1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
পরিবেশযুক্তরাজ্য

প্রকৃতির মাঝে বাস করার পথে অনেক বাধা

১৯ এপ্রিল ২০২৩

পরিবেশ সংরক্ষণ সম্পর্কে তাত্ত্বিক তর্কবিতর্কের পথে না গিয়ে নিজস্ব জীবনযাত্রায় পরিবর্তন এনে হাতেনাতে বিকল্প জীবনধারার দৃষ্টান্ত দেখাচ্ছে ব্রিটেনের এক পরিবার৷

https://p.dw.com/p/4QJC3
পরিবেশ সংরক্ষণ সম্পর্কে তাত্ত্বিক তর্কবিতর্কের পথে না গিয়ে নিজস্ব জীবনযাত্রায় পরিবর্তন এনে হাতেনাতে বিকল্প জীবনধারার দৃষ্টান্ত দেখাচ্ছে ব্রিটেনের এক পরিবার৷
ছবি: Andrew Matthews/PA Wire/dpa/picture alliance

ম্যাথিউ ওয়াটকিনসন নিজের এক স্বপ্ন পূরণ করেছেন৷ প্রকৃতির উপহার দিয়েই উপার্জনের পথ বেছে নিয়েছেন তিনি৷ স্ত্রী ক্যারিস ও তিনি পশু চিকিৎসক হিসেবে নিজেদের পেশা ছেড়ে ওয়েলস প্রদেশের নিউপোর্টে সমুদ্রের ধারে নিজেদের ছোট্ট জমিতে চাষবাস করছেন৷ ম্যাথিউ মনে করেন, ‘‘সামান্য কল্পনাশক্তি থাকলেও অঢেল সুযোগ ও সম্ভাবনা চোখে পড়বে৷ শুধু ভিন্ন কিছু করার তাগিদ থাকতে হবে৷ আমরা সৃজনশীলতা ও কল্পনাশক্তি কাজে লাগিয়ে ভেড়া চরানোর মাঠে প্রাণ ভরিয়ে দিয়েছি৷''

ওয়াটকিনসন পরিবার বেশ স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছে৷ তাঁদের বাড়ি বিদ্যুতের গ্রিডের সঙ্গে সংযুক্ত নয়৷ ওয়াশিং মেশিনের বদলে তারা হাতে চালানো যন্ত্র দিয়ে কাপড় কাচেন৷ মিনি উইন্ড মিল ও সৌর প্যানেল দিয়ে বিদ্যুতের চাহিদা মেটে৷

কিন্তু বাতাস চলাচল কমে গেলে বা আকাশে মেঘ করলে বিদ্যুতের জোগানও কমে যায়৷ সব কিছুই জোড়াতালি দিয়ে চলে৷ সব কিছু পুনর্ব্যবহার করা হয়৷ এমনকি পুরানো গাড়িও বাদ যায় না৷ চ্যারিস ওয়াটকিনসন সেগুলি দেখিয়ে বলেন, ‘‘এটির মধ্যে আমরা সব বীজ রাখি, সেখান থেকেই বীজ বপন করা হয়৷ এটির মধ্যে বাড়তি শোবার ঘর রয়েছে৷ আত্মীয়স্বজন বা বন্ধুবান্ধব এলে থাকতে পারে৷''

স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে তার স্বামী ম্যাথিউ বলেন, ‘‘আমরা ঘোড়ার লরি দিয়ে শুরু করেছিলাম, যেটা বাসের যোগ্য করে তোলার সবচেয়ে দ্রুত উপায় মনে হয়েছিল৷ আরও বেশি জায়গার প্রয়োজন মেটাতে আমরা কিছু ট্রাক্টরের ট্রেলার জোগাড় করলাম৷ সবকটি জুড়ে উপরে কাঠের ছাদ বসিয়ে এই ফল পেয়েছি৷ সে সময়ে এমন এলোমেলো সব জিনিস জুড়তে হয়েছিল৷''

অরগ্যানিক জীবনধারার পথিকৃত হিসেবে স্বীকৃতি পেতে এই পরিবারকে অনেক আমলাতান্ত্রিক জটিলতার মুখোমুখি হতে হয়েছে৷ গ্রামের বাসায় সেই পরিবার যথেষ্ট উৎপাদন করছে কিনা, প্রতি বছর কর্তৃপক্ষ তা পরীক্ষা করে৷ কারণ তার সঙ্গে জাতীয় পার্কের মাঝে নির্মাণের অনুমতির বিষয়টি জড়িয়ে রয়েছে৷ চ্যারিস বলেন, ‘‘ইকলজিক্যাল ফুটপ্রিন্ট দেখাতে ব্যয়ের সব হিসেব পেশ করতে হয়৷ সব খাবারদাবার, স্টেশনারি, ব্যবহৃত জামাকাপড়, নতুন জামাকাপড়, জুতা – সবকিছু৷''

‘আধুনিকতা’ ছেড়ে প্রকৃতির সঙ্গে বাস করা ব্রিটেনের পরিবার

ছয় বছর ধরে ওয়াটকিনসন পরিবার সেখানে বাস করছেন৷ এখন তাদের প্রতিবেশীরা নিজেদের জমিতে প্রবেশের পথ কঠিন করে তুলতে চায়৷ এই পরিবার আগে এমন আশঙ্কা করে নি৷ ম্যাথিউ মনে করেন, ‘‘নিজের বিশ্বাসের মূলে বাধাই সবচেয়ে কঠিন বিষয়৷ জমির এই ফালি মানুষ ও বন্যপ্রাণীর জন্য আরও বাসযোগ্য করে তোলায় আমি বিশ্বাস করি৷''

ওয়াটকিনসন পরিবার অনেক কিছু ত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ পুরানো ট্রেলারের মধ্যে থাকা মোটেই আরামদায়ক নয়, বিশেষ করে শীতের সন্ধ্যাগুলিতে বেশ কষ্ট হয়৷ তা সত্ত্বেও সেই বাসার প্রতি হৃদয়ের টান আরও জোরালো হয়েছে৷ তাছাড়া তাঁরা নিজেদের সন্তানদের জন্য উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে চান৷ চ্যারিস ওয়াটকিনসন বলেন, ‘‘আমরা পরিবেশের উপর অনেক কম প্রভাব রাখছি৷ ফলে তারা দেখতে পাচ্ছে, কীভাবে ভবিষ্যতেও তারা এমনটা করতে পারে৷ বিদ্যুৎ সংযোগ, টেলিভিশন ও ইন্টারনেট পুরোপুরি বর্জন না করেও এমনটা করা যায়৷ সে সব থাকা সত্ত্বেও আমরা এটা করতে পারছি৷''

কয়েকজন প্রতিবেশির ভ্রুকুটি সত্ত্বেও ওয়াটকিনসন পরিবার আশা করছে, যে এভাবে আরও মানুষকে প্রকৃতির সঙ্গে একাত্ম হয়ে বাস করার প্রেরণা জোগানো যাবে৷

বির্গিট মাস/এসবি