‘ইন্দোনেশিয়ার বায়ু নিরাপত্তা খতিয়ান ভালো নয়’
৩০ ডিসেম্বর ২০১৪এয়ারএশিয়া-কে ডিসকাউন্ট এয়ার ট্রাভেল-এর ক্ষেত্রে এশিয়ায় পথিকৃৎ বলা চলতে পারে৷ তা সত্ত্বেও ইন্দোনেশিয়ার এই এয়ারলাইন্সটি ২০০২ সালে কাজ শুরু করা যাবৎ কোনো প্রাণঘাতী দুর্ঘটনায় সংশ্লিষ্ট হয়নি – কিউজেড৮৫০১-এর আগে৷
দৃশ্যত ইন্দোনেশিয়া-ভিত্তিক অপরাপর এয়ারলাইন্সের ক্ষেত্রে সে'কথা বলা চলে না৷ এভিয়েশন সেফটি নেটওয়ার্ক নামধারী একটি নিরপেক্ষ উদ্যোগ বিমান দুর্ঘটনা ও বিমানযাত্রার নিরাপত্তার উপর নজর রাখে৷ তারা গত দশ বছরের খতিয়ান থেকে জানাচ্ছে যে, ঐ এক দশকে ইন্দোনেশিয়ার বিমান পরিবহন সংস্থাগুলি ৫০টি নিরাপত্তা সংক্রান্ত ঘটনায় জড়িত ছিল৷
গারুডা এয়ারলাইন্স, মান্ডালা এয়ারলাইন্স (বর্তমানে বন্ধ), এয়ারফাস্ট এবং এক্সপ্রেস ট্রান্সপোর্টাসি আন্টারবেনুয়া (চলে প্রিমিএয়ার নামে) এবং এয়ারএশিয়া, এই চারটি ব্যতিক্রম ছাড়া ইন্দোনেশিয়ার বাকি সব প্যাসেঞ্জার এয়ারলাইন্সের আপাতত ইউরোপ অভিমুখে ওড়া নিষিদ্ধ – তার কারণ নিরাপত্তা সংক্রান্ত উদ্বেগ৷
বিমান পরিবহণের ব্যাপারে ব্রিটেনের নিরপেক্ষ বিশেষজ্ঞ ক্রিস ইয়েটস ডয়চে ভেলেকে একটি একান্ত সাক্ষাৎকারে বলেন যে, শুধুমাত্র ২০১৪ সালেই ইন্দোনেশিয়ার এয়ারলাইন্সগুলিকে কেন্দ্র করে ন'টি নিরাপত্তা সংক্রান্ত ঘটনা ঘটেছে৷ তাঁর মতে এয়ারএশিয়ার কিউজেড৮৫০১ উড়ালের দুর্ঘটনা সম্ভবত আবহাওয়া খারাপ থাকার দরুণ ঘটেছে৷ তা সত্ত্বেও এই দুর্ঘটনা আবার দেশটির সামগ্রিক সেফটি রেকর্ড নিয়ে আলোচনার সূত্রপাত ঘটাবে, মনে করেন ইয়েটস৷
ডিডাব্লিউ: ইন্দোনেশিয়ার ‘সেফটি রেকর্ড' কি সত্যিই খারাপ?
ক্রিস ইয়েটস: এটা সত্যি যে, ইন্দোনেশিয়ার সেফটি রেকর্ড বিশেষ ভালো নয়৷ শুধু এ বছরেই ন'টি ঘটনা ঘটেছে, যদিও ভাগ্যক্রমে কেউ হতাহত হয়নি৷ সাম্প্রতিক ঘটনাবলীর মধ্যে সবচেয়ে গুরুতর ঘটনাটি ঘটে ২০০৭ সালে, যখন অ্যাডামএয়ার-এর একটি বোয়িং ৭৩৭ বিমান পামবাউয়াং-এর ৮৫ কিলোমিটার পশ্চিমে ভূপাতিত হয়৷ ঘটনায় ১০২ জন প্যাসেঞ্জার ও ক্রু-র সকলেই নিহত হন৷
কিউজেড ৮৫০১ দুর্ঘটনা কিভাবে ঘটল?
ক্রিস ইয়েটস: বিমানটি বিষুবরেখা অঞ্চল দিয়ে যাচ্ছিল৷ এ অঞ্চলে আবহাওয়া দুর্যোগপূর্ণ হয়ে থাকে৷ দুর্ঘটনার সময় বর্ষার মেঘ কিমিউলাস নিম্বাস ছিল পঞ্চাশ হাজার ফুট অবধি উঁচু – তার ফাঁকে ফাঁকে চলছিল ঝড় আর প্রচণ্ড বৃষ্টি৷ পাইলট তাঁর পরিকল্পিত রুট ছেড়ে একটু ওপরে ওঠার অনুমতি চান, যদিও ওপরে বিমান থাকায় সে অনুমতি দেওয়া হয়নি৷ বিমানচালক হয়ত অপেক্ষাকৃত শান্ত বাতাসের খোঁজে ছিলেন৷ আমার মতে আবহাওয়া পরিস্থিতিই এই দুর্ঘটনার একমাত্র কারণ৷