স্থানীয় চরিত্র বজায় রেখে নতুন স্থাপত্য
৮ মার্চ ২০১৪গ্রামের সব বাড়িঘর যে এক রকম দেখতে, তার পেছনে রয়েছেন একজন স্থপতি৷ তিনি অষ্টাদশ শতাব্দীর একটি খামারবাড়ি সংস্কার করেছেন৷ আগে যেখানে শুয়োরের খোয়াড় আর খড়ের গাদা ছিল, সেখানে এখন সিমেন্ট দিয়ে তৈরি আধুনিক কাঠামো৷ তবে গ্রামের স্থাপত্য রীতি মেনেই তা করা হয়েছে৷ স্থপতি কুয়র্ট হাউয়েনস্টাইন বলেন, ‘‘কাঠামো ও গ্রামের নিজস্ব পরিচয় বজায় রেখে কীভাবে নতুন করে নির্মাণ করা যায়, সেটাই ছিল আমাদের লক্ষ্য৷ তবে নতুনত্বকে বর্জন করে নয়৷ এ নিয়ে বেশ ভাবতে হয়েছে৷ গ্রামের বিবর্তনের পথে নতুন নির্মাণ চালিয়ে যেতে হবে৷''
পুরানো ও নতুনের সহাবস্থান সত্যি দেখার মতো৷ হাউয়েনস্টাইনের স্ত্রী মারিলিস ড্যুস্টারহাউস বলেন, ‘‘আপনাদের স্বাগত জানাই৷ ভেতরে আসুন, বাড়িটা ভালো করে ঘুরে দেখাই৷ নীচে সবচেয়ে পুরানো অংশটি দেখা যাক৷ এখানে দুটি গুদামঘর ছিল৷ এদিকে জুসার, এখানে বাকি যন্ত্রপাতি ছিল৷ এই ঘরটি সন্ধ্যায় মিডিয়া রুম হয়ে যায়, মানুষ আরামে বসতে পারে৷''
সর্পিল পথে পুরানো থেকে নতুন বাড়ি যেতে হয়৷ মারিলিস আরও বলেন, ‘‘এখানে আগে গোলাঘর ছিল, যেখানে গরুর গাড়ি ঢুকে যেত৷ তারপর পশুদের এখান দিয়ে নীচের আস্তাবলে নিয়ে যাওয়া হতো৷ এটাই পুরানো অংশ, তার মাঝে নতুন অংশে যাবার পথ, যেখানে আমরা যাচ্ছি৷ এবার বাড়ির নতুন অংশে ঢুকছি৷ এর দুটি অংশ রয়েছে৷ প্রচুর আলো-বাতাস ঢোকে৷ উপরে ড্রয়িং রুম, নীচে আমার স্বামীর কাজের ঘর, পেছনে বেডরুম আর এখানে সুন্দর লাউঞ্জ৷''
যেখানেই সম্ভব মূল অংশ অক্ষত রাখা হয়েছে৷ আধুনিক রান্নাঘরের দেওয়ালটি সত্যি দেখার মতো অথবা জানালার পাশের বেঞ্চটি, যেখানে কত প্রজন্মের মানুষই না বসেছে৷ প্রাচীনের প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়েই সংস্কার চালানো হয়েছে৷ মারিলিস বলেন, ‘‘আমরা এখন বাড়ির সবচেয়ে পুরানো অংশে রয়েছি, এটাই মূল আকর্ষণ৷ এখানে যে পুরানো কাঠের প্যানেল দেখছেন, তা মোটামুটি অক্ষত রেখেই সংস্কার চালানো হয়েছে৷ জানালাগুলিও আগের অবস্থায় রয়েছে৷ ওভেনটিও আগের যুগের৷ শীতে ঘর গরম রাখে, সেই উত্তাপ বড়ই আরাম দেয়৷ নতুন আসবাবপত্রও এখানে দিব্যি খাপ খেয়ে যায়, আমাদের খুব ভালো লাগে৷ এখন এই দরজা দিয়ে বাড়ির নতুন অংশে যাওয়া যায়৷ যেমনটা দেখছেন, এখানে প্রচুর আলো৷ কোনো না কোনো জানালা দিয়ে সূর্যের আলো ঢুকবেই৷ ঘুরে দাঁড়ালে আমাদের এলাকার পাহাড়ও দেখা যায়৷ এখানে আসার পর আমরা আবার স্নো-বোর্ডিং শুরু করেছি, চালিয়েও যাচ্ছি৷ আর মিনিট দশেক গেলেই ট্রেন স্টেশন৷''
৩৬০ বর্গ মিটারের বাড়িটি বেশ সমানভাবে ভাগ করা হয়েছে৷ একদিকে পুরানো, অন্যদিকে নতুন অংশ৷ কোনো একটিকে বেছে নেবার কোনো প্রয়োজন নেই৷ কারণ সংস্কারের ফলে দুটি অংশেরই ভালো দিকগুলি উপভোগ করা যায়৷