এত অনিরাপদ ঢাকা বিমানবন্দর!
ঢাকা বিমানবন্দরে ঘটে চলেছে একের পর এক নিরাপত্তহীনতার ঘটনা৷ প্রশ্ন উঠছে, একটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কি এত অনিরাপদ হতে পারে? ছবিঘরে থাকছে গত কয়েক বছরে নিরাপত্তাহীনতার কারণে ঢাকা বিমানবন্দরে ঘটে যাওয়া কিছু ঘটনা৷
অস্ত্র নিয়ে বিমানে উঠে কীভাবে?
রবিবার বাংলাদেশ বিমানের বিজি-১৪৭ ফ্লাইট ঢাকা থেকে রওনা হওয়ার কিছুক্ষণ পর অপহরণের চেষ্টা করেন ‘অস্ত্র’ হাতে থাকা এক যাত্রী৷ পরে বিমানটি চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে অবতরণ করা হলে যাত্রীরা নিরাপদে নেমে আসেন৷ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে নিহত হন অস্ত্রধারী ব্যক্তি৷ কিন্তু নিরাপত্তা তল্লাশি পেরিয়ে ‘অস্ত্র’ নিয়ে একজন যাত্রী কীভাবে বিমানে উঠতে পারলেন, সে প্রশ্নের উত্তর এখনও মেলেনি৷
আত্মীয়র সাথে বিমানে পুলিশ কর্মকর্তা
গত বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি আত্মীয়কে বিদায় দিতে গিয়ে বিমানে উঠে যান পুলিশের একজন উপ-পরিদর্শক৷ ব্যাংককগামী থাই এয়ারওয়েজের বিমানটি ছাড়ার ঠিক আগ মুহূর্তে বিষয়টি ধরা পড়ে৷
স্পর্শকাতর এলাকায় অনুপ্রবেশ
গত বছরের ২৩ ফেব্রুয়ারি ছেলেকে এগিয়ে দিতে কাস্টমসের একজন রাজস্ব সহায়ক কর্মকর্তা একাধিক নিরাপত্তা বলয় ভেদ করে বোর্ডিং ব্রিজ এলাকায় (উড়োজাহাজে ওঠার জন্য টার্মিনালের সঙ্গে সংযুক্ত সেতু) ঢুকে পড়েন৷ বিষয়টি টের পেয়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা তাঁকে আটক করেন৷ পরে দশ হাজার টাকা জরিমানা দিয়ে মুক্তি পেয়েছিলেন তিনি৷
আকাশে ঘুরলেন প্রধানমন্ত্রী
রানওয়েতে ঝুঁকিপূর্ণ কিছু ধাতব বস্তু পড়ে থাকার দরুন আকাশে আধা ঘণ্টা চক্কর দিতে বাধ্য হয় প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী বিমানের একটি ফ্লাইট৷ অবতরণের ঠিক আগ মুহূর্তে বিষয়টি দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের নজরে আসলে তাঁরা পাইলটকে বিমানটি অবতরণ না করার সঙ্কেত পাঠান৷ ২০১৬ সালের ৮ জুনের এ ঘটনায় নির্ধারিত সময়ের আধা ঘণ্টা পর অবতরণ করে প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী এই বিমান৷
ছুরিকাঘাতে আনসার নিহত
২০১৬ সালের নভেম্বর মাসে এক বহিরাগতের ছুরিকাঘাতে বিমানবন্দরে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এক আনসার সদস্য প্রাণ হারিয়েছিলেন৷ ঐ ঘটনায় পাঁচজন আহত হন৷ বিমানবন্দরের পরিচ্ছন্নতার দায়িত্বে থাকা এক কোম্পানির এক কর্মী ছুরি নিয়ে বহিঃর্গমন লাউঞ্জের তিন নম্বর গেট দিয়ে প্রবেশের চেষ্টা করেন৷ এ সময় আনসার সদস্যরা তাঁকে বাধা দিলে তিনি ছুরি দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করেন৷
বোর্ডিংপাস ছাড়াই বিমানে
ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের একটি বিমান ২০১৫ সালের ৮ অক্টোবর ঢাকা থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশে রওয়ানা দেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল৷ উড্ডয়নের কয়েক মিনিট আগে কেবিন ক্রুরা টের পান বিমান কর্তৃপক্ষ ৭১টি বোর্ডিং কার্ড ইস্যু করলেও বিমানটিতে মোট যাত্রী ছিল ৭২ জন৷ দেখা যায়, কোনো ধরণের বিমান টিকেট ও বোর্ডিং পাস ছাড়াই একজন অতিরিক্ত যাত্রী রয়েছেন বিমানটিতে৷
নিরাপত্তা নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলের শঙ্কা
ঢাকা বিমানবন্দরের নিরাপত্তা নিয়ে অনেক আগেই শঙ্কা প্রকাশ করেছিল আন্তর্জাতিক মহল৷ ২০১৫ সালে ব্রিটেন বিমানবন্দরের নিরাপত্তা জোরদার করতে বলেছিল৷ এছাড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থার অপ্রতুলতা দেখিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে সরাসরি কার্গো ফ্লাইট বন্ধ করে দিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্য ও জার্মানি৷
আরআর/জেডএইচ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)