1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বাংলাদেশে প্রশিক্ষণ নিয়ে যুদ্ধে যায় রোহিঙ্গারা: রয়টার্স

২৫ নভেম্বর ২০২৪

বিশ্বের সবচেয়ে বড় শরণার্থী ক্যাম্প কক্সবাজারের কুতুপালংয়ে সশস্ত্র প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন রোহিঙ্গারা। তাদের বড় একটি অংশ মিয়ানমারে সামরিক জান্তার পক্ষে যুদ্ধেও অংশ নিচ্ছেন।

https://p.dw.com/p/4nPus
কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পের একটি দৃশ্য
আরাকান আর্মির সঙ্গে রোহিঙ্গাদের সমঝোতার একটি চেষ্টা করেছিল বাংলাদেশ, তবে তা ভেস্তে গেছেছবি: REUTERS

রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ১৮ জনের সাক্ষাৎকার নিয়ে এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের ক্যাম্প থেকে কয়েক হাজার রোহিঙ্গা মিয়ানমারে সামরিক জান্তার পক্ষে যুদ্ধে অংশ নিচ্ছেন।

রয়টার্সের দাবি, রোহিঙ্গাদের সশস্ত্র সংগ্রামে বাংলাদেশের কয়েকজন কর্মকর্তারও সমর্থন রয়েছে। সশস্ত্র রোহিঙ্গারা রাখাইনের একটি বড় অংশ দখলে নেয়া বিদ্রোহী আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সামরিক জান্তাকে সহায়তা করছেন।

জুলাই মাসে রফিক নামের এক রোহিঙ্গা শরণার্থী কুতুপালং ক্যাম্প থেকে বেরিয়ে একটি ছোট নৌকায় সীমান্ত পাড়ি দিয়ে মিয়ানমারে প্রবেশ করেন। ২০১৭ সালে গৃহযুদ্ধ-কবলিত মিয়ানমার থেকে পালিয়ে তিনি বাংলাদেশে এসেছিলেন। কয়েক সপ্তাহ যুদ্ধে অংশ নিয়ে এক পর্যায়ে পায়ে গুলিবিদ্ধ হন রফিক। তারপর তিনি আবার কুতুপালংয়ে শরণার্থী শিবিরে ফিরে আসেন।

৩২ বছর বয়সি রফিকের মতো কয়েক হাজার রোহিঙ্গা বিদ্রোহী কক্সবাজারের শরণার্থী ক্যাম্প থেকে এভাবে সীমান্ত পাড়ি দিয়েছেন। ক্যাম্পগুলোতে এই বছর জঙ্গি নিয়োগ এবং সহিংসতা বেড়েছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স। এই সংঘর্ষ সম্পর্কে খোঁজ রাখেন- এমন চারজনের সঙ্গে কথা বলেছে রয়টার্স। দুটি দাতা সংস্থার এ বিষয়ক প্রতিবেদনও দেখেছে বার্তাসংস্থাটি।

রফিক রয়টার্সকে বলেছেন, "আমাদের জমি ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য লড়াই করতে হবে। আর কোনো উপায় নেই।"

বিশ্বের বৃহত্তম ‘রাষ্ট্রহীন জনগোষ্ঠী' রোহিঙ্গারা প্রধানত ইসলাম ধর্মাবলম্বী। ২০১৬ সালে বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর অভিযান থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে শুরু করেন রোহিঙ্গারা। জাতিসংঘ মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর হত্যাকাণ্ডকে গণহত্যা বলে অভিহিত করেছে।

২০২১ সালে সেনাবাহিনী অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করার পর থেকে মিয়ানমারে বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠী সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ সশস্ত্র যুদ্ধ শুরু করে৷ রোহিঙ্গা যোদ্ধারাও এখন যুদ্ধের ময়দানে প্রবেশ করেছে৷

আরাকান জাতিগোষ্ঠীর সশস্ত্র সংগঠন আরাকান আর্মি সামরিক বাহনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে এরই মধ্যে পশ্চিম মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের বড় একটি অংশ দখলে নিয়েছে। সেখানে আরাকান আর্মির যোদ্ধারাও রোহিঙ্গাদের ওপর নিপীড়ন চালাচ্ছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে। এমন পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে রোহিঙ্গাদের সশস্ত্র যোদ্ধারা আরাকান আর্মিকে ঠেকাতে সেনাবাহিনীর পক্ষে লড়াইয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যদিও আরাকান আর্মি আসার আগে সেনাবাহিনীই রোহিঙ্গাদের ওপর নিপীড়ন চালাতো।

