পরিবেশের ভারসাম্য ধ্বংসে মানুষের প্রভাবের স্পষ্ট প্রমাণ
১২ জুলাই ২০২৩অবশ্য ঠিক কখন থেকে অ্যান্থ্রোপোসিন যুগ শুরু হয়েছে, বা আদৌ হয়েছে কিনা, এ নিয়ে দ্বিমত রয়েছে বিজ্ঞানীদের মধ্যেও।
পৃথিবীর পরিবেশের ওপর মানবজাতির কর্মকাণ্ড যখন থেকে গুরুতর প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে, সেই সময়কে বিজ্ঞানীরা নাম দিয়েছেন অ্যান্থ্রোপোসিন যুগ। অ্যান্থ্রোপোসিন ওয়ার্কিং গ্রুপ এর বিজ্ঞানীরা বলছেন, ক্রফোর্ড হ্রদের তলদেশে জমা হওয়া পলি থেকে এই যুগ শুরুর প্রমাণ পাওয়া যেতে পারে।
মানুষের প্রভাবের প্রমাণ কোথায় সবচেয়ে ভালো পাওয়া যেতে পারে, এমন ১২টি এলাকার তালিকা করেছিলেন বিজ্ঞানীরা। এর মধ্য থেকেই বেছে নেয়া হয়েছিল ক্রফোর্ড হ্রদকে।
অ্যান্থ্রোপোসিন ওয়ার্কিং গ্রুপ জানিয়েছে, হ্রদের তলদেশে তারা মাইক্রোপ্লাস্টিক, পোড়া তেলের অবশিষ্টাংশ এমনকি পরমাণু বোমার ধ্বংসাবশেষও পেয়েছেন। বিজ্ঞানীরা বলছেন, পৃথিবীর পরিস্থিতি কিভাবে হঠাৎ করে এক অপরিবর্তনীয় মোড় নিয়েছে তার উদাহরণ তারা এই পলি থেকে পেয়েছেন।
গ্রুপের সদস্য এবং সাউদাম্পটন ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক অ্যান্ডি কান্ডি বার্তাসংস্থা এএফপিকে জানিয়েছেন, ‘‘বিংশ শতকের মাঝামাঝি থেকে এই স্পষ্ট পরিবর্তনের তথ্য আমরা পেয়েছি। এর ফলে স্বাভাবিক হোলোসিনের পরিস্থিতি থেকে পৃথিবী দূরে সরে গেছে।'' সবশেষ বরফ যুগ শেষ হয় প্রায় ১১ হাজার ৭০০ বছর আগে। এর পর থেকে হলোসিন যুগ চলছিল। কিন্তু অ্যান্ডির তথ্যমতে, হোলোসিন শেষ হয়ে এখন পৃথিবীতে চলছে অ্যান্থ্রোপোসিন যুগ।
অ্যান্থ্রোপোসিন ওয়ার্কিং গ্রুপের সদস্য ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের অধ্যাপক সিমোন টার্নার বলেন, ‘‘ক্রফোর্ড লেকের নীচে পাওয়া পলিতে গত সহস্রাব্দ জুড়ে চলা পরিবেশগত পরিবর্তনের একটি দুর্দান্ত রেকর্ড পাওয়া গেছে।''
স্বীকৃতি পায়নি অ্যান্থ্রোপোসিন যুগ
অ্যান্থ্রোপোসিন যুগকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য ওয়ার্কিং গ্রুপ নৃতাত্ত্বিক স্ট্র্যাটিগ্রাফি সম্পর্কিত আন্তর্জাতিক কমিশনের কাছে তাদের গবেষণার ফল তুলে ধরার পরিকল্পনা করছে।
এই সময়কাল কখন শুরু হয়েছিল, আদৌ শুরু হয়েছে কিনা বা এর জন্য প্রয়োজনীয় প্রমাণ কী হতে পারে, তা নিয়ে বিজ্ঞানীদের মধ্যেও মতবিরোধ রয়েছে।
গ্রুপের প্রধান কলিন ওয়াটার্সের মতে, "বর্তমানে অ্যানথ্রোপোসিনের ৭০ বছর হয়েছে। স্পষ্টতই গ্রহের পরিস্থিতির আকস্মিকভাবে পরিবর্তন ঘটেছে। আমরা এখন আবার হোলোসিন যুগে ফেরত যেতে পারবো না।"
এডিকে/কেএম (এএফপি, রয়টার্স, এপি)