মানবিক সম্পর্কে হতাশা, পুরুষ ঝুঁকছে পুতুলে
জাপানের অনেক পুরুষের মাঝে মানবিক সম্পর্কে হতাশা দেখা দিয়েছে৷ তাঁদের অনেকে ঝুঁকছেন পুতুলের দিকে৷ কেউ ঘর ভেঙে নতুন এই সম্পর্কে জড়াচ্ছেন৷ আবার কারো ঘর ভাঙছে এই সম্পর্কে জড়ানোয়৷
মাসায়ুকি ওজাকির ভালোবাসা
ছবিটি দেখে হঠাৎ মনে হতে পারে, কোনো ব্যক্তি তাঁর অসুস্থ্য স্বজনকে নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন৷ ছবিতে দেখা যাওয়া মাসায়ুকি ওজাকি পরম মমতায় যাকে বয়ে নিয়ে যাচ্ছেন, তাঁকে তিনি স্বজনই মনে করেন৷ তবে হুইল চেয়ারে করে নারীকে দেখা যাচ্ছে, তিনি কোনো কারণে অসুস্থ্য নন৷ কোনো দুর্ঘটনায় তাঁর চলার ক্ষমতা শেষ হয়ে যায়নি৷ এভাবেই তাঁকে তৈরি করা হয়েছে৷ হ্যাঁ, তাকে তৈরিই করা হয়েছে৷ নারীমূর্তিটি বাস্তবে একটা পুতুল৷
মায়ুর সঙ্গে যাত্রা
ওজাকি পুতুলটির নাম রেখেছেন মায়ু৷ কোনো এক শো রুমে দেখে পছন্দ হয়ে যাওয়া মায়ু ধীরে ধীরে ওজাকির জীবনে প্রভাব বিস্তার করতে থাকে৷ নিজের জায়গা করে নিয়েছে পরিবারের অন্যদের মাঝেও৷ ‘রাবার রোমান্সে’-র এই সঙ্গীকে নিয়ে ড্রাইভেও বের হন ওজাকি৷
হতাশ ওজাকি ফিরতে চান না মানবিক সম্পর্কে
মানবিক ভালোবাসায় হতাশ ওজাকি দাবি করেছেন, তাঁর নতুন এই প্রেম ‘লাভ অ্যাট ফার্স্ট সাইটে’-র মতো৷ তিনি আর ফিরতে চান না মানবিক সম্পর্কে৷ যদিও তিনি তাঁর স্ত্রী এবং সন্তানের সঙ্গে এখনো একই ছাদের নীচেই বাস করছেন৷
পরিবারে অশান্তি-বিভেদ
যেহেতু এই পুতুল ব্যবহার হয় যৌনতায়ও৷ তাই এটা অনেকের পারিবারিক জীবনে অশান্তি ডেকে আনছে৷ ৬২ বছর বয়স্ক সেনজি নাকাজিমার জীবনেও তাই ঘটেছে৷ তাঁর পুতুল প্রেমিকার নাম সাওরি৷ সাওরিকে নাকাজিমার ছেলে মেনে নিলেও মেয়ে মানতে পারেনি৷ পারিবারিক বাসায় সাওরির প্রবেশ নিষিদ্ধ৷
পুতুল-মানবী
সার্ফিংয়ের জন্য সৈকতে নেয়ার পূর্বে সাওরিকে প্রস্তুত করছেন তিনি৷ এভাবেই জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে গেছে পুতুল মানবী৷
নতুন জাপানী-প্রবণতা
কেবল ওজাকি নয়, নতুন এই সম্পর্কে ঝুঁকছেন দেশটির বিপুর সংখ্যক পুরুষ৷ প্রতি বছর দুই হাজার এ রকম পুতুল বিক্রি হচ্ছে জাপানে৷ এই পুতুলগুলের দাম ৬ হাজার মার্কিন ডলারের মতো৷ পুতুলের আঙুল প্রয়োজন ও পছন্দ মতো নেয়া যায়৷ আলাদা করা যায় মাথা ও যৌনাঙ্গও৷ অর্থাৎ মনে না ধরলে মুখ এবং যৌনাঙ্গ পাল্টে ফেলা যায় অচিরেই৷
সত্যিকারের স্পর্শ মেলে?
পুতুল প্রস্তুতকারক ওরিয়েন্ট ইন্ডাস্ট্রির ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিডেও সুচিয়া বলেন, ৭০-এর দশকের পর এ পণ্য উৎপাদনে প্রযুক্তি অনেক এগিয়ে গেছে৷ এখন এটা অনেকটা বাস্তবের মতোই মনে হয়৷ ছুঁয়ে দেখলে মনে হবে, আপনি সত্যিকারের মানুষের ত্বকই স্পর্শ করছেন৷ অনেক বেশি পুরুষ এখন এটা কিনছে৷ কারণ তাঁরা এর সঙ্গে সত্যিকারের যোগাযোগ করতে পারছেন বলে মনে করছেন৷