গ্রিসে এখনো পর্যটকের ভিড়!
গ্রিসের এখন খুব খারাপ সময়৷ সব ব্যাংক বন্ধ৷ অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে দাতাদের ঋণের আশায় বসে আছে সরকার৷ এ অবস্থাতেও সংকটগ্রস্ত দেশ গ্রিসে যাচ্ছেন বহু মানুষ৷ কেন যাচ্ছেন? সেখানে যেতে তাঁদের ভয় বা দুশ্চিন্তা হচ্ছে না?
বিমানবন্দরে গ্রিসমুখী যাত্রীদের ভিড়
গ্রিসের জিডিপির ১৮ শতাংশ আসে পর্যটন খাত থেকে৷ প্রায় ৯ লাখ মানুষ কাজ করেন পর্যটন খাতে৷ তাই গ্রিসের চরম সংকটের সময়ের পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে আছে গ্রিস৷ নইলে এ সময়েও জার্মানির ড্যুসেলডর্ফ বিমানবন্দরে এত মানুষ গ্রিসে যাওয়ার জন্য ভিড় জমাতো?
পরিবারের টান...
ফোটিওস মাটেন্টসোগ্লু বললেন, ‘‘আমি গ্রিসে যাচ্ছি দাদা-দাদির সঙ্গে দেখা করতে৷ গ্রিস আমার খুব পছন্দের দেশ৷ তবে বসবাসের জন্য গ্রিসের চেয়ে জার্মানিই ভালো৷’’ মাটেন্টসোগ্লু জার্মানিতেই থাকেন৷ তবে তাঁর অনেক নিকটাত্মীয় এখনও গ্রিসেই থেকে গেছেন৷
‘বাড়ির মতো প্রিয় কিছু হয় না’
জার্মানিতে পড়াশোনা করেন নেফেলি ভিটু৷ তাঁরও বাবা-মা’সহ পুরো পরিবার থাকে গ্রিসে৷ তাঁদের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার আগে নেফেলি বললেন, ‘‘বাড়িতে যাচ্ছি৷ যত কিছুই হোক নিজের বাড়ির মতো প্রিয় কিছু তো আর হয় না৷’’
খেলোয়াড় খোঁজার কাজে...
বুন্ডেসলিগার ফুটবল ক্লাব শালকে ০৪-এর ‘স্কাউট’ আন্দ্রে ইয়োখুম৷ গ্রিসে অনুষ্ঠিত হচ্ছে উয়েফা অনুর্ধ-১৯ ফুটবলের আসর৷ সে আসর দেখতেই গ্রিসে যাচ্ছেন আন্দ্রে৷ উদ্দেশ্য – তরুণ, প্রতিভাবান খেলোয়াড় খোঁজা৷ ক্লাবের স্কাউটদের কাজই তো সেটা!
‘বেশি করে ইউরো নিয়ে যাচ্ছি’
গ্রিসে এখনও সব ব্যাংক বন্ধ৷ এমন সময় মেয়েদের নিয়ে সেখানে বেড়াতে যাচ্ছেন গিটে ব্রুন্সভিকার৷ গিয়ে অর্থসংকটে পড়লে কে দেখবে? অবশ্য রওনা দেয়ার আগে তিনি বেশ নিশ্চিন্ত হয়েই বললেন, ‘‘সমস্যা নেই, বেশি করে ইউরো নিয়েই যাচ্ছি৷’’
‘আশা নিয়েই বাঁচতে হয়’
ক্যাটেরিনা টোপালিডিস রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ী৷ রেস্টুরেন্টটি জার্মানিতে৷ তবে ক্যাটেরিনার বাড়ি গ্রিসে৷ গ্রিসের চলমান সংকট তাঁকেও খুব চিন্তায় ফেলেছে৷ তবে যে যা-ই বলুক, ক্যাটেরিনা মনে করেন, গ্রিস এই সংকট থেকে বেরিয়ে আসবেই৷ এত আশাবাদী হবার কারণ জানাতে গিয়ে খুব সহজ একটি কথা মনে করিয়ে দিলেন ক্যাটেরিনা, বললেন, ‘‘মানুষ তো আশা নিয়েই বাঁচে৷’’
‘গ্রিসের মানুষকেই টাকা দেবো...’
আগে থেকে হোটেল ‘বুক’ করলে বেশ কিছু টাকা সাশ্রয় হবে জেনেও হাইকে বোহে তা করেননি৷ কে জানে, জার্মানি থেকে হোটেল বুক করালে পুরো টাকাটা হয়ত ইউরোপীয় কোনো কোম্পানির অ্যাকাউন্টে যাবে, হাইকে যা একেবারেই চান না৷ গ্রিসের এই দুঃসময়ে গ্রিসের মানুষের হাতেই যাতে হোটেল ভাড়ার টাকাটা যায়, সেকথা ভেবে আগাম বুকিং করাননি তিনি৷ হাইকে গ্রিসে গিয়ে কোনো গ্রিক নাগরিকের মাধ্যমেই ভাড়া করবেন হোটেলের রুম৷
‘বড় দুর্দিনে যাচ্ছি’
গ্রিসে দু’সপ্তাহ থাকবেন ফ্রেডেরিক ফ্রেসে৷ সব দিক থেকে ভালো প্রস্তুতি নিয়েই যাচ্ছেন৷ তাই সেখানে গিয়ে যে তেমন কোনো অসুবিধায় পড়তে হবে না, এ বিষয়ে তিনি মোটামুটি নিশ্চিত৷ তারপরও খারাপ লাগছে তাঁর৷ বললেন, ‘‘বেড়াতে যাচ্ছি ঠিকই, তবে যাচ্ছি বড় দুর্দিনে...৷’’