তাজরীনের অগ্নিকাণ্ড এবং শ্রম নিরাপত্তা আইন
২০১২ সালের ২৪শে নভেম্বর তাজরীন কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে অন্তত ১১২ জন নিহত এবং দুই শতাধিক শ্রমিক আহত ও দগ্ধ হন৷
সেই ভয়াবহ দিন
২০১২ সালের ২৪শে নভেম্বর সাভারের নিশ্চিন্তপুরে তোবা গ্রুপের কারখানা তাজরীন ফ্যাশনসের ওই অগ্নিকাণ্ডে সরকারি হিসেবে অনুযায়ী ১১২ জন গার্মেন্টকর্মী নিহত হন৷ আগুন থেকে বাঁচতে ওই ভবনের বিভিন্ন ফ্লোর থেকে ঝাঁপ দিয়ে আহত হন দেড় শতাধিক গার্মেন্টকর্মী৷
বেশিরভাগ নিহত শ্রমিক গার্মেন্টসের
‘সেফটি অ্যান্ড রাইটস সোসাইটি’ ও ‘বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট)’ তাদের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, চলতি বছরে অক্টোবর পর্যন্ত ১০ মাসে ২১৭টি দুর্ঘটনায় মারা গেছেন ২৬০ জন শ্রমিক৷ এর মধ্যে অগ্নিকাণ্ডে ১২ জন৷ মোট নিহত শ্রমিকদের দুই তৃতীয়াংশেরও বেশি তৈরি পোশাক কারখানার৷
শ্রমিক নিরাপত্তা আইন পর্যাপ্ত নয়
বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্যপরিষদের আহবায়ক সিরাজুল ইসলাম রনি ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, ‘‘শ্রমিক নিরাপত্তা আইন পর্যাপ্ত নয়৷ আর দুর্ঘটনার কবলে পড়ে আহত ও নিহতদের ক্ষতিপূরণের বিধানও কার্যকর নয়৷ শ্রমিকদের গ্রুপ বীমার নামে যা চালু আছে তা হাস্যকর৷’’
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের আহ্বান
মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলেছে, তাজরীন ফ্যাশনসে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের যাতে অবিলম্বে ক্ষতিপূরণ দেয়া হয়৷ সেখানে বলা হয় ঐ ঘটনায় যাঁরা আহত হয়েছিলেন তাঁদের অনেকেরই কর্মক্ষমতা হারিয়ে যাওয়ায় পরিবার নিয়ে বিপাকে পড়েছেন৷ এছাড়া নিহতদের পরিবারেও একই অবস্থা৷
রপ্তানি আয়ের ৮০ ভাগই পোশাক শিল্প থেকে
বাংলাদেশে প্রায় ৫ হাজার তৈরি পোশাক কারখানা আছে৷ রপ্তানি আয়ের ৮০ ভাগই আসে পোশাক শিল্প থেকে৷
১৫ হাজারেরও বেশি অগ্নিকাণ্ড
বাংলাদেশে প্রতিবছর গড়ে ১৫ হাজারেরও বেশি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে৷ কিন্তু ফায়ার সার্ভিসের জনবল মাত্র সাড়ে ৬ হাজার৷ আর যানজট, সরু গলি এবং পানির অভাবে ফায়ার সার্ভিসের টিম ঠিকমতো কাজ করতে পারে না৷
নেই সঠিক অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা
আইন থাকলেও রাজধানী ঢাকার ৯৫ ভাগ বহুতল ভবনেই নেই সঠিক অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা৷