1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বদলে যাওয়া পরিস্থিতিতে ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর রাশিয়া সফর

৯ ডিসেম্বর ২০২৪

ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং এখন রাশিয়া সফরে। এ সফরে রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক হবে তার, দেখা করবেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিনের সঙ্গেও।

https://p.dw.com/p/4nuTp
ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং।
তিনদিনের সফরে রাশিয়া গেছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। ছবি: picture-alliance/dpa/F. Khan

রোববার সিরিয়ায় ক্ষমতাচ্যুত হয়ে দেশ ছাড়েন বাশার আল আসাদ৷ সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী তিনি এখন রাশিয়ায়৷ ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংও রোববার রাতে মস্কো পৌঁছান। ভূ-রাজনৈতিক কারণে রাজনাথের তিনদিনের এই সফরকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ মনে করছেন বিশ্লেষকরা। এই সফরে রাজনাথ সিং রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী আন্দ্রেই বেলোউসভের সঙ্গে দুই দেশের প্রতিরক্ষা সহযোগিতা নিয়ে কথা বলবেন। রাশয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিনের সঙ্গেও দেখা করবেন রাজনাথ। 

রাশিয়া ভারতীয় নৌবাহিনীর হাতে যুদ্ধজাহাজ আইএনএস তুশিল তুলে দেবে। সেই অনুষ্ঠানে ভারতের নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল দীনেশ কে ত্রিপাঠীও থাকবেন। এই যুদ্ধজাহাজে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে।

দুই প্রতিরক্ষামন্ত্রী সামরিক ও সামরিক প্রযুক্তির বিষয়টি নিয়ে দুই দেশের আন্তঃ সরকারি কমিশনের বৈঠকে বিস্তারে কথা বলবেন। সেখানে সামরিক সহয়োগিতার পুরো বিষয়টি নিয়ে দুই প্রতিরক্ষামন্ত্রীর কথা হবে। তাছাড়া দুই দেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিষয়ে কথা হবে।

রাশিয়ার কাছ থেকে আরো দুইটি এস ৪০০ এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম পাবে ভারত। ২০১৮ সালে পাঁচটি এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম কেনা নিয়ে ভারত ও রাশিয়ার  চুক্তি হয়েছিল। তার মধ্যে দুইটি হাতে পাওয়া বাকি রয়েছে। এই এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমও খুবই উন্নত মানের।

কেন এই সফর গুরুত্বপূর্ণ?

ভারতীয় সেনার অবসরপ্রাপ্ত লেফটোন্যান্ট জেনারেল উৎপল ভট্টাচার্য ডিডাব্লিউকে বলেন, ''রাজনাথের সফরের সময়টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণ থেকে সিরিয়া সরে গেছে। ট্রাম্প আর কিছুদিনের মধ্যেই মার্কিন প্রেসিডেন্টের আসনে বসবেন। এই অবস্থায় রাশিয়ার সঙ্গে কৌশলগত আলোচনা হবে ভারতের।''

উৎপল ভট্টাচার্য জানান, ''ভারত এখনো দুইটি এস ৪০০ মিসাইল সিস্টেম পায়নি। তার স্পেয়ার পার্টসও পায়নি। এখন তো আরো উন্নত মানের এস ৫০০ চলে এসেছে। ভারত সেগুলি চাইতে পারে।''

সামরিক বিশ্লেষক উৎপল ভট্টাচার্য আরো বলেন, ''ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর তিনি কীভাবে রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের এই সামরিক সহযোগিতার বিষয়টি দেখবেন, সেদিকেও নজর থাকবে। মার্কিন নিয়ম অনুসারে এই ধরনের অস্ত্র নিলে তারা নিষেধাজ্ঞা পর্যন্ত জারি করতে পারে।''

প্রবীণ সাংবাদিক শরদ গুপ্তা ডিডাব্লিউকে বলেন, ''ইউক্রেন যুদ্ধের পর থেকে রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক নিয়ে পশ্চিমা দেশগুলি সমানে প্রশ্ন তুলেছে। রাশিয়া থেকে ভারতের তেল কেনা নিয়েও তারা প্রশ্ন তুলেছে। কিন্তু ভারত বারবার বলেছে, রাশিয়া তাদের দীর্ঘদিনের সহয়োগী ও বন্ধু দেশ। তারা রাশিয়ার সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখবে।''

শরদ মনে করেন, ''রাজনাথের এই সফর সেই একই বার্তা দিচ্ছে। প্রতিটি দেশই নিজের স্বার্থ অনুসারে চলে। ভারতও একই রাস্তায় চলছে। সেখানে তারা পশ্চিমা দেশগুলির আপত্তি সত্ত্বেও রাশিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রাখছে এবং অস্ত্র কিনছে। ভারত এই বিকল্প বন্ধ করতে চায় না। রাশিয়ার তেল কেনার সময়ও প্রকারান্তরে ভারতকে নিষেধাজ্ঞার ভয় দেখানোর চেষ্টা হয়েছিল। অতীত সাক্ষী, ভারত এই ধরনের নিষেধাজ্ঞায় ভয় পায় না।''

সামরিক ক্ষেত্রে ভারত ও রাশিয়ার সহযোগিতা আরো বাড়লো কিনা তা রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে রাজনাথের বৈঠকের পর বোঝা যাবে।

জিএইচ/এসিবি