শরণার্থী শিবির থেকে সশস্ত্র রোহিঙ্গা যোদ্ধাদের মিয়ানমারে প্রবেশের ব্যাপারে আগেই গণমাধ্যমে তথ্য প্রকাশ হয়েছে। তবে রয়টার্সের প্রতিবেদনে বেশ কিছু নতুন তথ্য উঠে এসেছে।

বার্তা সংস্থাটি জানিয়েছে, এরই মধ্যে সশস্ত্র গ্রুপটিতে যোগ দিয়েছেন তিন থেকে পাঁচ হাজার রোহিঙ্গা। রয়টার্স জানিয়েছে, রোহিঙ্গা এবং আরাকান আর্মির মধ্যে সমঝোতা আলোচনা ব্যর্থ হয়েছে। অন্যদিকে সামরিক বাহিনী রোহিঙ্গাদের অর্থ ও নাগরিকত্বের নথি দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে। রোহিঙ্গা বিদ্রোহে বাংলাদেশের কিছু কর্মকর্তার সহযোগিতার বিষয়েও সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রকাশ করেছে রয়টার্স।

বেশ কয়েকজন রোহিঙ্গা যোদ্ধা, মানবতাকর্মী এবং বাংলাদেশের কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বা শুধুমাত্র তাদের প্রথম নাম ব্যবহার করার শর্তে রয়টার্সের সঙ্গে কথা বলেছেন।

বাংলাদেশ সরকার রয়টার্সের প্রশ্নের জবাব দেয়নি, অন্যদিকে মিয়ানমারের সামরিক জান্তা রয়টার্সকে দেওয়া এক বিবৃতিতে কোনো 'মুসলিমকে' নিয়োগ দেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, "মুসলিম বাসিন্দারা সুরক্ষার জন্য অনুরোধ করেছিল। তাই তাদের নিজেদের গ্রাম এবং অঞ্চল রক্ষায় সহায়তা করতে প্রাথমিক সামরিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল।"

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্কের অধ্যাপক শাহাব এনাম খান বলেছেন, কক্সবাজারের ক্যাম্পগুলোতে দুটি বড় রোহিঙ্গা জঙ্গি গোষ্ঠী- রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশন (আরএসও) এবং আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) এর ব্যাপক সমর্থন রয়েছে বলে মনে হচ্ছে না।

কিন্তু একটি নিরাপত্তা সূত্রের তথ্যমতে, শিবিরে এবং এর আশেপাশে প্রশিক্ষিত রোহিঙ্গা যোদ্ধা এবং অস্ত্রের উত্থানকে একটি টাইম বোমা বলে বিবেচনা করে বাংলাদেশ। সহিংসতা প্রবণ শরণার্থী শিবিরে প্রতি বছর প্রায় ৩০ হাজার শিশু চরম দারিদ্র্যের মধ্যে জন্ম নেয়।

শাহাব এনাম খান মনে করেন, শরণার্থীদের দারিদ্র্য কাজে লাগিয়ে তাদের জঙ্গি কার্যকলাপ এবং অন্যান্য় অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডেও ঠেলে দেয়া হতে পারে। তার মতে, "এটি তখন অঞ্চলের অন্য দেশগুলোতেও ছড়িয়ে পড়বে।"

মিয়ানমারে গৃহযুদ্ধে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের?

মংডুর জন্য লড়াই

বর্ষার মাঝামাঝি সময়ে নৌকায় চড়ে শরণার্থী শিবিরের কাছাকাছি এলাকা থেকে পশ্চিম মিয়ানমারের মংডু শহরে যান রোহিঙ্গা বিদ্রোহী আবু আফনা। তিনি জানিয়েছেন, মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীই তার থাকার ব্যবস্থা এবং অস্ত্র সরবরাহ করেছিল।

সমুদ্রতীরবর্তী শহরটি নিয়ন্ত্রণে নেয়ার জন্য আরাকান আর্মির সঙ্গে লড়াই করছে সেনাবাহিনী। সেখানে অনেকক্ষেত্রে জান্তা সৈন্যদের সঙ্গে একই ঘরে থাকার ব্যবস্থা করা হয় রোহিঙ্গাদের।

আফনা বলেন, "যখন আমি জান্তার সঙ্গে থাকতাম, আমি অনুভব করতাম যে আমি সেই একই লোকদের পাশে দাঁড়িয়েছি, যারা আমাদের মা-বোনদের ধর্ষণ ও হত্যা করেছে।"

তবে মূলত বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী রাখাইন জাতি আরাকান আর্মিকে সমর্থন করে। রাখাইনদের অনেকে রোহিঙ্গাদের নির্মূলে সেনাবাহিনীকেও সমর্থন দিয়েছিল।

