নর্দার্ন হোয়াইট রাইনোদের টিকিয়ে রাখার চেষ্টা
৬ মে ২০২৪বেঁচে থাকা শেষ দুই নারী নর্দার্ন হোয়াইট রাইনো নাইয়িন ও ফাতু৷ তারা মরে গেলে তাদের জাত একেবারে হারিয়ে যাবে৷
নর্দার্ন হোয়াইট রাইনোদের বাঁচাতে কাজ করা আন্তর্জাতিক এক দলের সদস্য প্রজনন জীববিজ্ঞানী সুজানা হলৎস৷ এই কাজের জন্য তাদের সাউদার্ন হোয়াইট রাইনোর সহায়তা নিতে হয়েছে৷ সুজানা হলৎস বলেন, ‘‘আমরা প্রথমবারের মতো সফলভাবে গন্ডারের (সাউদার্ন হোয়াইট রাইনো) মধ্যে ভ্রূণ স্থানান্তর করতে পেরেছি এবং এটি আমাদের জন্য একটি নতুন ও বড় পদক্ষেপ৷''
মধ্য আফ্রিকার কিছু অংশ নর্দার্ন হোয়াইট রাইনোরা একসময় ঘুরে বেড়াত৷ কিন্তু তাদের উপর শিকার ও গৃহযুদ্ধের মারাত্মক প্রভাব পড়েছে৷ এবং বন থেকে তারা হারিয়ে গেছে৷ ফলে পরিবেশগত ফাঁক তৈরি হয়েছে৷
হলৎস বলেন, ‘‘সেন্ট্রাল আফ্রিকার একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রজাতি নর্দার্ন হোয়াইট রাইনো, বা বলা যায়, প্রাকৃতিক আবাস থেকে হারিয়ে যাওয়ার আগে এটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল৷ তারা লম্বা ঘাস এমনভাবে খায় যে, ছোট আকারের ঘাস থেকে যায়, যেটা অন্য পশুরা খেতে পারে৷ কারণ, এমন কিছু পশু আছে যারা লম্বা ঘাস পছন্দ করে না৷ এমন ছোট ঘাসের এলাকা বা জোন তৈরি করে নর্দার্ন হোয়াইট রাইনো অগ্নি-নিরোধেও সহায়তা করে৷ ইকোসিস্টেম খুব জটিল বিষয়৷ আমার মনে হয়, কোনো প্রাণী বা প্রজাতি হারিয়ে গেলে বোঝা যায় সবকিছু কেমন একটা আরেকটার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিল৷''
চেক প্রজাতন্ত্রের এক চিড়িয়াখানায় চারটি গন্ডার ছিল৷ এই দুই গন্ডার দম্পতি থেকে বাচ্চা পেতে তাদের ২০০৯ সালে কেনিয়ায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল৷ উদ্দেশ্য ছিল, তারা যেন তাদের পরিচিত পরিবেশে পরিচিত ঘাস খেতে পারে৷
কিন্তু সেই আশা পূরণ হয়নি৷ কারণ, কোনো সন্তান জন্ম নেয়নি৷ আর দুই পুরুষ গন্ডারই মারা গিয়েছিল৷
ফলে এই প্রজাতি টিকিয়ে রাখার শেষ সুযোগ হচ্ছে, এই দুই নারী গন্ডার৷
কিন্তু সেটা কীভাবে সম্ভব? এই প্রশ্নের কিছুটা উত্তর বার্লিনের এই লাইবনিৎস ইন্সটিটিউট ফর জু অ্যান্ড ওয়াইল্ডলাইফ রিসার্চে লুকিয়ে আছে৷ ‘‘সেখানে আমরা নর্দার্ন হোয়াইট রাইনোর বীর্যের নমুনা ও নর্দার্ন হোয়াইট রাইনোর ভ্রূণ সংরক্ষণ করে রেখেছি৷ আমরা সেগুলো ভাগ করে ইটালি ও জার্মানিতে রেখেছি যেন কোনো দুর্যোগ হলে যেন অন্তত একটি ব্যাংক নিরাপদ থাকে,'' জানান হলৎস৷
নর্দার্ন হোয়াইট রাইনোর ৩০টি ভ্রূণ সেখানে রাখা আছে৷ কয়েকটি পুরুষ গন্ডার মারা যাওয়ার আগে বীর্য সংগ্রহ করে রেখেছিলেন বিজ্ঞানীরা৷
কয়েক সপ্তাহ পরপর বিজ্ঞানীরা নারী গন্ডার থেকে ডিম কোষ সংগ্রহ করে থাকেন৷ এরপর সেগুলো ইটালিতে ল্যাবে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে ডিম আর শুক্রাণু মিলিত হয়৷
এ থেকে পাওয়া ভ্রূণ ভবিষ্যতের জন্য হিমায়িত করে রাখা হয়৷
আসন্ন গ্রীষ্মে নর্দার্ন হোয়াইট রাইনোর শরীরে ভ্রূণ স্থানান্তর করার কথা৷ সব ঠিক থাকলে প্রায় ১৬ মাস পর দুই নর্দার্ন হোয়াইট রাইনোর পাশে একটি শিশু গন্ডার দেখা যাওয়ার কথা৷ কারণ বেড়ে ওঠার জন্য শিশু গন্ডারকে অন্য গন্ডারদের সঙ্গে থাকা প্রয়োজন৷
লেয়া আলব্রেশট/জেডএইচ