটি মন্টউইক (১৭৩ মিটার) আর অন্যটি তিবিদাবো (৫২০ মিটার)৷ তিবিদাবো থেকে আপনি শহরের বেশিরভাগ অংশটা দেখতে পাবেন৷ বার্সেলোনার একমাত্র ঐতিহাসিক ট্রামলাইন দ্য ট্রামভিয়া ব্লাও-এর সাহায্যে আপনি পাহাড়ের উপরে উঠতে পারবেন৷