এই বছর রয়টার্সের আরেকটি প্রতিবেদনে জানানো হয়েছিল, মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের অবশিষ্ট বসতিগুলোর একটি পুড়িয়ে দিয়েছে আরাকান আর্মি। আরএসও এবং এরপরই আরএসও এবং সেনাবাহিনী যুদ্ধক্ষেত্রে পরস্পরকে সহায়তা করার সমঝোতায় পৌঁছায়।

আবু আফনা বলেন, "আমাদের প্রধান শত্রু মিয়ানমার সরকার নয়, রাখাইন সম্প্রদায়।"

তার তথ্যমতে, সামরিক বাহিনী রোহিঙ্গাদের অস্ত্র, প্রশিক্ষণ এবং নগদ অর্থ প্রদান করেছে। রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারের নাগরিকত্ব প্রত্যয়নের কার্ডও দিয়েছে সেনাবাহিনী। রোহিঙ্গাদের জন্য এটি একটি বড় প্রলোভন। মিয়ানমারে বহু প্রজন্ম ধরে বসবাস করা সত্ত্বেও রোহিঙ্গারা দীর্ঘদিন ধরে দেশটির নাগরিকত্ব থেকে বঞ্চিত। বাংলাদেশেও রোহিঙ্গাদের শরণার্থী শিবিরেই সীমাবদ্ধ থাকতে হয়, বাইরে আনুষ্ঠানিক কর্মসংস্থানে তাদের কোনো সুযোগ নেই।

আবু আফনা অবশ্য বলেছেন, "আমরা টাকার জন্য যাইনি। আমরা কার্ড আর জাতীয়তা চেয়েছিলাম।"

জুনে রয়টার্সের দেখা একটি দাতা সংস্থার ব্রিফিং অনুসারে, "মতাদর্শ, জাতীয়তাবাদ এবং আর্থিক প্রলোভনের সঙ্গে মিথ্যা প্রতিশ্রুতি, হুমকি এবং জবরদস্তির মাধ্যমে" প্রায় দুই হাজার মানুষকে শরণার্থী শিবির থেকে নিয়োগ করা হয়েছে। দাতা সংস্থাটির নাম প্রকাশ না করার শর্তে রয়টার্সকে এই ব্রিফিং দেখতে দেয়া হয়েছে।

জাতিসংঘের এক কর্মকর্তা এবং দুইজন রোহিঙ্গা যোদ্ধার দেয়া তথ্য অনুযায়ী যুদ্ধের জন্য নিয়ে যাওয়া অনেককে জোরপূর্বক নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তাদের মধ্যে ১৩ বছরের কম বয়সি শিশুও রয়েছে।

অর্থ সংকটে থাকা বাংলাদেশে নতুন করে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দেয়ার ব্যাপারে অনিচ্ছা বাড়ছে। এই ইস্যুটির সঙ্গে সম্পৃক্ত এক ব্যক্তি বলেছেন, বাংলাদেশের কিছু কর্মকর্তা মনে করেন, সশস্ত্র সংগ্রামই রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার একমাত্র উপায়। তার মতে, কর্মকর্তারা আরও মনে করেন যে একটি বিদ্রোহী গোষ্ঠীকে সমর্থন করলে ঢাকা আরও সুবিধাজনক অবস্থানে থাকবে।

শরণার্থী শিবির পরিদর্শ করা অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মঞ্জুর কাদের রয়টার্সকে মনে করেন, বাংলাদেশ সরকারের উচিত রোহিঙ্গাদের সশস্ত্র সংগ্রামে সমর্থন করা। তার মতে, এর ফলে মিয়ানমারের সামরিক জান্তা এবং আরাকান আর্মির ওপর বাংলাদেশের সঙ্গে আলোচনার জন্য চাপ সৃষ্টি হবে এবং রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবর্তন সহজতর হবে।

কাদের জানিয়েছেন, পূর্ববর্তী বাংলাদেশ সরকারের (আওয়ামী লীগ সরকার) শাসনামলে কিছু গোয়েন্দা কর্মকর্তা সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে সমর্থন করেছিলেন, কিন্তু সামগ্রিক নির্দেশনা না থাকায় তা সমন্বিত উপায়ে হয়নি।

আবু আফনা জানিয়েছেন, এই বছরের শুরুতে বেশ কয়েকজন রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশের কর্মকর্তারা মংডুর উদ্দেশ্যে যাওয়ার জন্য একটি জেটিতে নিয়ে গিয়ে নৌকায় তুলে দেন। আবু আফনার দাবি, তিনিও এই গ্রুপের অংশ ছিলেন। একজন কর্মকর্তা তাদেরকে বলেছিলেন, "এটি আপনার দেশ, আপনারা যান এবং সেটাকে পুনরুদ্ধার করুন।"

