ইউনূস বিতর্কে যোগ হচ্ছে আরেক ছবি
৪ ডিসেম্বর ২০১০সম্প্রতি ইউনূসের ক্ষুদ্রঋণ কর্মকাণ্ড নিয়ে প্রশ্ন তোলেন টম হাইনম্যান৷ ডেনমার্কের এই ফ্রিল্যান্স সাংবাদিকের প্রামাণ্যচিত্রটির শিরোনাম, ‘ক্ষুদ্রঋণের ফাঁদে'৷ এই প্রামাণ্যচিত্রে প্রায় দেড় দশক আগের এক ঘটনা তুলে আনেন টম৷ তথ্য উপাত্ত দিয়ে তিনি প্রমাণের চেষ্টা করেন, ইউরোপের বিভিন্ন দেশের দাতাদের দেওয়া কোটি কোটি টাকা গ্রামীণ ব্যাংক থেকে গ্রামীণ কল্যাণ নামক অপর একটি প্রতিষ্ঠানে সরিয়ে নিয়েছেন মুহাম্মদ ইউনূস৷
আলোচনার ঝড়
এই অর্থ স্থানান্তরের বিষয়টি গোপন রাখা হয় বলেও প্রামাণ্যচিত্রে তুলে ধরেন টম৷ এছাড়া ক্ষুদ্রঋণের বাস্তবতা নিয়েও নেতিবাচক পরিস্থিতি উঠে আসে তাঁর প্রামাণ্যচিত্রে৷ বলাবাহুল্য ৩০ নভেম্বর নরওয়ের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন এনআরকেতে এটি প্রচারের পর দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমে আলোচনার ঝড় ওঠে৷
নোবেল কমিটি
বিষয়টি গড়ায় নোবেল কমিটি পর্যন্ত৷ তবে নোবেল কমিটির সেক্রেটারি গেইর লানডেস্টাড গণমাধ্যমকে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, মুহাম্মদ ইউনূস ও গ্রামীণ ব্যাংককে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার দেওয়ার সিদ্ধান্তে কোন ভুল ছিল না৷
গ্রামীণ ব্যাংকের বিবৃতি
ইতিমধ্যে অবশ্য ইউনূসের বিরুদ্ধে অর্থ স্থানান্তরের অভিযোগ উড়িয়ে দেয়েছে গ্রামীণ ব্যাংক৷ শুক্রবার সংস্থাটি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘এসব সংবাদ প্রতিবেদন সম্পূর্ণ বানোয়াট ও ভিত্তিহীন’৷
গ্রামীণ ব্যাংক এবং গ্রামীণ কল্যাণের মধ্যকার সম্পর্ক বিষয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, গ্রামীণ ব্যাংক বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১৯৯৬ সালে গ্রামীণ কল্যাণ প্রতিষ্ঠা করা হয়৷ গ্রামীণ ব্যাংকের ঋণগ্রহীতা ও কর্মচারীদের লাভের জন্যই এটা করা হয়৷
গণমাধ্যমে গ্রামীণ কল্যাণকে ইউনূসের নিজের প্রতিষ্ঠান হিসেবে তুলে ধরা হলেও গ্রামীণ ব্যাংকের বিবৃতি জানাচ্ছে, ‘কোম্পানি আইন অনুযায়ী গ্রামীণ কল্যাণ একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান৷ ব্যক্তিগতভাবে কেউ এর শেয়ারের মালিক হতে পারেন না৷'
তাছাড়া তহবিল সরানোর বিষয়টি ১৯৯৮ সালেই নিষ্পত্তি হয় বলে জানিয়েছে গ্রামীণ ব্যাংক৷
ইউনূসকে নিয়ে আরেক ছবি
এদিকে, ইউনূসকে নিয়ে যখন এত বির্তক তখনই আরেক ঘোষণা দিলেন ইটালির এক চলচ্চিত্র পরিচালক৷ ক্ষুদ্রঋণ নিয়ে এই নোবেল জয়ী'র সংগ্রামের ইতিহাস সেলুলয়ডের পর্দায় তুলে ধরতে চান মার্কো আমেনতা৷ ছবির নামও ঠিক করে ফেলেছেন তিনি, ‘ব্যাংকার টু দ্য পুওর'৷ একই নামে ইউনূসের আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থটির সত্ত্বও কিনে নিয়েছেন মার্কো৷
বর্তমানে ভারত সফররত মার্কো জানান, আগামী বছরই ভারত, বাংলাদেশ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ছবির শুটিং হবে৷ ইউনূসের চরিত্রে সেখানে অভিনয় করতে পারেন বলিউড তারকা ইরফান খান৷ তবে অভিনেতা নির্বাচনের বিষয়টি পুরোপুরি চূড়ান্ত হয়নি৷
উল্লেখ্য, ২০০৬ সালে শান্তিতে নোবলে জয় করেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং গ্রামীণ ব্যাংক৷
প্রতিবেদন: আরাফাতুল ইসলাম
সম্পাদনা: রিয়াজুল ইসলাম