করোনাকালে কেমন আছেন ‘জজ মিয়া’?
২১ আগস্ট ২০২০২০০৪ সালের ২১ আগস্ট৷ রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে শেখ হাসিনার জনসভায় গ্রেনেড হামলা করা হয়৷ দলের লোকদের মানববর্মে বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী সেদিন প্রাণে রক্ষা পান৷ আগস্টের আরেক নৃশংসতার কথা জেনে প্রতিবাদে ফেটে পড়ে তখনকার বিরোধীদল আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা৷ এমন দিনে গুলিস্তানের হকার জালাল ঢাকায় ছিলেন না৷ নোয়াখালীর সেনবাগের গ্রামের বাড়িতে ছিলেন সেদিন৷ এলাকায় তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ মিছিল বের হয়৷ এতে যোগ দেন যুবলীগকর্মী জালাল৷ এর মাস কয়েক পরে তাকেই করা হয় গ্রেনেড হামলার অন্যতম হোতা৷ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অত্যাচারে ‘জজ মিয়া’ নামে নিজের কাঁধে দোষ নেন৷ বিনিময়ে তার পরিবার গোয়েন্দা মারফত মাসে মাসে পেতে থাকে হাজার চারেক টাকা৷ কিন্তু একটা সময় গণমাধ্যম বের করে আনে প্রকৃত তথ্য, ফাঁস হয়ে যায় জজ মিয়ার আষাঢ়ে গল্প৷ জোট সরকার বদলের পর গ্রেনেড হামলার মামলার তদন্ত আবার হয়৷ তাতে খালাস পান মোহাম্মদ জালাল৷
সেই জজ মিয়া এখন কেমন আছেন? মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে ডয়চে ভেলের বাংলা বিভাগকে তিনি জানান, টুকটাক ঠিকাদারি করে সংসার চালান৷ তবে করোনাভাইরাসের সাধারণ ছুটির সময় ঘরে বসে ছিলেন৷ তখন ঋণ করে সংসার চালিয়েছেন৷
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলায় পড়ে বছর পাঁচেক জেলে থাকতে হয়ে জালালকে৷ কারাবন্দি সেই জীবন ভুলতে পারেন না তিনি৷ এ প্রসঙ্গে তার ভাষ্য, ‘‘এটা তো অবশ্যই মনে পড়বে৷ মনে পড়বে না? আমার জীবন থেকে পাঁচটা বছর হারিয়ে ফেলেছি৷ এই মামলায় মনে করেন, আমার ফ্যামিলি, আমার মা-ও মারা গেল দৌড়াদৌড়ি কইরা৷ এডাতো আর ভোলার কথা না৷ এটা মনে করেন, যতদিন দুনিয়াতে বাঁইচা থাকুম ততদিন স্মরণ হইয়া থাকবো৷’’
কারামুক্ত এই জীবন সম্পর্কে ডয়চে ভেলের বাংলা বিভাগকে মোহাম্মদ জালাল বলেন, ‘‘এজন্য আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করি৷ আর সত্য কোনোদিন চাপা থাকে না৷ সত্য একদিন প্রকাশ হইয়া যায়৷ আল্লাহ একদিন এটা প্রকাশ করছে৷ যারা এই ঘটনা ঘটাইছে তাদের বিচার হইছে৷ বিচারে একটা রায়ও পাইছি৷’’