আর্থিক মন্দার ধাক্কায় কাত এশিয়ার পর্যটন শিল্প
২২ এপ্রিল ২০০৯কারণ, ক্রেতার অভাবে হোটেলটি নানা সুস্বাদু খাবারের সমারোহ এখন হ্রাসকৃত মূল্যে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে৷ অর্থনৈতিক মন্দার আগে হোটেলের বারান্দায় প্রায়ই ভ্রমণকারীদের ল্যাপটপ নিয়ে কাজ করতে অথবা পানশালায় পানীয় উজাড় করতে দেখা যেতো৷ এখন এ হোটেল চত্বরে আসলেই বোঝা যায়, হংকং-এর ২০.৪ বিলিয়ন ডলারের পর্যটন শিল্পের পরিণতি৷ উল্লেখ্য, ২০০৮ সালে হংকং-এর পর্যটন শিল্পের আয় ছিল মোট জিডিপি'র ৭ শতাংশ৷ গত বছর ২৯.৫ মিলিয়ন ভ্রমণকারী হংকং বিমান বন্দর ব্যবহার করেছে৷ একই সাথে এশিয়ার আবাসিক হোটেলগুলোতে ঘর ভাড়া গত পাঁচ বছরের মধ্যে এবারই সবচেয়ে কমে গেছে৷ দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সোল-এ হোটেল ভাড়া কমেছে ২০ শতাংশ এবং ফিলিপাইনের রাজধানী ম্যানিলায় কমেছে ৩০ শতাংশ৷ তবে চীনের বেইজিং-এ হোটেল ভাড়া ১৩ শতাংশ কমলেও শাংহাইতে গত বছরের চেয়ে ২ শতাংশ বেড়েছে৷
আমেরিকা ভিত্তিক এ্যাসোসিয়েশন অব কর্পোরেট ট্রাভেল এক্সিকিউটিভস এর নির্বাহী পরিচালক সুসান গার্লি বলেন, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো এখন যে কোন কর্মকর্তার জন্য ভ্রমণ আয়োজনে আগের চেয়ে বেশি করে খতিয়ে দেখে সেটি কতটুকু লাভজনক৷ এ পরিপ্রেক্ষিতে, শুধুমাত্র হোটেলগুলোই নয়, একই রকম ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের বিমান পরিবহন খাত৷ আন্তর্জাতিক বিমান পরিবহন সংস্থার হিসাব অনুযায়ী, এই অঞ্চলের বিমান সংস্থাগুলো এই বছরে ১.৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ক্ষতির সম্মুখীন হবে৷ ইতিমধ্যে, সিঙ্গাপুর এবং জাপান এয়ারলাইন্স এর শোভন শ্রেণীর পরিষেবা সম্বলিত বেশ কিছু বিমান যাত্রা বাতিল করতে হয়েছে৷
অন্যদিকে, অর্থনৈতিক মন্দার কারণে এখন ব্যবসার কাজে ভ্রমণের পরিবর্তে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা সচিত্র টেলিকনফারেন্সিং প্রক্রিয়া বেছে নিতে বাধ্য হচ্ছেন৷ এ প্রক্রিয়ায় সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা একটি নির্দিষ্ট সময়ে নিজ নিজ দপ্তরে বসে ইন্টারনেটের মাধ্যমে অডিও এবং ভিডিও সংযোগ চালু করে প্রয়োজনীয় বৈঠক করে নিচ্ছেন৷ গার্টনার গবেষণা সংস্থার মতে, এ প্রবণতা এখন ক্রমান্বয়ে বাড়ছে৷ তবে তাদের হিসাব অনুযায়ী, নতুন এ প্রবণতার ফলে ২০১২ সালের মধ্যে বিমান সংস্থাগুলোকে ২.১ মিলিয়ন আসন কমাতে হবে৷ যার ফলে ভ্রমণ শিল্পের ক্ষতি হবে বছরে ৩.৫ বিলিয়ন ডলার৷
প্রতিবেদক: হোসাইন আব্দুল হাই, সম্পাদনা: আব্দুস সাত্তার