জেনে রাখুন কিছু জলবায়ু পরিভাষা
রোববার শুরু জলবায়ু সম্মেলন৷ মিশরের শার্ম আল-শেইখে জলবায়ু নিয়ে আলোচনা এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য জড়ো হবেন বিশ্বনেতারা৷ দশকের পর দশক ধরে চলা এই আলোচনায় চালু হয়েছে অনেক জটিল পরিভাষাও৷ ছবিঘরে থাকছে কিছু পরিভাষার ব্যাখ্যা৷
গ্লাসগো প্যাক্ট
২০২১ সালে স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে জলবায়ু সম্মেলনে এই চুক্তি হয়৷ প্রথমবারের মতো জাতিসংঘের কোনো চুক্তিতে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়৷ এই চুক্তিতে রাষ্ট্রগুলোকে কার্বন নিঃসরণ কমানোর জন্য আরো উচ্চাকাঙ্ক্ষী জলবায়ু পরিকল্পনা গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়৷
প্যারিস অ্যাগ্রিমেন্ট
কিয়োটো প্রোটোকলের উত্তরসূরি হিসাবে ২০১৫ সালে ফ্রান্সের প্যারিসে আয়োজিত জলবায়ু সম্মেলনে হয় এই চুক্তি৷ এই চুক্তিতে বৈশ্বিক উষ্ণতা কমানোর লক্ষ্য নির্ধারণ করার ব্যাপারে একমত হয় স্বাক্ষরকারী দেশগুলো৷ দেশগুলো জাতীয় লক্ষ্যমাত্রা ঘোষণার ব্যাপারেও একমত হয়৷ ২০২০ সালে এই চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়৷
১.৫ ডিগ্রি
প্যারিস চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী দেশগুলো চলতি শতাব্দীতে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি দুই ডিগ্রির অনেক নীচে ধরে রাখতে সম্মত হয়৷ চুক্তিতে এর আইনি বাধ্যবাধকতাও তৈরি হয়৷ পাশাপাশি উষ্ণতা বৃদ্ধি দেড় ডিগ্রির মধ্যে রাখতে সর্বাত্মক চেষ্টা করার কথাও বলা হয় এই চুক্তিতে৷
কপ ২৭
কনফারেন্স অব পার্টিজ- কপ জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত কনভেনশনের সর্বোচ্চ সংস্থা৷ প্যারিস চুক্তি সই করা দেশগুলোর প্রতিনিধিদের নিয়ে প্রতি বছর কপের সম্মেলন আয়োজিত হয়৷ কপের ২৭তম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে মিশরের শার্ম আল-শেইখের রেড রিসোর্ট টাউনে৷
ন্যাশনালি ডিটারমাইনড কন্ট্রিবিউশনস, এনডিসি
এনডিসি হচ্ছে রাষ্ট্রগুলোর ঘোষণা করা কার্বন নিঃসরণ কমানোর লক্ষ্যমাত্রা৷ ২০২০ সাল থেকে কোন দেশ কতটুকু নিঃসরণ কমাবে, সেটি রাষ্ট্রীয় পর্যায় থেকেই ঘোষণা করছে বিভিন্ন দেশ৷ প্রতি পাঁচ বছরে একবার বিভিন্ন দেশ এই লক্ষ্যমাত্রা নতুন করে নির্ধারণ করে৷
‘জাস্ট ট্রানজিশন’
নিম্ন কার্বন নিঃসরণের অর্থনীতিতে ধীরে ধীরে সরে যাওয়ার প্রক্রিয়াকে জাস্ট ট্রানজিশন বলা হয়৷ এই প্রক্রিয়ায় সামাজিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিঘ্নিত না করে জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে সরে আসার নীতি নির্ধারণ করা হয়৷ শ্রমিক, বিভিন্ন সম্প্রদায় এবং ভোক্তাদের সুযোগসুবিধা যাতে বৃদ্ধি পায়, সেদিকেও লক্ষ্য রাখা হয়৷
ক্লাইমেট ফিন্যান্স
২০০৯ সালে ধনী দেশগুলো অপেক্ষাকৃত দরিদ্র রাষ্ট্রগুলোকে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় প্রতি বছর ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সহায়তা প্রদানে সম্মত হয়৷ ২০১৫ সালে দেশগুলো এই প্রতিশ্রুতি ২০২৫ সাল পর্যন্ত বৃদ্ধি করতে সম্মত হয়৷ কিন্তু এই প্রতিশ্রুতি এখনও পূরণ করতে পারেনি ধনী দেশগুলো৷
লস অ্যান্ড ড্যামেজ
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় ধনী দেশগুলো সহায়তা দিতে রাজি হলেও দরিদ্র দেশগুলো প্রতিবছরই জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে কতটা ক্ষতি হচ্ছে তার পরিমাণ নির্ধারণে সম্মত হওয়ার জন্য চাপ দিয়ে থাকে৷ এই ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করা গেলে সে অনুযায়ী ক্ষতিপূরণও দাবি করা সম্ভব হবে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর পক্ষে৷