বাংলাদেশে পোশাক কারখানার নিরাপত্তা
পশ্চিমা বিশ্বের একদল পরিদর্শক বাংলাদেশের পোশাক কারখানাগুলোতে ভয়াবহ নিরপত্তা ঝুঁকি দেখতে পেয়েছেন৷ রানা প্লাজা বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় তারা এই উদ্যোগ নিয়েছিলেন৷
রানা প্লাজা বিধ্বস্তের পর...
২০১৩ সালের এপ্রিলে বাংলাদেশের সাভারে রানা প্লাজা বিধ্বস্ত হলে নিহত হয় অন্তত ১,১০০ পোশাক শ্রমিক৷ এ ঘটনার পর পশ্চিমা যেসব দেশে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি হয়, তারা পোশাক কারখানাগুলো পরিদর্শনের উদ্যোগ নেয়৷ সম্প্রতি বেশ কিছু নামি-দামি ব্র্যান্ডের প্রতিনিধিরা বাংলাদেশের পোশাক কারখানাগুলো পরিদর্শন করেছেন৷
নিরাপত্তা ঝুঁকি
পরিদর্শকরা জানিয়েছেন, বেশিরভাগ পোশাক কারখানায় অগ্নি নির্বাপন ব্যবস্থা এবং ভবনের কাঠামোর বিষয়ে অন্তত ৮০,০০০ নিরারপত্তা ইস্যু খুঁজে পেয়েছেন তাঁরা৷
২,২০০ কোটি মার্কিন ডলারের বাণিজ্য
বাংলাদেশে পোশাক খাতে বাণিজ্যের পরিমাণটি বিশাল৷ অর্থের অঙ্কে প্রায় ২,২০০ কোটি মার্কিন ডলার৷
পোশাক রপ্তানিতে মন্দা
বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং পোশাক কারখানাগুলোতে নিরাপত্তা ঝুঁকির কারণে গার্মেন্টসগুলো তাদের ক্রেতা হারাচ্ছে৷ ফলে পোশাক রপ্তানির হার হ্রাস হয়েছে৷
পোশাক কারখানা পরিদর্শন
বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ পোশাক ব্র্যান্ড এইচঅ্যান্ডএম এবং ইনডিটেক্সসহ ১৮০টিরও বেশি ব্র্যান্ডের প্রতিনিধি ও সদস্যরা অন্তত ১,১০৬টি কারখানা পরিদর্শন করেছেন৷ তাঁরা জানিয়েছেন, প্রতিটি কারখানায় বৈদ্যুতিক ঝুঁকির পাশাপাশি, ভবনের কাঠামো ও অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থাতে গাফিলতি খুঁজে পেয়েছেন তাঁরা৷ এমনকি অনেক কারখানায় ফায়ার অ্যালার্ম ও ফায়ার এক্সিটও নেই৷
অবিলম্বে খালি করার নির্দেশ
১৭টি কারখানা অবিলম্বে খালি করে বন্ধের নোটিস দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন পরিদর্শকরা৷ কারণ ঐ ১৭টি কারখানা যে কোনো মুহূর্তে ধসে পড়তে পারে বলে জানিয়েছেন তাঁরা৷ এছাড়া ১১০টি কারখানার ভবন বেশ ঝুঁকিপূর্ণ বলেও জানা গেছে৷
নিরাপত্তা ইস্যু খতিয়ে দেখা
এর আগে নর্থ অ্যামেরিকান কোম্পানি ওয়ালমার্ট ও গ্যাপ-এর মতো বেশ কিছু কোম্পানির প্রতিনিধিরা বাংলাদেশের ৫৮০টি কারখানা পরিদর্শন করেছেন৷ উদ্দেশ্য একই, নিরাপত্তা ইস্যু খতিয়ে দেখা৷ দেশের অন্তত ৩০০টি কারখানায় ওয়ালমার্ট ও গ্যাপ-এর পোশাক তৈরি হয়৷
আশঙ্কায় শ্রমিকরা
তবে যেসব কারখানা বন্ধের আহ্বান জানানো হয়েছে, সেসব শ্রমিকরা বেতন না পাওয়ার আশঙ্কায় রয়েছেন৷ কেননা পরিদর্শকরা শ্রমিকদের বেতন দেয়ার কথা বললেও মালিকরা এ বিষয়ে কোনো প্রতিশ্রুতি দেননি৷
পরবর্তী পদক্ষেপ
পরিদর্শকরা বেশিরভাগ কারখানার মালিক ও প্রকৌশলীদের নিয়ে আলোচনায় বসে কী কী ইস্যুতে পরিবর্তন আনা দরকার, তা নিয়ে আলোচনা করেছেন এবং একটি নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেয়া হয়েছে৷ এরপর আবারো তাঁরা পরিদর্শনে আসবেন নিজেদের নির্দেশনা কতটা বাস্তবায়ন হলো, তা দেখার জন্য৷