সুভাষ দত্ত নেই
১৬ নভেম্বর ২০১২প্রথমে অভিনেতা হিসেবে, তারপর পরিচালক৷ দু জায়গাতেই সুভাষ দত্ত এমন কিছু কাজ করেছেন যেগুলোর কথা কোনোদিনই ভোলার নয়৷ শুক্রবার সকালে ৮২ বছর বয়সে মারা গেছেন তিনি৷
তাঁর মৃত্যুর খবরে বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে নেমে এসেছে শোকের ছায়া৷ প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেত্রীসহ সকলেই শ্রদ্ধা জানিয়েছেন তাঁকে৷
সুভাষ দত্তর জন্ম ১৯৩০ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি, দিনাজপুরে৷ ছবি আঁকায় হাত ছিল দারুণ৷ ভালো লাগতো ছবি দেখতেও৷ একসময় পুরোপুরি জড়িয়ে যান ছায়াছবির জগতের সঙ্গে৷ শুরুটা পোস্টার এঁকে৷ তারপর অভিনেতা হিসেবে আত্মপ্রকাশ ‘এ দেশ তোমার আমার' ছবির মাধ্যমে৷ কৌতুক অভিনেতা হিসেবে তো একসময় খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন৷ অভিনেতাই হয়তো থেকে যেতেন৷ কিন্তু ১৯৫৭ সালে সত্যজিত রায়ের ‘পথের পাঁচালি' দেখে সেই যে ছবি নির্মাণের ঝোঁক চেপেছিল তা নিয়েই কেটে গেল কর্মজীবনের সিংহভাগ৷
পরিচালক সুভাষ দত্তের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ছবি অবশ্যই মুক্তিযুদ্ধের পটভূমিতে নির্মিত অরুণোদয়ের অগ্নিসাক্ষী৷ এ ছাড়া বসুন্ধরা, ডুমুরের ফুল, আয়না, নূরী, আবির্ভাব, কাগজের নৌকা, আলিঙ্গন, পালা বদল আর অবশিষ্টও তাঁর মনে রাখার মতো কাজ৷ চলচ্চিত্রে অবদানের জন্য ১৯৯৯ সালে একুশে পদক পেয়েছিলেন সুভাষ দত্ত৷ এছাড়া জাতীয় পুরস্কারসহ অনেক স্বীকৃতি পেয়েছেন তিনি৷
সফল পরিচালকদের হাতে সফল অভিনেতা-অভিনেত্রী তৈরি হবেন এটাই স্বাভাবিক৷ সুভাষ দত্তের হাতে গড়া যদি একজন শিল্পীর নাম বলতে হয় তাহলে কবরী সারোয়ারের কথা আসবেই৷ অভিনেত্রী থেকে সংসদ সদস্য হওয়া কবরীর চলচ্চিত্রে আসার আগে ছিলেন মিনা পাল৷ ১৯৬৪ সালে সুভাষ দত্ত পরিচালিত ‘সুতরাং' ছবির পরই মিনা পাল হয়ে যান দর্শকদের প্রিয় নায়িকা কবরী৷ সুভাষ দত্তের মৃত্যুতে তিনিও শোকাভিভূত৷ ডয়চে ভেলেকে দেয়া সংক্ষিপ্ত সাক্ষাৎকারে সুভাষ দত্তের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘‘সুভাষ দত্ত না থাকলে আমি কবরি হতে পারতাম না৷ তাঁর মৃত্যু আমাদের জন্য বিরাট ক্ষতি৷ আমি তাঁর আত্মার শান্তি কামনা করছি৷ তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি রইলো আমার অশেষ সমবেদনা৷''
এসিবি/এসবি (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম, ইন্টারনেট)