চীনের উইগুর ভূখণ্ড নিরাপত্তা ঝুঁকিতে
চীন বলছে, সেদেশের জিনজিয়াং অঞ্চল ইসলামি জঙ্গিদের ভয়াবহ হুমকির মুখে রয়েছে৷ বেইজিংয়ের অভিযোগ মুসলিম উইগুর সম্প্রদায়ের বিচ্ছিন্নতাবাদীরা হান চাইনিজদের সঙ্গে মিলে সহিংসতাকে উসকে দিচ্ছে৷
জিনজিয়াং-এ কঠোর নিরাপত্তা
চীনের প্রাচীন সিল্ক রোড শহর কাশগার এ দিনে তিনবার করে অ্যালার্ম বাজে এবং দোকানিরা দৌড়ে সরকারের দেয়া কাঠের লাঠি হাতে বেরিয়ে পড়ে৷ পুলিশের তত্ত্বাবধানে সন্ত্রাসবিরোধী এই মহড়া চলছে৷
একটি বেল্ট, একটি রাস্তা উদ্যোগ
তাকলামাকান মরুভূমিতে ইমাম আসিম এর মাজারের দিকে রওনা হয়েছে উইগুর সম্প্রদায়ের এই মানুষটি৷ কাশগার চীনের ঐতিহাসিক বাণিজ্য কেন্দ্র৷ ‘এক বেল্ট এক সড়ক উদ্যোগ’-এর কেন্দ্র এটি৷
‘এক বেল্ট এক সড়ক সম্মেলন’ নিয়ে চীনের ভয়
উইগুরদের এলাকা হিসেবে পরিচিত জিনজিয়াং-এ ভেড়ার পাল নিয়ে চলেছেন এক ব্যক্তি৷ এবারে বেইজিংয়ে ওবিওআর সম্মেলনে বড় ধরনের হামলার আশংকায় রয়েছে চীন৷ এ সম্মেলনে বিশ্ব নেতারা যোগ দেবেন৷
চীনের সংখ্যালঘু আদিবাসী
তাকলামাকান মরুভূমিতে ইমাম আসিম এর মাজারে প্রার্থনারত এক নারী৷ উইগুররা মূলত সুন্নি মুসলিম৷ এরা চীনে ৫৫টি স্বীকৃত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের একটি৷ যদিও উইগুররা কঠোর ইসলামপন্থি নয়, তারা ‘মডারেট ইসলাম’ অভ্যাস করে৷ তবে বিশেষজ্ঞদের ধারণা, মধ্যপ্রাচ্যে তথাকথিত ইসলামি জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটে (আইএস) যোগ দিয়েছে উইগুরদের কয়েকজন৷
জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাবে কমিউনিস্ট পার্টি
চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম বলেছে, হুমকিটা বাড়ছেই৷ তাই ইসলামি জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার শপথ নিয়েছে কমিউনিস্ট পার্টি৷ উদাহরণ স্বরূপ চীনা কর্তৃপক্ষ এরই মধ্যে বেশ কিছু ইসলামি আচারের ওপর নিষেধাজ্ঞা সংক্রান্ত আইন পাস করেছে৷
সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন
অনেক অধিবাসীরা বলছে, গত কয়েক মাস ধরে কাশগরসহ জিনজিয়াং ভূখণ্ডের কয়েকটি শহরে সন্ত্রাসবিরোধী এই মহড়া চলছে, যা আসলে এখানকার মানুষদের উপর অত্যাচারের সামিল৷ অনেক উইগুরদের মতে, এটা নিরাপত্তার কোনো বিষয় নয়, বরং এক ধরনের গণ নজরদারি৷ কাশগরের এক দোকানের মালিক বললেন, ‘‘আমাদের কোনো ‘প্রাইভেসি’ নেই৷ আমরা কী করছি না করছি সব জানতে চায় তারা৷’’
বিশেষ মুসলিম আচারের উপর নিষেধাজ্ঞা
সবচেয়ে বড় যে পরিবর্তন লক্ষ্য করা গেছে, তাহলো অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে ওঠা দাড়ির প্রতি এবং হিজাবের প্রতি নিষেধাজ্ঞা৷ বিশেষ করে কর্মক্ষেত্রে যেমন স্টেশন বা বিমানবন্দরে যারা কাজ করেন তাদের প্রতি নির্দেশ দেয়া হয়েছে কাপড়ে মুখ ঢেকে রাখলে, অর্থাৎ মুখ দেখা না গেলে তাদের আটকানো এবং পুলিশে খবর দেয়া৷
নিরাপত্তারক্ষীরা লক্ষ্য করছে
কর্তৃপক্ষ এরই মধ্যে ঘোষণা করেছে, কেউ যদি লম্বা দাড়িওয়ালা তরুণ এবং কট্টরপন্থি আচরণ করছে – এমন কোনো ব্যক্তিকে দেখে পুলিশকে খবর দেয়, তাদের পুরস্কৃত করা হবে৷ তবে মানবাধিকার কর্মীরা এই পদক্ষেপের সমালোচনা করে অভিযোগ করেছেন যে, এটা মানবাধিকার লঙ্ঘনের সমতুল্য৷
অর্থনীতি না নিরাপত্তা?
জিনজিয়াং-এর মানুষদের উপর দমন-নিপীড়নের অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে আসছে চীন৷ তারা বলছে, সম্পদে ভরপুর এই এলাকাটিকে অর্থনীতিতে স্বয়ংসম্পূর্ণ করে তুলতেই তাদের এ উদ্যোগ৷