মিলেটই কি গমের বিকল্প?
ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন ও যুদ্ধের কারণে হুমকির মুখে বৈশ্বিক খাদ্য নিরাপত্তা৷ বিশেষ করে গমের সিংহভাগই রপ্তানি করে এই দুই দেশ৷ এ অবস্থায় বিকল্প শস্য হিসেবে ‘মিলেট’-এর কথা ভাবা হচ্ছে৷ কী এই মিলেট?
ঝুঁকির মুখে খাদ্য নিরাপত্তা
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ কেমন করে একে অপরের সঙ্গে যুক্ত? যেমন ইউক্রেনে যুদ্ধের কারণে আজ আফগানিস্তান, ইথিওপিয়া ও সিরিয়া প্রচণ্ড হুমকির মুখে৷ কারণ তাদের খাদ্যের যোগান মূলত আমদানি নির্ভর৷ যুদ্ধের আগে বিশ্বের তিন ভাগের এক ভাগ গম, চার ভাগের এক ভাগ বার্লি ও দুই তৃতীয়াংশ সূর্যমুখী তেল রপ্তানি করত রাশিয়া ও ইউক্রেন৷
পুরানো শস্যের নতুন যুগ?
মাঠে মিলেটের প্রথম খোঁজ মেলে যিশুর জন্মের তিন হাজার বছর আগে৷ যেসব শস্য মানুষ গ্রহণ করেছিল মিলেট তার প্রাচীনতমদের একটি৷ ভারত, চীন ও আফ্রিকার কিছু অংশে লাখ লাখ কৃষক এর ফলন তুলেছেন৷ সে হিসেবে অবশ্য চাল ও গম বেশি গ্রহণযোগ্য হয় মানুষের কাছে৷ পৃথিবীর অর্ধেক মানুষ চাল ও এক তৃতীয়াংশ মানুষ গমের ওপর নির্ভরশীল৷
পুষ্টিতে অতুলনীয়
পুষ্টিগুণের কারণে মিলেটকে অনেকে ‘পুষ্টি শস্য’ বলে থাকেন৷ এতে উচ্চ মাত্রার আয়রন, ফাইবার ও কিছু ভিটামিন আছে৷ বিশ্বের প্রায় ১৩০টি দেশে এটি জন্মায়৷ তবে আফ্রিকা ও এশিয়ার মাত্র ৯ কোটি মানুষ এই শস্য খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করেন৷ মূলত গরিবের খাবার হিসেবেই ব্যবহার হয় এটি৷
প্রতিকূল আবহাওয়াতেও মিলেট
জাতিসংঘ ২০২৩ সালকে মিলেটের আন্তর্জাতিক বছর হিসেবে ঘোষণা করেছে৷ কারণ শুধু এর পুষ্টিগুণই নয়, এটি কঠিন আবহাওয়াতেও টিকে থাকতে পারে৷ মাত্র ৬০ থেকে ৯০ দিনে ফসল ঘরে তোলা যায়৷ এটি চাষাবাদে বলতে গেলে কোন গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরন হয় না৷ এতে খুব কম সার ও কীটনাশক ব্যবহার করতে হয়৷
মিলেটকে স্বাগত জানাতে পৃথিবী কি প্রস্তুত?
এশিয়া ও আফ্রিকায় এখন যতটা মিলেট আবাদ হয়, তা স্থানীয় চাহিদা মেটানোর জন্যই খুব কম, রপ্তানি তো দূরের কথা৷ তাই সারাবিশ্বে মিলেট ছড়িয়ে দিতে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে উদ্যোগ প্রয়োজন৷ প্রয়োজন কৃষকদের প্রণোদনা ও নানান সুযোগ সুবিধার ক্ষেত্র প্রস্তুত করা৷