পাঞ্জাবে দলিত শিখ চরণজিৎ নতুন মুখ্যমন্ত্রী
২০ সেপ্টেম্বর ২০২১দলের শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছেড়েছিলেন পাতিয়ালার রাজপরিবারের সন্তান ও সেনাবাহিনীর সাবেক ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিং। গত নির্বাচনে তিনিই কংগ্রেসকে ক্ষমতায় এনেছিলেন। কিন্তু দলের বিধায়কদের বড় অংশের বিদ্রোহ এবং রাহুল-প্রিয়ঙ্কার বিরাগভাজন হওয়ার ফলে বিধানসভা ভোটের কয়েকমাস আগে সরে যেতে হলো অমরিন্দরকে।
তারপর রোববার রাতে কংগ্রেস জানিয়ে দিয়েছে, চরণজিৎ সিং চান্নি পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হবেন। শপথ সোমবার। ৫৮ বছর বয়সি চরণজিৎ তিনবারের বিধায়ক। অমরিন্দর মন্ত্রিসভায় তিনি কারিগরি শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন।
কেন চরণজিৎ?
চরণজিৎ হবেন পাঞ্জাবের প্রথম দলিত মুখ্যমন্ত্রী। আর পাঞ্জাবে দলিতের সংখ্যা ৩১ শতাংশ। কংগ্রেসের প্রধান বিরোধী আকালি দল আগামী বিধানসভা ভোটে মায়াবতীর বহুজন সমাজ পার্টির সঙ্গে জোটে লড়বে। আকালির লক্ষ্য দলিত ভোট পাওয়া। তাই কংগ্রেস একজন দলিতকে মুখ্যমন্ত্রী করে ওই দলিত ভোটের সিংহভাগ পেতে চাইছে।
পাশাপাশি, জাঠ শিখ ও হিন্দু পাঞ্জাবিরা যাতে ক্ষুব্ধ না হন, তার জন্য দুইজন উপ মুখ্যমন্ত্রী নিয়োগ করা হচ্ছে। একজন জাঠ শিখ এবং অন্যজন হিন্দু পাঞ্জাবি।
বিতর্ক আছে
তবে চরণজিৎকে নিয়েও বিতর্ক আছে। ২০১৭ সালে তিনি এক নারী আইএএস অফিসারকে একটি চিঠি দিয়েছিলেন, যা যৌন হেনস্থার নামান্তর বলে অভিযোগ উঠেছিল। তবে ওই নারী আইএএস অফিসার কোনো অভিযোগ করেননি। কিন্তু গত মে মাসে রাজ্যের নারী কমিশন রাজ্য সরকারকে একটি নোটিশ পাঠিয়ে এই ব্যাপারে তাদের মতামত জানাতে বলে।
অমরিন্দরের পরিকল্পনা
অমরিন্দর এরপর কংগ্রেসে থাকবেন, নতুন দল গঠন করবেন, নাকি অন্য কোনো দলে যোগ দেবেন তা স্পষ্ট করেননি। তিনি ইস্তফা দেয়ার পর বলেছেন, সব বিকল্প খোলা আছে। নতুন মুখ্যমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়ে তিনি বলেছেন, তার প্রধান কাজ হলো, সীমান্ত রক্ষা করা ও পাঞ্জাবের মানুষকে সুরক্ষা দেয়া।
পাঞ্জাবের রাজনীতিতে অমরিন্দরের যথেষ্ট প্রভাব আছে। তাকে যেভাবে মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছাড়তে হয়েছে, সেটা তিনি এত সহজে হজম নাও করতে পারেন। অমরিন্দর ছিলেন রাজীব গান্ধীর বন্ধু। কিন্তু অপারেশন ব্লু স্টারের পর তিনি কংগ্রেস ছাড়েন এবং আকালি দলে যোগ দেন। তারপর তিনি ১৯৯২-তে নিজের আলাদা দল গঠন করেন। ১৯৯৮ সালে তিনি আবার কংগ্রেসে ফেরেন। ফলে অতীতে তিনি দলবদল করেছেন, আবার নিজের দল গঠন করেছেন। কিন্তু সেই দল নির্বাচনী সাফল্য পায়নি।
রাহুল-প্রিয়ঙ্কার সিদ্ধান্ত
কংগ্রেস সূত্র জানাচ্ছে, অমরিন্দরের ইস্তফা গ্রহণ করা এবং চরণজিৎকে মুখ্যমন্ত্রী করাটা হলো রাহুল ও প্রিয়ঙ্কার সিদ্ধান্ত। সোনিয়া এখনো কংগ্রেস সভানেত্রী থাকলেও ভাই-বোনই এখন দলের সব গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। রাহুল অবশ্য দলের কোনো পদেই নেই। শুধুমাত্র সাংসদ। তা সত্ত্বেও তিনি এখন দলের সব বিষয়েই শেষ কথা বলছেন। আর তাকে সাহায্য করছেন প্রিয়ঙ্কা। পাঞ্জাবের ক্ষেত্রেও সেটাই হয়েছে।
জিএইচ/এসজি(পিটিআই, এনডিটিভি)