ভয়াবহ খরায় ভুগছে আমাজন
মারাত্মক খরার কবলে ‘পৃথিবীর ফুসফুস’ বলে খ্যাত আমাজন রেইনফরেস্ট৷ শুকিয়ে যাচ্ছে নদীর পানি, মরছে মাছ, স্থানীয় বাসিন্দাদের জীবন বিপন্ন৷ দেখুন ছবিঘরে...
সরু গলির মতো
উপর থেকে তোলা এই ছবিটি দেখতে সরু গলির মতো৷ এটি আসলে মানাকাপুরু অঞ্চলের আমাজনের একটি নদী৷ নদীটি উপর দিয়ে এখনো নৌকা চালানো যায়, তবে পানি মারাত্মকভাবে শুকিয়ে যাওয়ার কারণেই এমন সরু আকার ধারণ করেছে নদীটি৷ এভাবে খরায় নদীর পানি শুকিয়ে যাওয়ায় ভোগান্তিতে সেই অঞ্চলের এক লাখ বাসিন্দা৷
‘পরিস্থিতি ভয়াবহ’
এই নদীগুলো মূলত খাদ্যপণ্যসহ পরিবহণের বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করতেন স্থানীয় বাসিন্দারা৷ কিন্তু খরার কারণে নদী শুকিয়ে এমন অবস্থা হয়েছে যে, পরিস্থিতিকে ভয়াবহ বলে মন্তব্য করেছেন ব্রাজিলের পরিবেশমন্ত্রী মারিনা সিলভা৷ খাদ্য ও পানির সংকট দেখা দিচ্ছে৷ সরকার অবশ্য নদীর বহমান ধারা ধরে রাখার চেষ্টা করছে৷ নদী খননের জন্য ১৪০ মিলিয়ন ইউরোর পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে কর্তৃপক্ষ৷
বিচ্ছিন্ন বাসিন্দারা
খরার এই পরিস্থিতিতে দেশটির আমাজন এবং একর অঞ্চলের অনেক বসতি মূলভূমি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে৷ সংকট মোকাবিলায় সেই অঞ্চলের বাসিন্দাদের কাছে বিমানযোগে খাদ্য ও পানি সরবরাহে এগিয়ে এসেছে বিমানবাহিনী৷ কর্তৃপক্ষের আশঙ্কা, চলতি বছরের শেষ নাগাদ পাঁচ লাখ মানুষ খরায় আক্রান্ত হবে৷
মৃত মাছের সারি
সারি সারি মৃত মাছে ঢেকে আছে পিরানহা লেকের পানি৷ পরিস্থিতি এমন যে, স্থানীয় জেলে পাওলো মোনটেরোকে (ছবিতে) মৃত মাছের উপর দিয়ে নৌকা নিয়ে যেতে হচ্ছে৷ পানির গভীরতা কমে যাওয়া আর সেই সাথে পানির তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে এভাবেই গণহারে মারা যাচ্ছে মাছ৷
বিপন্ন জীবিকা
পরিবেশের এই পরিবর্তনে শুধুই কি মাছ মারা যাচ্ছে? গণহারে মাছের এমন মৃত্যু হুমকির মুখে ফেলছে আমাজনের নদীর অববাহিকার বাসিন্দদের৷ কারণ, মাছ ধরেই জীবিকা নির্বাহ করতেন জেলেরা৷ আর মৃত মাছের এই স্তূপের কারণে দূষিত হচ্ছে খাবার পানিও৷
আরো যত হুমকি
খরা আর তাপমাত্রা বৃদ্ধিই নয়, দাবদাহও এখানকার মানুষের জীবনে অভিশাপ হয়ে আসছে৷ তীব্র গরমে বনে আগুন লেগে তা কখনো কখনো বসতবাড়িতেও ছড়িয়ে পড়ে৷ গত মাসের মাঝামাঝিতে পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমাজন রাজ্যে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছিল৷ বর্তমানে সেখানকার ১৫টি পৌরসভায় চলছে জরুরি অবস্থা৷ সিভিল ডিফেন্স অথরিটি জানায়, আরো ৪০টি পৌরসভায় সতর্কতা জারি রয়েছে৷
ভয়াবহ ভবিষ্যৎ
পরিবেশমন্ত্রী সিলভা বলেন, ‘‘প্রাকৃতিক বিপর্যয় এল নিনো এবং মানবসৃষ্ট বিপর্যয় বৈশ্বিক উষ্ণায়নের কারণে আমরা এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি৷ এই দুইয়ের ফলেই মুলত দেখা দিয়েছে অপ্রত্যাশিত খরা৷’’ তার মতে, এমন বিপর্যয় সামনের দিনগুলোতে আরো দেখা যাবে৷