ব্রাসেলসে জীবন থেমে নেই
গত মাসের ২২ তারিখ একাধিক সন্ত্রাসী হামলায় কেঁপে উঠেছিল বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলস৷ বিমানবন্দর আর মেট্রো স্টেশনে হামলায় প্রাণ হারায় ৩২ ব্যক্তি৷ চলুন দেখে নেই, সেই শহরের এখনকার অবস্থা৷
উচ্চনিরাপত্তা
ব্রাসেলসের রাস্তাঘাটে পুলিশ আর সেনাসদস্যদের বাড়তি উপস্থিতি সেই নভেম্বরে প্যারিসে হামলার পর থেকেই দেখা যাচ্ছে৷ সেনাবাহিনীর এক মুখপাত্র অবশ্য জানিয়েছে, রাস্তায় নিরাপত্তা বাহিনীর এমন উপস্থিতি বেশি দিন থাকবে না৷ শহরটিতে বাড়তি নিরাপত্তা দিতে গিয়ে গত জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত খরচ হয়েছে বারো মিলিয়ন ইউরো, যেখানে ২০১৫ সালে সারা বছরে খরচ ছিল ১৭ মিলিয়ন ইউরো৷
মেট্রো আবারো চালু হচ্ছে
ব্রাসেলসের আঞ্চলিক ট্রান্সপোর্ট কর্তৃপক্ষ, এসটিআইবি-এমআইভিবি, শুক্রবার জানিয়েছে, মোলেনবেক মেট্রো স্টেশন এই সপ্তাহ থেকে চালু হচ্ছে৷ ব্রাসেলসে হামলার পর যোগাযোগ নেটওয়ার্কগুলো স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু করলেও, মেট্রো চলাচল ছিল সীমিত৷
মৌলিক সেবা
ব্রাসেলস বিমানবন্দরের বহির্গমন হলে দু’টি বোমার বিস্ফোরণে প্রাণ হারায় ১৬ ব্যক্তি৷ বিস্ফোরণে হলটিও ব্যাপক ক্ষতির শিকার হয়৷ পরবর্তীতে বিমানবন্দর বারো দিন বন্ধ থাকে৷ বর্তমানে বিশেষ ব্যবস্থায় দু’টি বড় তাবুর সাহায্যে যাত্রীদের সেবা দেয়া হচ্ছে৷ তবে জুনের মধ্যে বিমানবন্দরটি আবারো পুরোপুরি ব্যবহারের উপযোগী হবে৷
পর্যটনখাতে সমস্যা
হামলা এবং বিমানবন্দর বন্ধ থাকার কারণে ব্রাসেলসের পর্যটনখাতে কার্যত ধস নেমেছে৷ দেশটির ফরাসি ভাষার একটি পত্রিকাকে হোটেল অ্যাসোসিয়েশনের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, হোটেল ব্যবসা প্রায় ৪০ শতাংশ কমে গেছে৷ পরিস্থিতি সামাল দিতে শহর কর্তৃপক্ষ সেখানকার হোটেলগুলোর কর কিছু সময়ের জন্য মওকুফের ঘোষণা দিয়েছে৷
বেচাবিক্রি বন্ধ
ব্রাসেলসের এক স্যুভেনির শপের মালিক জানিয়েছেন, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে তার দোকানে ক্রেতার সমাগম তেমন একটা ছিল না৷ তবে তিনি আশাবাদী, কেননা পরিস্থিতি বদলাচ্ছে বলে মনে করেন তিনি৷ এদিকে, ব্রাসেলস চেম্বার অফ কমার্স জানিয়েছে, প্রায় এক লাখ চাকুরি এখন হুমকির মুখে রয়েছে৷
ভবিষ্যতের ইভেন্ট
আসন্ন গ্রীষ্মে ব্রাসেলসে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ইভেন্ট হওয়ার কথা রয়েছে৷ কিন্তু সর্বশেষ সন্ত্রাসী হামলার পর আবারও হামলার ঝুঁকি এখনো কাটেনি৷ তাই নিরাপত্তার স্বার্থে এ সব ইভেন্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পার্স বা ব্যাকপ্যাক নিয়ে এ সব ইভেন্টে প্রবেশ করা যাবে না৷ আগামী মাসের শুরুর দিকের দু’টি ইভেন্টকে ঘিরেও নিরাপত্তা বাড়ানো হচ্ছে৷
পারমাণবিক হুমকি?
নিরাপত্তা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বেলজিয়ামের সাতটি পারমাণবিক রিঅ্যাক্টরের দিকে নজর রাখছেন তারা৷ কেননা গত সপ্তাহে জানা গেছে যে, গ্রেপ্তারকৃত সন্ত্রাসী সালেহ আবদেসালাম অতীতে জার্মানির পারমাণবিক স্থাপনাগুলো সম্পর্কে খোঁজ নিয়েছিল৷ বেলজিয়ামের গণমাধ্যম জানায়, এক জিহাদি সেদেশের একটি পারমাণবিক কেন্দ্রে তিন বছর কাজ করেছে৷