নিরাপত্তাব্যবস্থা যাচাই করছে জার্মান সরকার
২৪ ডিসেম্বর ২০২৪নিরাপত্তাব্যবস্থায় কোনো ত্রুটি ছিল কিনা, কিংবা কী ধরনের ঘাটতি ছিল, মাগডেবুর্গের ঘটনার পর তা খতিয়ে দেখছে জার্মান সরকার৷
গত সপ্তাহান্তে সাক্সনি-আনহাল্ট রাজ্যের মাগডেবুর্গ শহরের বড়দিনের বাজারের ভিড়ে এক ব্যক্তি সজোরে গাড়ি চালিয়ে দেয়৷ সেই ঘটনায় এক শিশুসহ পাঁচজন নিহত এবং অন্তত দুইশ জন আহত হয়েছেন৷ হামলাকারী ব্যক্তি সৌদি আরবের নাগরিক৷ তিনি ২০০৬ সাল থেকে জার্মানিতে বসবাস করছেন৷ তবে কী কারণে তিনি হামলা চালিয়েছেন তা এখনো জানা যায়নি৷
তার আগে ২০১৬ সালে রাজধানী বার্লিনে বড়দিনের বাজারে গাড়ি হামলার ঘটনা ঘটেছিল৷ সেই হামলায় ১৩জন নিহত এবং ৭০জন আহত হন৷ ওই ঘটনার পর দেশজুড়ে বড়দিনের বাজারগুলোকে কেন্দ্র করে বিশেষ নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়েছিল জার্মান সরকার৷ কিন্তু তারপরও কীভাবে আবারো এমন হামলার ঘটনা ঘটলো তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়৷ হামলা ঠেকাতে সরকার আরো অনেক কিছুই করতে পারতো কিনা তা নিয়েও শুরু হয়েছে আলোচনা৷ বিশেষ করে ২৩ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনের আগে দেশটির নিরাপত্তাব্যবস্থা এবং অভিবাসন নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়৷
এমন পরিস্থিতিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ন্যান্সি ফ্যাজার দেশের অভ্যন্তরীন নিরাপত্তা শক্তিশালী করার কথা জানান৷ সেইসাথে পুলিশকে শক্তিশালী করতে নতুন আইন প্রণয়ন এবং বায়োমেট্রিক পদ্ধাতিতে নজরদারি চালুর কথাও জানান তিনি৷
জার্মান সংবাদমাধ্যম ডেয়ার শ্পিগেলকে জার্মানির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘‘এটি পরিস্কার যে, এমন ভয়াবহ হামলার ঘটনা থেকে জার্মানির মানুষদের বাঁচাতে আমাদেরকে সবকিছুই করতে হবে৷ এর জন্য আমাদের নিরাপত্তা প্রশাসনের প্রয়োজনীয় সব ক্ষমতা দরকার এবং আরো লোকবল দরকার৷’’
জানা গেছে, হামলাকারী ওই ব্যক্তির বিষয়ে জার্মান সরকারকে অবহিত করেছিল সৌদি আরব৷ এ বিষয়ে জার্মানি সংসদের সিকিউরিটি কমিটির উপ-প্রধান একটি বিশেষ সভার আয়োজন করবেন৷ সভায় ওই ব্যক্তির বিষয়ে আগে থেকে পাওয়া সতর্কবার্তার বিষয়েও আলোচনা করা হবে৷
উদ্ভুত পরিস্থিতিতে দেশটির গোয়েন্দা দপ্তরকে আরো শক্তিশারী করার আহ্বান জানিয়েছে বিরোধী দল সিডিইউ৷ দলটির বিচার বিষয়ক মুখপাত্র গুন্টার ক্রিংস বলেন, ‘‘অপরাধমুলক এবং সন্ত্রাসী হামলার তথ্য প্রায় সময়ই বিদেশি গোয়েন্দাদের কাছ থেকে আসে৷ আমরা এ বিষয়টির উপর আস্থা রাখতে পারি না৷ আর এজন্য জার্মান নিরাপত্তাবাহিনীর আরো ক্ষমতা দরকার, যেন ডিজিটাল যুগে নিজেরাই তথ্য সংগ্রহ করতে পারে৷’’
উল্লেখ্য, ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে জার্মানির তথ্য সুরক্ষা আইন সবচেয়ে কড়া৷ এমন আইনের কারণে নিরাপত্তারক্ষীরা বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে নজরদারি করতে পারেন না৷
হামলার ঘটনা নিয়ে সাক্সনি-আনহাল্ট রাজ্যও অনুসন্ধান করতে চায়৷ রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মুখপাত্র জানান, হামলার কারণ এবং এর প্রভাব নিয়ে আলোচনা করতে একটি সভা আহ্বান করবে রাজ্যের সংসদ৷
উল্লেখ্য, জার্মানির উত্তরের ব্রেমেরহাফেন শহরে টিকটক ভিডিওতে সেখানকার বড়দিনের বাজারে ছুরি নিয়ে হামলা চালানোর হুমকি দেওয়ার ঘটনায় এক ব্যক্তিকে সোমবার আটক করেছে পুলিশ৷
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টিকটকে প্রকাশিত ভিডিওতে ওই ব্যক্তি সেখানকার বড়দিনের বাজারে ঢুকে দেখতে আরব বা ভৌগলিকভাবে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের উপর ছুরি নিয়ে হামলা চালানোর হুমকি দেন৷
স্থানীয়দের কাছ থেকে ওই ভিডিওর বিষয়ে জানার পর পুলিশ তাকে আটক করে৷ আটক হওয়া ব্যক্তির বিস্তারিত তথ্য জানায়নি পুলিশ৷
আরআর/এসিবি (রয়টার্স)