গ্রান চাকো : উজাড় হতে থাকা এক বনাঞ্চল
পৃথিবীর খুব কম বনই গ্রান চাকোর মতো এতটা অস্তিত্বের সংকটে৷ পশু পালন ও সয়াবিনের জন্য দক্ষিণ অ্যামেরিকার এই বনাঞ্চলের সব গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে৷ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বাস্তুতন্ত্র ও স্থানীয় জনগণ৷
নিম্ন বনভূমি ও তৃণাঞ্চল
গ্রান চাকো বনাঞ্চলে বিরাট এলাকাজুড়ে ঝোপ ও গাছ কেটে সাফ করে ফেলা হচ্ছে৷ সয়াবিন ও প্রাণীর মাংসের বৈশ্বিক চাহিদা মেটাতে এখানে এগুলোর চাষও বাড়ছে৷ দক্ষিণ অ্যামেরিকায় গ্রান চাকো দ্বিতীয় বৃহত্তম বনাঞ্চল৷ এটি আর্জেন্টিনা, প্যারাগুয়ে, বলিভিয়া ও ব্রাজিল জুড়ে বিস্তৃত৷
ছেঁটে ফেলা হচ্ছে প্রাকৃতিক ছন্দ
আর্জেন্টিনার উত্তরাঞ্চলে পিলাগা আদিবাসী নুলে ও তার ভাই জোসে রোনাল্ডো ফার্নান্ডেজ৷ তাদের তরমুজ ও আলুর ক্ষেত আছে৷ গ্রান চাকোতে তাদের নিত্য যাতায়াত৷ তাদের কাছে সেখানকার গাছগুলো খুবই গুরুত্ববহ৷ এই গাছগুলো জীবন, খাদ্য ও পানিচক্র বজায় রাখে এবং ছায়া দেয়৷ প্রাকৃতিক ছন্দ বজায় রাখে৷
নিবিড় যোগাযোগ
জোসে নিজেই আলু চাষ করেন৷ তিনি বলেন, এই গাছগুলোর সঙ্গে তার পরিবারের যোগাযোগ আধ্যাত্মিক৷ নুলে বলেন, ‘‘আদিবাসী অধ্যুষিত জঙ্গলগুলো মূল্যবান৷ আদিবাসী মানুষগুলো এই জমিকে নিজের ঘর মনে করেন৷’’
সরে যেতে হয়েছে
কিন্তু আদিবাসীদের এই আবাস আজ প্রচণ্ড চাপের মুখে৷ অনেক ক্ষেত্রে তাদের সরে যেতে হয়েছে এখান থেকে৷ এই দেশগুলোর সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নতুন বাণিজ্য চুক্তির ফলে এই চাপ বাড়তে পারে৷ আরো বেশি বন উজাড় হতে পারে৷
অর্থনৈতিক চাপ
গাছ কাটা বন্ধ করতে অনেক দেশ আমদানির নিয়মে কড়াকড়ি আরোপ করেছে৷ যেমন আর্জেন্টিনার জঙ্গল আইন ২০০৭৷ কিন্তু এখানকার সব মানুষ গাছ কাটার বিরোধী নন৷ স্থানীয়দের কেউ কেউ কৃষি পণ্য রপ্তানি ও আরো কাজের সুযোগ তৈরির পক্ষে৷ কারণ এখানকার অর্ধেক মানুষ গরিব৷
পরিবেশ বিপর্যয়
গ্রান চাকোর কৃষক টিওফিলা পালমা এখানে ছাগল চড়ান৷ তিনি বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, বন উজাড়ের ফলে এখানকার স্থানীয় পরিবেশের ওপর অনেক প্রভাব পড়েছে৷ তাপমাত্রা বেড়েছে এবং বাতাসের গতিও বদলেছে৷
প্রবৃদ্ধি থমকে গেছে
চাষীদের অভিযোগ, স্থানীয়দের অনেকে তাদের পশু খুইয়েছেন৷ কারণ, গাছ ও বন কাটার ফলে এখানকার তৃণাঞ্চল কমে গেছে৷ স্থানীয়দের অভিযোগ, ইউরোপের সঙ্গে চুক্তি শুধু অর্থনৈতিক ও ব্যবসার লাভের জন্য৷ আদিবাসীদের জন্য নয়৷