চলুন যাই ‘ক্রুজ শিপ’-এ
‘ক্রুজ শিপ’ বা বিলাসবহুল প্রমোদতরী তৈরিতে এগিয়ে আছে ইউরোপ৷ এসব জাহাজে করে ভ্রমণে আগ্রহীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে৷ নতুন জাহাজ তৈরিতে পরিবেশের কথাও মাথায় রাখা হচ্ছে৷
জনপ্রিয়তা বাড়ছে
চলতি বছর প্রায় আড়াই কোটি মানুষ ‘ক্রুজ শিপ’ অর্থাৎ বিলাসবহুল প্রমোদতরীতে ভ্রমণ করবেন বলে জানিয়েছে ‘ক্রুজ লাইনস ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন’ বা সিএলআইএ৷ আগের বছরের চেয়ে সংখ্যাটি প্রায় ১০ লক্ষ বেশি৷ এই সময়ে ২৬টি নতুন ক্রুজ শিপ পানিতে নামবে বলেও জানিয়েছে সিএলআইএ৷ এর মধ্যে ১২টি গভীর সমুদ্রে যাওয়া জাহাজ আছে৷ আর বাকিগুলোর মধ্যে আছে নদীতে চলবে এমন জাহাজ ও বিশেষায়িত নৌকা৷
মেড ইন জার্মানি
এ বছর যে জাহাজগুলো চলাচল শুরু করবে তার প্রতি চারটির মধ্য একটি জার্মান শিপইয়ার্ড বা তার সাবসিডিয়ারিতে তৈরি হবে৷ নতুন জাহাজগুলো ২৮ হাজারেরও বেশি যাত্রী পরিবহণ করতে পারবে৷
ইউরোপীয়দের প্রাধান্য
ইটালির ফিনকানতিয়েরি, ফ্রান্সের এসটিএক্স ও জার্মানির মায়ার ভ্যার্ফট (ছবি) - এই তিন শিপইয়ার্ডেই বেশিরভাগ বিলাসবহুল প্রমোদতরী নির্মাণ করা হয়৷ ২০১৬ সালের শুরু পর্যন্ত ফিনকানতিয়েরি-র কাছে ২৪টি, মায়ার ভ্যার্ফটের কাছে ২১টি ও এসটিএক্স ফ্রান্সের কাছে ১২টি জাহাজ তৈরির কার্যাদেশ ছিল৷
পরিবেশের ক্ষতি কমানোর লক্ষ্য
নতুন যে জাহাজগুলো তৈরি হচ্ছে সেগুলোতে জ্বালানি তেলের পরিবর্তে এলএনজি অর্থাৎ তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস ব্যবহৃত হবে৷ এছাড়া থাকবে ইলেকট্রিক মোটর, এলইডি বাতি ইত্যাদি৷ জাহাজের কাঠামোর কোটিংয়েও পরিবর্তন আনা হবে৷ এছাড়া জাহাজ তৈরিতে অপেক্ষাকৃত হালকা ওজনের ধাতু ব্যবহারের মাধ্যমে একে জ্বালানি সাশ্রয়ী করে তোলা হবে৷
সবচেয়ে বড় প্রমোদতরী
নাম ‘হারমোনি অফ দ্য সিজ’৷ দৈর্ঘ্য ৩৬২ মিটার আর প্রস্থ ৬৬ মিটার৷ আছে ১৬টি ডেক, ২০টি খাবার ঘর, ২৩টি সুইমিং পুল৷ প্রায় ১২ হাজার গাছ সমৃদ্ধ একটি পার্কও আছে জাহাজটিতে৷ ৫,৪৮০ জন যাত্রী আর ২,০০০ জন ক্রু পরিবহণে সক্ষম এটি৷ ‘রয়েল ক্যারিবিয়ান ক্রুজ’ জাহাজটি তৈরিতে এসটিএক্স ফ্রান্সকে এক বিলিয়ন ইউরোর বেশি অর্থ দিয়েছে৷
ভালো দিন নয়
১৯১২ সালের ১৫ এপ্রিল ক্রুজ শিপের ইতিহাসে বেদনাদায়ক এক দিন৷ সেদিন ‘টাইটানিক’ ডুবে গিয়েছিল৷ ২৬৯ মিটার দীর্ঘ জাহাজটিতে নয়টি ডেক ছিল৷ দুর্ঘটনার সময় টাইটানিকে প্রায় ২,২০০ মানুষ ছিলেন৷ এর মধ্যে প্রায় দেড় হাজার জন প্রাণ হারান৷ দুর্ঘটনায় পড়ার এক ঘণ্টা ২০ মিনিটের মধ্যে অন্য একটি জাহাজ উপস্থিত হলেও টাইটানিকে সবার জন্য লাইফবোট না থাকায় এতজনের মৃত্যু হয়েছিল৷
ক্রুজ জাহাজ নির্মাণে চীন?
২০১৬ সালে প্রায় ১০ লক্ষ চীনা নাগরিক প্রমোদতরীরে ভ্রমণ করেছেন৷ ২০৩০ সালের মধ্যে সংখ্যাটি ৮০ লক্ষ হতে পারে৷ তাই চীনা শিপইয়ার্ডগুলো ক্রুজ জাহাজ তৈরিতে আগ্রহী হয়ে উঠছে৷ ২০১৫ সালে ইটালির ফিনকানতিয়েরি ‘চায়না শিপবিল্ডিং কর্পোরেশন’ এর সঙ্গে একটি যৌথ কোম্পানি গড়ে তুলেছে৷ তারা চীনা বাজারের জন্য জাহাজ তৈরি করবে৷
প্রতিবেদন: ইনজা ভ্রেডে/জেডএইচ
সম্পাদনা: আশীষ চক্রবর্ত্তী