করোনায় মৌমাছিরাও ঘরে, ক্ষতি ফসলের
প্রাকৃতিক পরাগায়নের কাণ্ডারি মৌমাছি৷ কিন্তু লকডাউনের কবলে তাদেরও থাকতে হয় ঘরে৷ তাই ক্ষতি ফসলের, খাদ্য নিরাপত্তার৷ কেমন করে? দেখুন ছবিঘরটি৷
ঘরে আটকা মৌমাছিরা
করোনা ভাইরাসের কারণে যেহেতু ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা, তাতে পরাগায়ন শিল্পে দারুণ প্রভাব পড়েছে৷ মৌমাছির চাষীরা তাদের বাহিনীকে আটকে রাখছেন তাদের ঘরে৷ যেসব মৌসুমী কর্মী এদের বহন করে এলাকায় এলাকায়, অঞ্চলে অঞ্চলে নিয়ে যান, তারা কাজ করছেন না৷ ফলে এদের পরিবহণ ব্যাহত হচ্ছে৷
শত শত কোটি টাকার পরাগায়ণ শিল্প
মৌমাছিরা ফুলে ফুলে উড়ে বেড়ায়৷ মধু সংগ্রহ করেআর তাতে পরাগায়ন ঘটে৷ কিন্তু এই শিল্পের আকার কত বড় জানেন? মৌমাছি চাষ থেকে শুরু করে এদের পরিবহণ, মধু সংগ্রহ, বেচাকেনা সব মিলিয়ে এই শিল্পের আকার দেড় থেকে দুই হাজার কোটি ডলারের৷ বাংলাদেশি টাকায় প্রায় এক লাখ ষাট হাজার কোটি৷
পৃথিবীর এক তৃতীয়াংশ চারার পরাগায়ন
পৃথিবীর এক তৃতীয়াংশ চারার পরাগায়ন করে মৌমাছি৷ পৃথিবীর সবচেয়ে বড় খাদ্য রপ্তানিকারী দেশ যুক্তরাষ্ট্র ও চীন নানা দেশ থেকে ট্রাকের পর ট্রাক মৌমাছি আমদানি করে পরাগায়নের জন্য৷
কমে যাচ্ছে মৌমাছির সংখ্যা
পৃথিবীর খাদ্য নিরাপত্তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ মৌমাছির সংখ্যা কমছে৷ অবকাঠামো নির্মাণ, কীটনাশকের ব্যবহার, মনোকালচার পদ্ধতিতে চাষ এবং গ্রিনহাউজ গ্যাস নিঃসরণ নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে মৌমাছির সংখ্যায়৷ জাতিসংঘ সমর্থিত গবেষণায় দেখা গেছে, গত বছর পরাগায়ন কমে যাওয়ায় প্রায় আড়াইশ’ থেকে সাড়ে পাঁচশ বিলিয়ন ডলারের খাদ্যশস্য সংকট তৈরি হবার শঙ্কা দেখা দেয়৷
প্রয়োজন দীর্ঘমেয়াদী উদ্যোগ
লকডাউনের কারণে পরাগায়ন শিল্পের ক্ষতি হলেও বুনো মৌমাছির সংখ্যা বেড়েছে৷ কারণ, প্রকৃতি এখন মানুষের থাবামুক্ত৷ কিন্তু এ অবস্থা দীর্ঘমেয়াদী নয়৷ বাম্বল বী কনসার্ভেশন ট্রাস্ট বলেছে, লকডাউনের কারণে হয়ত বিনা বাধায় ঘুরে বেড়াতে পারছে মৌমাছিরা৷ কিন্তু এমন নয় যে তারা তাদের আবাস ফিরে পেয়েছে৷ সেজন্য প্রয়োজন দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার৷