মিশরে ভেস্টারভেলে
১০ জুলাই ২০১২
নির্বাচিত সংসদকে অবৈধ ঘোষণা করেছিল মিশরের সর্বোচ্চ আদালত৷ সামরিক বাহিনী সেই রায়কে পুরোপুরি সমর্থন জানিয়েছিল৷ প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর মহম্মদ মুরসি ডিক্রি জারি করে আবার সংসদকে বৈধতা দেবার চেষ্টা করেন৷ উল্লেখ্য, সংসদে মুরসি’র মুসলিম ব্রাদারহুড সহ ইসলামপন্থীদেরই পাল্লাভারী৷ কিন্তু আদালত তার রায়ে এখনো অটল রয়েছে৷ সামরিক শাসক পরিষদ আইনের শাসন মেনে আদালতের রায় কার্যকর করার উপর জোর দিচ্ছে৷ ফলে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বেড়ে চলেছে৷
সংসদের স্পিকার ও ব্রাদারহুড সদস্য সাদ আল কাতানি আদালতের রায় অগ্রাহ্য করে সংসদের অধিবেশন ডেকেছিলেন৷ ইসলামি দলগুলির সাংসদরা সেই ডাকে সাড়া দিয়ে এদিনের অধিবেশনে অংশ নিয়েছেন৷ তবে উদারপন্থী শিবির সংসদে যোগ না দেবার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল৷ আল কাতানি বলেন, সংসদ আদালতের রায়ের প্রতি শ্রদ্ধাশীল৷ কিন্তু সেই সঙ্গে এই সিদ্ধান্ত কীভাবে কার্যকর করা হবে, সেবিষয়েও আদালতকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে বলে সংসদ মনে করে৷
আপাতত সামরিক বাহিনীর সঙ্গে সংসদ ও প্রেসিডেন্টের একটা সমঝোতার চেষ্টা চলছে৷ যেমন সংসদ এখনই ভেঙে না দিয়ে আপাতত দুই মাসের গ্রীষ্মকালীন ছুটি ঘোষণা করা নিয়ে কথা চলছে৷ মুরসি নিজেও বর্তমান সংসদের মেয়াদ সীমিত রাখার পক্ষে৷ তাঁর পরিকল্পনা অনুযায়ী বর্তমান সংসদ দেশের নতুন সংবিধানের খসড়া প্রস্তুত করবে৷ গণভোটে সেই সংবিধান অনুমোদন পাওয়ার ৬০ দিনের মধ্যে নতুন করে সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে৷ তবে চলতি বছরের শেষের আগে নতুন সংবিধান প্রস্তুত হওয়ার সম্ভাবনা কম বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে৷ মিশরের নোবেলজয়ী রাজনীতিক মহম্মদ আল বারাদেই সামরিক বাহিনী ও ইসলামপন্থী শিবিরের উদ্দেশ্যে এক রাজনৈতিক সমাধানসূত্র খোঁজার আবেদন জানিয়েছেন৷
এমনই এক প্রেক্ষাপটে মিশর সফর করছেন জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিডো ভেস্টারভেলে৷ গণতন্ত্র যাতে বিপন্ন না হয়, তিনি সে বিষয়ে সতর্ক করে দিয়েছেন৷ তিনি মিশরের মানুষের উদ্দেশ্যে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া চালিয়ে যাবার ডাক দেন৷ ভেস্টারভেলে বলেন, মিশরে গণতন্ত্রের পথ সফল হবে, এমন কোনো গ্যারেন্টি নেই৷ তবে মিশরে গণতন্ত্রের বিকাশের ক্ষেত্রে জার্মানি তার অবদান রাখার চেষ্টা করবে৷ প্রেসিডেন্ট মুরসি’র সঙ্গে আলোচনার পর তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট ন্যায়বিচার, গণতন্ত্র ও বহুমতের পক্ষে অবস্থান নেবেন বলে তিনি ধরে নিচ্ছেন৷ তিনি সব আন্তর্জাতিক চুক্তি মেনে চলার আশ্বাসও দিয়েছেন৷ ভেস্টারভেলে চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল’এর পক্ষ থেকে মুরসি’কে জার্মানি সফরের আমন্ত্রণ জানান৷ তিনি সেই আমন্ত্রণ গ্রহণও করেছেন৷
জার্মানি অবশ্য মধ্যস্থতাকারী হিসেবে দুই শিবিরের মধ্যে আপোশের চেষ্টা করবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন তিনি৷ মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিন্টন মিশরের বর্তমান সংকটের অবসানের লক্ষ্যে সব পক্ষের মধ্যে সংলাপের আহ্বান জানিয়েছেন৷
এসবি / ডিজি (এএফপি, রয়টার্স)