মাদুরোবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল ভেনেজুয়েলা
ভেনেজুয়েলার পুনর্নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর বিরুদ্ধে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে বিরোধীদল৷ তাদের আহ্বানে রাজধানী কারাকাসের পথে নেমে এসেছে হাজারো মানুষ৷
প্রহসনের নির্বাচন!
গত ১০ জানুয়ারি দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর ক্ষমতা গ্রহণকে রীতিমতো ‘প্রহসন’ বলে আখ্যা দিচ্ছেন সরকারবিরোধীরা৷ বিরোধীরা দাবি করছেন, মাদুরো একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে তাঁর সরকারের অধীনে নির্বাচন দিয়েছিলেন, যা অবৈধ৷ তবে ধোপে টিকছে না এই অভিযোগ৷ কারণ, হাইকোট এই নির্বাচনকে বৈধতা দিয়ে শপথ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে৷
অর্থনৈতিক মন্দা
বিশ্লেষকরা বলছেন, মাদুরোবিরোধী বিক্ষোভ চাঙ্গা হওয়ার মূল কারণ অর্থনৈতিক মন্দা৷ গত দুই বছরে তেলের দাম কমে যাওয়া, রাজস্ব ঘাটতি, অতিরিক্ত মুদ্রাস্ফীতি, আমদানিকৃত নিত্য ব্যবহার্য পণ্যের ঘাটতি, জনদুর্ভোগই এই বিক্ষোভকে চাঙা করছে বলে তাঁরা মনে করেন৷
২০১৭ সালের বিক্ষোভের পুনরাবৃত্তি!
২০১৭ সালে সরকারবিরোধী রাজনীতিকরা চার মাস ধরে দেশব্যাপী বিক্ষোভ, ধর্মঘট করেছিলেন, হাজার হাজার মানুষ তাতে শামিল হয়েছিল৷ এ সময় সরকারি বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে ১২০ জনেরও বেশি বিক্ষোভকারী নিহত এবং হাজার হাজার আহত হয়েছিল৷
স্বৈরাচার পতন দিবস
২৩ তারিখ ছিল ভেনেজুয়েলার স্বৈরশাসক মারকাজ পেরেজের পতনের ৬১ তম বার্ষিকী৷ সেটি উদযাপনের পাশাপাশি সরকারবিরোধী বিক্ষোভে কারাকাসের পথে সমবেত হাজারো জনগণ৷
অন্তর্বর্তীকালীণ প্রেসিডেন্ট?
এদিকে ভেনেজুয়েলায় চলমান বিক্ষোভকে যেন উস্কে দেওয়ার দায়িত্ব নিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প৷ তিনি দেশটির বিরোধী দলীয় নেতা হুয়ান গুয়াইদোকে ভেনেজুয়েলার অন্তর্বর্তীকালীণ প্রেসিডেন্টের স্বীকৃতি দিয়েছেন৷ ২৩ তারিখের জনবিক্ষোভে হুয়ান নিজেকে দেশনেতা ঘোষণা করার পরই ট্রাম্পের পক্ষ থেকে এই স্বীকৃতি আসে৷
একদল সেনাসদস্য গ্রেফতার
প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে গ্রেফতার হয়েছেন দেশটির একদল সেনাসদস্য৷ মাদুরোকে উৎখাতের ডাক দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সোমবার ভিডিও পোস্ট করে একদল সৈন্য৷ পরে তাঁদের গ্রেফতার করা হয়৷
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মাদুরোকে প্রত্যাখান
লাতিন অ্যামেরিকার বেশ কয়েকটি দেশ আর যুক্তরাষ্ট্র ও ক্যানাডা মাদুরো সরকারকে স্বীকৃতি দেয়নি৷ যুক্তরাষ্ট্র এই সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে৷ প্যারাগুয়ে ভেনেজুয়েলার সঙ্গে রাজনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে সেখানে দূতাবাস বন্ধ করে দিয়েছে৷
বন্ধু কেবল বলিভিয়া, জর্জিয়া ও কিউবা!
মাদুরোর দ্বিতীয় মেয়াদের শপথ অনুষ্ঠান আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বয়কট করলেও কিউবা পাশে ছিল৷ বলিভিয়া ও জর্জিয়ার প্রেসিডেন্টও তাতে উপস্থিত ছিলেন৷ মাদুরো অবশ্য দাবি করেন, ৯৪টি দেশ অনুষ্ঠানে প্রতিনিধি পাঠিয়েছিল৷