1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
বিচার ব্যবস্থাভারত

আরজি কর নিয়ে প্রশ্নবিদ্ধ তদন্ত, স্তিমিত আন্দোলন

২৫ ডিসেম্বর ২০২৪

আরজি করের নির্যাতিতার বাবা-মার আবেদন গ্রহণ করলো না কলকাতা হাইকোর্ট। বাবা বললেন, কোর্টের দরজায় বিচারের ভিক্ষা চাইছি।

https://p.dw.com/p/4oZ9E
আরজি কর নিয়ে প্রতিবাদস্থল এখন ফাঁকা।
আরজি কর নিয়ে আন্দোলন এখন স্তিমিত। ছবি: Satyajit Shaw/DW

আরজি করের চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা আলোড়ন ফেলেছিল পশ্চিমবঙ্গে। জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের সমর্থনে রাস্তায় নেমে এসেছিলেন হাজার হাজার সাধারণ মানুষ। নির্যাতিতার বাবা-মা বারবার বলেছিলেন, তারা ন্যায়বিচার চান। নির্যাতিতার বাবা এখন বলছেন, ‘'বিচারের জন্য কোর্টের দরজায় ভিক্ষা চাইছি। আন্দোলন স্তিমিত হওয়ার পরই তদন্ত ঝুলে গেছে।‘‘

কী বলেছেন হাইকোর্টের বিচারপতি?

নির্যাতিতার বাবা-মা তদন্ত প্রক্রিয়ায় সন্তুষ্ট না হয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। তারা দাবি করেছিলেন, হাইকোর্টের তত্ত্বাবধানে তদন্ত হোক। বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের বেঞ্চে মামলার শুনানি হয়।

বিচারপতি বলেছেন, ‘'বিষয়টি সুপ্রিম কোর্ট দেখছে। হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চেও মামলাটি বিচারাধীন আছে। তাই এখন সিঙ্গল বেঞ্চের পক্ষে মামলাটি নিয়ে এগোনো সম্ভব নয়। তবে সুপ্রিম কোর্ট বা কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির কাছে নজরদারি সংক্রান্ত নির্দেশ পেলে তিনি তত্ত্বাবধান করতে পারবেন।‘'

বিচারপতি জানিয়েছেন, তিনি নিম্ন আদালতের বিচার প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করতে পারেন। কিন্তু ডিভিশন বেঞ্চ বা সুপ্রিম কোর্টে কোনো মামলা চললে, তিনি তা করতে পারেন না।

সিবিআইয়ের আইনজীবীর বক্তব্য

সিবিআইয়ের আইনজীবী রাজদীপ মজুমদার আদালতে বলেছেন, সুপ্রিম কোর্টের নজরদারিতে তদন্ত চলছে। তারা চার্জশিট দেয়ার পর তিনটি রিপোর্ট জমা দিয়েছেন সর্বোচ্চ আদালতে। সেই রিপোর্টে তদন্তের কাজে সিবিআই কতটা এগিয়েছে, তা বলা হয়েছে। 

নির্যাতিতার বাবা-মা-র তরেফ আইনজীবী সুদীপ্ত মৈত্র দাবি করেন, সুপ্রিম কোর্টের নজরদারিতে তদন্ত চলছে, এমন কোনো কথা বলা হয়নি।

নির্যাতিতার পরিবার যা বললেন

নির্যাতিতার বাবা পরে জানিয়েছেন, ‘'সুবিচারের জন্য যা যা করতে হয়, যতদূর যেতে হয় আমরা যাব। দেরি হোক, আমরা ধৈর্য ধরব। আমাদের জীবনের একটাই লক্ষ্য, আর কোনো লক্ষ্য নেই। আমরা সুবিচার চাই।‘'

তিনি বলেছেন, ‘'আমরা যে আবেদন করেছি, দাবি রেখেছি, সিবিআই এবং আদালত তাকে মান্যতা দিয়েছে, এটুকুই বলতে পারি।''

শুভেন্দু অধিকারীর প্রতিক্রিয়া

নির্যাতিতার বাবা-মা তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তদন্ত এখন সিবিআইয়ের হাতে, তারা আবার কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে। তাই বিজেপিও বিরোধীদের তোপের মুখে পড়েছে।

রাজ্যের বিরোধী নেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, ‘'সুপ্রিম কোর্ট গতিশীল হয়েছে, তাতে শুধুমাত্র ধর্ষক ও হত্যাকারী নয়, চক্রান্তে জড়িত সকলে শাস্তি পাবে। আমি পরিবারের সঙ্গে একমত, সংগঠিত চক্রান্তের বলি হয়েছেন আমাদের এই বোন।‘' শুভেন্দু মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্য সরকারের পুলিশ ও প্রশাসনের কর্তাদের বিরুদ্ধেও অভিয়োগ করেছেন। তার দাবি, ‘'চক্রান্তকারী পুলিশ অফিসারদের আজ নয় কাল যেতে হবে।‘'

আন্দোলনকারীদের বক্তব্য

আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের নেতা অনিকেত মাহাতো ডিডাব্লিউকে বলেছেন, ‘'তদন্তের যে অবস্থা চলছে, তাতে সিবিআইকেও মেরুদণ্ড উপহার দিতে হবে বলে মনে হচ্ছে।‘'

তিনি জানিয়েছেন, ‘'জুনিয়র ডাক্তা্ররা আন্দোলনের রাস্তা থেকে সরে আসছেন না।‘'

প্রবীণ সাংবাদিক ও অসমীয়া প্রতিদিনের ব্যুরো চিফ আশিস গুপ্ত ডিডাব্লিউকে বলেছেন, ‘'আরজি কর পরবর্তী সময়ে যে ধরনের আন্দোলন হয়েছিল, তা একবার স্তিমিত হয়ে গেলে, আবার তা ফিরিয়ে আনা খুবই কঠিন। কারণ, জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনে মূলত শহরের মধ্যবিত্ত মানুষরা সামিল হয়েছিলেন। সেটা ছিল আবেগের বিস্ফোরণ। একবার সেই আন্দোলন গতি হারালে তারপর আর তা আগের জায়গায় ফিরে যেতে পারে না। আবার তা পুনরুজ্জীবীত হওয়া খুবই কঠিন।‘'

জিএইচ/এসজি (পিটিআই, এএনআই)