ব্রেমেনকে ভালোবাসার দশ কারণ
জার্মানির সবচেয়ে ছোট রাজ্য ব্রেমেন৷ পর্যটকরা রাজ্যটির শহুরে সংস্কৃতি যেমন পছন্দ করেন, তেমনি ভালোবাসেন সমুদ্রকেন্দ্রিক সংস্কৃতিকে৷ চলুন ব্রেমেনকে ভালোবাসার দশটি কারণ জেনে নেয়া যাক৷
সৌভাগ্যের সন্ধান
‘গ্রিম ব্রাদার্স’ বা গ্রিম ভাতৃদ্বয়ের গল্প ‘দ্য টাউন মিউজিশিয়ান্স অফ ব্রেমেন’-এ সন্ধান মেলে শহরের মার্কেট স্কয়ারে৷ কথিত আছে, ভালোবাসা না পেয়ে চারটি প্রাণী তাদের ঘর ছেড়ে একসময় ব্রেমেন এসেছিল৷ সেই চার প্রাণীর স্মরণে ১৯৫৩ সালে একটি তামার ভাস্কর্য তৈরি করা হয়৷ রূপকথা অনুযায়ী, ভাস্কর্যটিতে থাকা গাধাটির সামনের পা ধরলে নাকি সৌভাগ্যের সন্ধান পাওয়া যায়৷
শহরের অভিভাবক
রোনাল্ডের ভাস্কর্যটি সেই ১৪০৪ সাল থেকে ব্রেমেনের মার্কেট স্কয়ারে দাঁড়িয়ে আছে৷ শ্রুতি রয়েছে, যতদিন রোনাল্ড শহরের দিকে নজর রাখবে, ততদিন ব্রেমেন মুক্ত এবং স্বাধীন থাকবে৷ টাউন হলের সঙ্গে এই ভাস্কর্যটিও ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ৷
জেতার ফর্মুলা
ব্রেমেনের বণিক এবং ব্যবসায়ীদের প্রায় ৬০০ বছর সেবা দিয়েছে সাবেক শ্যুটিং গিল্ড হাউস৷ ১৮৮৯ সালে এটির সামনের অংশে ‘বুটেন উন বিনেন ভাগেন উন ভিনেন’ বাক্যটি যোগ করা হয়৷ এটি ছিল আরো সাফল্যের আশায় ব্রেমেনের বণিকদের দেশে এবং বিদেশে থাকা সম্পদ বিনিয়োগের ঝুঁকি নেয়ার আহ্বান৷
পূর্ণ পালের নীচে
ব্রেমেনকে সমুদ্রের সঙ্গে যোগ করিয়ে দিয়েছে ভেসের নদী৷ পালতোলা এ সব নৌকায় করে বণিকরা ইউরোপের উত্তরাঞ্চল থেকে বিভিন্ন কাঁচামাল কিনে আনেন এবং কাপড় ও লোহার তৈজসপত্র বিক্রি করেন৷ ইউরোপের মধ্যযুগে ব্রেমেনসহ ৭০টি বড় নগর এবং শতাধিক ছোট শহর মিলে ‘হানসেটিক লিগ’ তৈরি করেছিল৷
একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক
ব্রেমেন স্থাপত্য শিল্পীরা সতের শতাব্দীতে অসংখ্য ফিগার তৈরি করেছিলেন, যেগুলো সিটি হলের সামনের দিকে যোগ করা হয়৷ আর এখানে আপনি পাবেন ব্রেমেনের চাবির সন্ধান৷ রাজ্যেটির প্রতিবেশী হামবুর্গ নিজেদের পৃথিবীর গেট মনে করেন, আর ব্রেমেনরা মনে করেন সেই গেটের চাবি থাকে তাদের কাছে৷
অবশেষে নারীরাও একই টেবিলে
ঐতিহ্যবাহী ‘সাফেরমালসাইট’ ভোজে অংশ নিতে প্রতি বছর একশো জাহাজের ক্যাপ্টেন, একশো বণিক এবং একশো অতিথি ব্রেমেনের টাউন হলে মিলিত হন৷ মূলত এই তিন শ্রেণির মধ্যে যোগাযোগ বাড়াতে সেই ১৫৫৪ সাল থেকে নিয়মিত ব্রেমেনে এই ভোজের আয়োজন করা হচ্ছে৷ ২০১৫ সালে প্রথমবারের মতো এই ভোজে নারীদের অংশ নেয়ার সুযোগ দেয়া হচ্ছে৷
সমুদ্রে সবাই নিরাপদ
১৫০ বছর আগে দুর্ঘটনায় ধ্বংস হওয়া একটি জাহাজের ধ্বংসাবশেষ এক শিক্ষককে এতই আলোড়িত করেছিল যে, তিনি তখন জার্মান ‘মেরিটিম সার্চ অ্যান্ড রেসকিউ সার্ভিস (ডিজিজেডআরএস)’ প্রতিষ্ঠা করেন৷ এরপর দাতাদের অর্থে বেশ দ্রুতই এই সেবার সম্প্রসারণ ঘটে৷ বর্তমানে যে কোনো আবহাওয়ায় যে কোনো সময় উদ্ধার কাজ পরিচালনায় সক্ষম এই প্রতিষ্ঠানটি৷
ইউরোপের অন্যতম বড় কন্টেইনার পোর্ট
ব্রেমেরহাফেন সমুদ্রবন্দর হচ্ছে ইউরোপের অন্যতম বড় কন্টেইনার পোর্ট৷ প্রতিবছর ৫০ মিলিয়ন টনের মতো মালামাল এই বন্দর থেকে পরিবহন হয়৷
নতুন পৃথিবীর সন্ধানে
ব্রেমেরহাফেনে অবস্থিত ‘জার্মান ইমিগ্রেশন সেন্টার’ অগুনতি মানুষের বিদায়ের সাক্ষী৷ ঊনিশ এবং বিশের শতকে সাত মিলিয়নের বেশি মানুষ এই বন্দর থেকে নতুন ঠিকানার সন্ধানে ব্রেমেন ত্যাগ করেছেন৷
জলবায়ু অ্যাডভেঞ্চার
ব্রেমেরহাফেনের হার্বার শহরে অবস্থান এই ‘ক্লিমাহাউসের’৷ গ্লাসের তৈরি ভবনটির মধ্যে পর্যটকদের বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলের বিভিন্ন ধরনের আবহাওয়ার স্বাদ দেয়া হয়৷