রয়টার্স আবু আফনার এই দাবি স্বাধীনভাবে যাচাই করতে পারেনি।

ভয়ের মধ্যে বসবাস

রাখাইন রাজ্যে ভারি অস্ত্রে সজ্জিত এবং অপেক্ষাকৃত প্রশিক্ষিত আরাকান আর্মিকে ঠেকাতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে রোহিঙ্গাদের। তবে মংডুর যুদ্ধ ছয় মাস ধরে চলছে এবং রোহিঙ্গা যোদ্ধারা বলেছেন যে অ্যামবুশসহ নানা ধরনের কৌশল অবলম্বনের ফলে বিদ্রোহীদের (আরাকান আর্মী) আক্রমণের গতিকে ধীর করে দেয়া সম্ভব হয়েছে।

সবশেষ পরিস্থিতি বিষয়ে অবগত এর বাংলাদেশি কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেছেন, "আরাকান আর্মি ভেবেছিল খুব শিগগিরই তারা একটি সুস্পষ্ট বিজয় লাভ করবে। কিন্তু রোহিঙ্গাদের অংশগ্রহণের কারণে মংডুতে তাদের ধারণা ভুল প্রমাণ হয়েছে।"

এই বছরের শুরুর দিকে রোহিঙ্গা এবং আরাকান আর্মির মধ্যে বাংলাদেশ আলোচনার মধ্যস্থতা করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মঞ্জুর কাদের এবং বিষয়টির সাথে সংশ্লিষ্ট অন্য একজনের মতে, এই আলোচনা দ্রুতই ভেস্তে যায়।

দুইজনই বলেছেন, রোহিঙ্গা বসতিতে হামলার আরাকান আর্মির কৌশল দেখে ঢাকা ক্রমবর্ধমানভাবে হতাশ হয়েছে। তাদের মতে, এই সহিংসতার ফলে রাখাইনে শরণার্থীদের প্রত্যাবাসনের প্রচেষ্টা আরো জটিল হয়ে উঠেছে।

আরাকান আর্মি রোহিঙ্গা বসতিতে আক্রমণের কথা অস্বীকার করেছে এবং বলেছে যে তারা ধর্মের ভিত্তিতে বৈষম্য ছাড়াই বেসামরিক নাগরিকদের সাহায্য করছে।

অন্যদিকে কক্সবাজারের ক্যাম্পগুলোতে আরএসও এবং আরসা প্রভাব বিস্তারের জন্য নিজেদের মধ্যে লড়াই করছে। সংঘাতের ফলে সাধারণ বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে,  মানবিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।

মানবাধিকার সংগঠন ফোর্টিফাই রাইটস এর পরিচালক জন কুইনলি বলেছেন, ২০১৭ সালে ক্যাম্প প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর এ বছর সহিংসতা সর্বোচ্চ পর্যায়ে পোঁছেছে। সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো এই বছর অন্তত ৬০ জনকে হত্যা করেছে। ফোর্টিফাইয়ের আসন্ন একটি প্রতিবেদন অনুসারে প্রতিপক্ষকে অপহরণ ও নির্যাতন এবং "হুমকি ও হয়রানির মাধ্যমে সমালোচকদের চুপ করিয়ে দেয়ার" চেষ্টা করা হচ্ছে।

বাংলাদেশে নরওয়েজিয়ান রিফিউজি কাউন্সিলের পরিচালক ওয়েন্ডি ম্যাকক্যান্স সতর্ক করে দিয়েছেন, কক্সবাজারের ক্যাম্পের জন্য আসা আন্তর্জাতিক তহবিল ১০ বছরের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে। শরণার্থীদের জীবিকার সুযোগ না দিলে অনেকে, বিশেষ করে তরুণরা, জীবিকার সুযোগ পাওয়ার জন্য বিভিন্ন সংগঠিত দলে জড়িয়ে পড়তে পারেন।

মে মাসে স্ত্রী এবং চার সন্তানকে নিয়ে মংডু থেকে পালিয়ে আসা শরিয়ত উল্লাহ নামে এক রোহিঙ্গা শরণার্থী নিয়মিত রেশনের জন্য লড়াইয়ের বর্ণনা দিয়েছেন রয়টার্সকে।

মিয়ানমারে তিনি ধান ও চিংড়ি চাষ করতেন। তিনি বলেন, সংঘাতের মধ্যে তার পরিবারের নিরাপত্তা নিয়েই সবচেয়ে উদ্বিগ্ন তিনি। তিনি বলেন, "এখানে আমাদের কিছুই নেই। আমরা আতঙ্কের মধ্যে বাস করি।"

এডিকে/এসিবি (রয়টার্স)