নিউজিল্যান্ডে নির্বাচনে জয়ী অদ্ভুত পাখি পুটিকিটিকি
১৬ নভেম্বর ২০২৩কারণ, ১৯৫টি দেশের সাড়ে তিন লাখেরও বেশি মানুষ অংশ নিয়েছেন এই নির্বাচনে৷ সাড়ে তিন লাখেরও বেশি ভেরিফায়েড ভোটের এ নির্বাচনে বিজয়ীর মুকুট উঠেছে অদ্ভুত স্বভাবের পাখি পুটিকিটিকির মাথায়৷
বড় আদুরে স্বভাবের মজার পাকি পুটিকিটিকি৷ এ কারণেই সবচেয়ে বেশি ভোট পড়েছে তার নামে৷ নির্বাচনি প্রচারাভিযানে পাখিটির যে চারটি বৈশিষ্ট্য সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পায়, সেগুলো হলো, এক- পছন্দের সঙ্গী বা সঙ্গিনীকে আকৃষ্ট করতে সে খুব সুন্দর করে নাচতে পারে, দুই - মা বা বাবা হলে সন্তান খুব সুন্দর করে লালন-পালন করতে পারে, তিন- খুব অদ্ভুত অদ্ভুত শব্দ করতে পারে এবং চার- পুটিকিটিকি খুব বমি করতে পারে, সব খাবার মুহূর্তের মধ্যে উগড়ে দিতে পারে!
ব্রিটিশ-অ্যামেরিকান কমেডিয়ান জন অলিভার ভূমিকা না রাখলে পুটিকিটিকি নামে যে এমন অদ্ভুত একটা পাখি আছে তা বিশ্বের অনেক দেশের মানুষ হয়ত জানতেই পারতো না৷
প্রতিবছর দেশি পাখির বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে বর্ষসেরা পাখি নির্বাচন করে নিউজিল্যান্ড৷ বরাবরের মতো এবারও হয়ত অন্য কোনো পাখিই পেয়ে যেতো সেই স্বীকৃতি৷ কিন্তু ভোট প্রক্রিয়ায় দুর্বলতা চোখে পড়ায় পুরো বিষয়টিকে বৈশ্বিক পর্যায়ে নিয়ে যান জন অলিভার৷ এইচবিও-র জনপ্রিয় অনুষ্ঠান ‘লাস্ট উইক টুনাইট'-এ তুলে ধরেন অখ্যাত, অজ্ঞাত পাখি পুটিকিটিকির কথা৷
পাখিটির জয় নিশ্চিত করতে নিউজিল্যান্ডের রাজধানী ওয়েলিংটনের রাস্তায় লাগানো হয় বিশাল বিলবোর্ড, সেখানে লেখা ছিল ‘দ্য লর্ড অব উইংস৷' কিন্তু ‘ডানাওয়ালাদের সম্রাট' শুধু নিউজিল্যান্ডের মানুষদের ভোট পেলে তো জিততে পারবে না৷ তাই প্যারিস, টোকিও, লন্ডন এবং মুম্বাইয়েও লাগানো হলো বিলবোর্ড৷ ব্রাজিলের ইপানেমা সমুদ্রসৈকতের ওপর দিয়ে জন অলিভার এমন এক বিমান ওড়ালেন যার গায়ে বাঁধা ছিল সেই ‘দ্য লর্ড অব উইংস' লেখা ব্যানার৷ ভোটাভুটি শেষ না হওয়া পর্যন্ত অনেক জায়গায় পুটিকিটিকি সেজেই হাজির হলেন জন অলিভার৷ জিমি ফ্যালনের ‘দ্য টুনাইট শো'-র মতো অনুষ্ঠানেও পুটিকিটিকর আদলেই দেখা গেছে তাকে৷
বাকিটা রেকর্ড ভোটে পুটিকিটিকির শতাব্দির সেরা পাখি নির্বাচিত হওয়ার ইতিহাস৷ সে ইতিহাস জানাতে গিয়ে নিউজিল্যান্ডের ফরেস্ট অ্যান্ড বার্ড-এর প্রধান নির্বাহী নিকোলা টোকি বলেন, "পুটিকিটিকি ‘বার্ড অফ দ্য সেঞ্চুরি' হওয়ার দৌড়ে শুরুতে ধারেকাছেও ছিল না৷ অনন্য চেহারা, সন্তান বড় করার মিষ্টি ভঙ্গিমা এবং খাবার উগড়ানোর অদ্ভুত প্রবণতাই তাকে শেষ পর্যন্ত শীর্ষে তুলেছে৷"
এ বছর প্রতিষ্ঠার শতবর্ষ উদযাপন করছে ফরেস্ট অ্যান্ড বার্ড৷ নিজেদের শতবর্ষে পাখিদের শতবর্ষের সেরা নির্বাচনটাকে সার্থক করে দিলো পুটিকিটিকি৷ পুটিকিটিকি না থাকলে কি নিউজিল্যান্ডের সেরা পাখি নির্বাচনে ১৯৫টি দেশের মানুষ অংশ নিতো! এমন নির্বাচনে সাড়ে তিন লাখেরও বেশি ভোট কি পড়তো!
এসিবে/ কেএম(এপি, এএফপি, রয়টার্স)