জলবায়ু পরিবর্তনের শিকার শ্রীলঙ্কার মানুষেরা
শ্রীলঙ্কার উপকূলীয় এলাকায় প্রায় এক কোটি ১৩ লাখ মানুষ বাস করেন৷ সাগরের তীর ভাঙায় তাদের অনেকে ঘর হারাচ্ছেন৷ জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এমনটা হচ্ছে, বলছেন বিশেষজ্ঞরা৷
সদ্য ঘর-হারা মানুষ
সাগর উপকূলে ভাঙনে ঘর হারিয়েছেন দিলরুকশান কুমারা৷ শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বো থেকে ৮০ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত ইরানাউইলাতে তার বাড়ি ছিল৷ উপকূলে ভাঙন অনেকদিন ধরেই শ্রীলঙ্কায় একটি সমস্যা৷
উপকূলে ভাঙনের হার
গবেষণা বলছে, শ্রীলঙ্কার পশ্চিম উপকূলীয় এলাকায় স্বল্পমেয়াদী ভাঙনের হার বছরে ০ থেকে তিন মিটার৷ তবে ২০৫০ সালের মধ্যে এই হার বেড়ে বছরে সর্বোচ্চ চার থেকে ১১ মিটার হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে৷ আর ২১০০ সালের মধ্যে সেটা আরও বেড়ে ১০ থেকে ৩৪ মিটার হতে পারে৷
হঠাৎ সব শেষ!
‘‘গতমাসে এক রাতে আমার ছেলে বাথরুমে গিয়েছিল৷ এরপর হঠাৎ তাকে চিৎকার করে বলতে শুনি - আমাদের বাড়ি সাগরে চলে গেছে!’’ বলছিলেন ৫৮ বছর বয়সি জেলে ফার্নান্দো৷
আইপিসিসির আশঙ্কা
ভাঙার পর বাড়ির যে অংশটুকু অক্ষত আছে তা সরিয়ে নিচ্ছেন গ্রামবাসী৷ জাতিসংঘের আইপিসিসি সংস্থা বলছে, পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে এ শতকের শেষ নাগাদ বিশ্বের নিম্নাঞ্চলীয় এলাকায় সাগরের পানি বৃদ্ধির ঝুঁকি অনেকখানি বেড়ে যাবে৷
সাগরের ছোবল
‘‘আমি দেখলাম আমার বাড়ির একটা অংশ সাগর খেয়ে ফেলেছে, আর আমার ছেলে কমোড নিয়ে পানি থেকে উঠে আসছে৷ বাড়ির ভিত্তি পুরো ধসে গেছে৷ তাই অন্যত্র সরে যেতে হয়েছে,’’ বলছিলেন ফার্নান্দো৷ ড্রোন থেকে তোলা ছবিতে তার ভাঙা বাড়ি দেখা যাচ্ছে৷
ভাঙনের কারণ
ইরানাউইলার স্থানীয়রা বলছেন, আবহাওয়া খারাপ হওয়ার ঘটনা আগের চেয়ে বেড়েছে৷ এছাড়া কাছেই সাগর পুনরুদ্ধার প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ চলায় ভাঙন বেড়েছে৷ গত তিন বছরে উপকূল কয়েকশ মিটার এগিয়েছে বলে জানান তারা৷
জীবিকা ধ্বংস
ফার্নান্দোর স্ত্রী জসিন্তাকে এক অস্থায়ী আবাসে দেখা যাচ্ছে৷ শ্রীলঙ্কার ১,৬২০ কিলোমিটার উপকূলে অনেক প্রাকৃতিক সম্পদ আছে, যা লাখ লাখ মানুষের আয়ের উৎস৷ দেশটির উপকূলীয় এলাকায় প্রায় এক কোটি ১৩ লাখ মানুষ বাস করেন৷