তিয়ানআনমেন চত্বরের স্মৃতি, ১৯৮৯
১৯৮৯ সালের জুন মাসে বেইজিং এর তিয়ানআনমেন চত্বরে সংঘটিত ঘটনাবলীর ছবি লুকাতে চেয়েছিল চীনা কর্তৃপক্ষ৷ তবে এপি আলোকচিত্রী জেফ ওয়াইডেনার এর মতো অল্প কিছু সাংবাদিক সেসব ঘটনার ঐতিহাসিক ছবি সংরক্ষণে সক্ষম হন৷
গণতন্ত্রের দেবী
সূর্যোদয়ের সময় তিয়ানআনমেন চত্বরে ৩৩ ফুট লম্বা ‘গণতন্ত্রের দেবী’র মূর্তি স্থাপন করেন আন্দোলনকারীরা৷ সেটি ছিল ফোম এবং কাগজের তৈরি৷ কিন্তু ৪ জুন সকালে সেনারা ট্যাংক এবং সাঁজোয়া যানের সহায়তায় অভিযান চালান চত্বরে, ভেঙে ফেলেন সেই মূর্তি৷
হাস্যোজ্বল নারী পুলিশ
অস্থির সেই দিনগুলোতে স্থানীয় মানুষের সঙ্গে পুলিশের সুসম্পর্কও দেখা গেছে৷ অনেকক্ষেত্রে সেনা এবং পুলিশদের উপহার সামগ্রী দিয়েছেন স্থানীয়রা৷ মাঝে মাঝে সেনারাও আন্দোলনকারীদের সঙ্গে মিলে মিশে দেশাত্মবোধক গান গেয়েছেন৷ ছবিতে এক নারী পুলিশ তিয়ানআনমেন চত্বরে গান গাইছেন৷ এর কয়েকদিন পরই সেখানে অভিযান চালায় সামরিক বাহিনী৷
সংগ্রাম
বিংশ শতাব্দীর অন্যতম রক্তক্ষয়ী দমন অভিযানের একদিন আগের ছবি এটি৷ ১৯৮৯ সালের ৩ জুন তোলা এই ছবিতে গণতন্ত্রকামী আন্দোলনকারী এবং পিপল’স লিবারেশন আর্মি সেনাদের মধ্যকার উত্তেজনা দেখা যাচ্ছে৷ এই উত্তেজনার মাঝে আটকে যান এক নারী৷ সে রাতে সেনাবাহিনী নিরস্ত্র বেসামরিক আন্দোলনকারীদের উপর গুলি চালায় এবং তিয়ানআনমেন চত্বর দখল করে নেয়৷
দখলে নেয়া অস্ত্র
দমন অভিযানের আগে তোলা ছবি৷ একটি বাসের উপর দখল করা অস্ত্র প্রদর্শন করা হচ্ছে, যেটি ঘিরে রেখেছে কয়েক হাজার আন্দোলনকারী৷
গণতন্ত্রের জন্য লড়াই
তিন জুন সন্ধ্যায় এই সাঁজোয়া যানটি গ্রেট হলের গেটের কাছে নিয়ে যায় আন্দোলনকারীরা৷ সেনাবাহিনীর আগমন ঠেকাতে আন্দোলনকারীদের তৈরি ব্যারিকেডের সঙ্গে ধাক্কা খেয়েছিল এটি৷ এর কিছুক্ষণ পরই সেনারা তিয়ানআনমেন চত্বরে নির্বিচারে গুলি চালাতে শুরু করে৷
সাঁজোয়া যানে আগুন
তিয়ানআনমেন চত্বরের কাছে একটি সাঁজোয়া যানে আগুন ধরিয়ে দেয় আন্দোলনকারীরা৷ ৩ জুন সন্ধ্যা রাতে তোলা ছবি এটি৷ এই ছবি তোলার পর বিক্ষোভকারীদের ছোড়া ইটের আঘাতে আহত হন এপি আলোকচিত্রী জেফ ওয়াইডেনার৷
দমন অভিযান
আন্দোলনকারীদের উপর রক্তক্ষয়ী দমন অভিযানের পর চাং’আন অ্যাভিনিউতে এভাবে টহল দিচ্ছিল সেনারা৷ ৪ জুন বেইজিং হোটেলের লবিতে অবস্থানরত পর্যটকদের উপর এরকম একটি ট্রাক থেকে সেনারা গুলি চালায়৷
‘ট্যাংক ম্যান’
বাজারের ব্যাগ হাতে এক ব্যক্তি একাই এভাবে দাঁড়িয়েছিলেন সেনাদের ট্যাংকের সামনে৷ কিছুক্ষণের জন্য ট্যাংকগুলো থামিয়ে দিতে সক্ষম হন তিনি৷ তবে দুই দশক পেরিয়ে গেলেও এই লোকের ভাগ্যে কি ঘটেছিল তা জানা যায়নি৷ তবে ছবিটি পরবর্তীতে তিয়ানআনমেন চত্বরের প্রতীকে পরিণত হয় এবং এখন পর্যন্ত তোলা ছবিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে প্রতীকী ছবি হিসেবে প্রতিষ্ঠা পায়৷
নিহত নায়করা
তিয়ানআনমেন চত্বরে চীনা সেনাবাহিনীর ৩৮তম ডিভিশনের চালানো দমন অভিযানে নিহত মানুষের ছবি দেখাচ্ছেন একদল মানুষ৷ স্থানীয় একটি মর্গে এভাবেই পড়েছিল মরদেহগুলো৷ অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের হিসাব অনুযায়ী, সেই অভিযানে কমপক্ষে তিনশো বেসামরিক ব্যক্তি প্রাণ হারান৷
ঝাড়ুদার
সামরিক দমন অভিযানের পর চাং’আন অ্যাভিনিউতে থাকা একটি পোড়া বাসের চারপাশটা পরিষ্কার করছেন দুই ঝাড়ুদার৷ আন্দোলনের সময় বিক্ষোভকারীরা বেশ কয়েকটি বাস এবং সামরিক যান জ্বালিয়ে দেয়৷ এসব ঘটনায় অনেক সেনা নিহত এবং আহত হন৷
মাওকে পাহারা
দাঙ্গার কয়েকদিন পরেও এভাবে ফরবিডেন সিটির সামনে থাকা মাও সে তুং এর ছবি পাহারা দিয়েছেন সেনারা৷
‘ব্রাদার্স ইন আর্মস’
তিয়ানআনমেন চত্বরে সামরিক দমন অভিযানের কয়েকদিন আগে ফরবিডেন সিটির সামনে এভাবে ছবির জন্য পোজ দেন অ্যাসেসিয়েট প্রেসের আলোকচিত্রী জেফ ওয়াইডেনার এবং লিউ হুয়াং সিং৷