ভারতের সিদ্ধান্তে সমস্যায় বাংলাদেশ
বাংলাদেশের মানুষ যেন গরুর মাংস খাওয়া ছেড়ে দেয় সেজন্য ভারত থেকে বাংলাদেশ গরু পাচার সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করতে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্যদের নির্দেশ দিয়েছেন সে দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী৷
সীমান্তরক্ষীদের নতুন দায়িত্ব
ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের ২,২১৬ কিলোমিটার সীমান্ত পাহারা দেয়ায় নিয়োজিত প্রায় ৩০ হাজার ভারতীয় সৈন্যকে নতুন দায়িত্ব দেয়া হয়েছে৷ সেটা হলো, ভারতীয় গরু যেন কোনোভাবেই বাংলাদেশে পৌঁছতে না পারে৷ ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বিএসএফ সদস্যদের এই নির্দেশ দেন যেন ‘বাংলাদেশের মানুষ গরুর মাংস খাওয়া ছেড়ে দেয়’৷
গরু পবিত্র
হিন্দুদের কাছে গরু একটি পবিত্র প্রাণী৷ তাই ভারতের হিন্দুত্ববাদী বিজেপি সরকার গরুর মাংস খাওয়া নিষিদ্ধ করতে চায়৷ রাষ্ট্রীয় স্বেচ্ছাসেবক সংঘ আরএসএস এর পশ্চিমবঙ্গের মুখপাত্র বলেছেন, ‘‘গরু জবাই কিংবা চোরাই পথে চালান, আর হিন্দু মেয়েকে ধর্ষণ করা বা হিন্দু মন্দির ধ্বংস করা একই কথা৷’’
চার যুগের ইতিহাস
ভারত থেকে চোরাই পথে আসা গরুই এতদিন বাংলাদেশের মানুষের মাংসের প্রধান উৎস ছিল৷ গত চার দশক ধরে সেটা হয়ে আসছে৷ এর সঙ্গে প্রায় ৬০০ মিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য জড়িয়ে আছে৷
দাম বেড়ে গেছে
বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় গরুর মাংস রপ্তানিকারক বেঙ্গল মিট এর সৈয়দ হাসান হাবিব গত জুলাই মাসে রয়টার্সকে জানান, ভারতের এই সিদ্ধান্তের কারণে বাংলাদেশে গরুর মাংসের দাম প্রায় ৪০ শতাংশ বেড়ে গেছে৷ আর মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে তাঁর কোম্পানির মাংস রপ্তানি প্রায় ৭৫ শতাংশ কমে গেছে৷
চাকরি হারিয়েছে প্রায় ৪,০০০
বাংলাদেশ ট্যানারস অ্যাসোসিয়েশন এর প্রেসিডেন্ট শাহীন আহমেদ জানিয়েছেন, জুন পর্যন্ত চামড়া শিল্পে কর্মরত প্রায় চার হাজার কর্মীর চাকরি গেছে৷ আর ১৯০টি ট্যানারির মধ্যে ৩০টি সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে গেছে৷
ভারতীয় গরুর মাংস ভালো
বেঙ্গল মিট এর সৈয়দ হাসান হাবিব বলেন, তিনি এখন নেপাল, ভুটান ও মিয়ানমার থেকে মাংস আমদানির চিন্তা করছেন৷ কিন্তু ভারতীয় মাংস ও চামড়ার মান ভালো বলে জানান তিনি৷ উল্লেখ্য, ভারত গরুর মাংসের সবচেয়ে বড় রপ্তানিকারক৷
ভারতের সিদ্ধান্ত বলবৎ থাকবে
ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেছেন মাংসের জন্য বাংলাদেশকে নতুন উৎস খুঁজে বের করতে হবে কেননা ভারত তার সিদ্ধান্তে অটল থাকবে৷