মিশরের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ সম্পর্ক চায় ইজরায়েল
১১ সেপ্টেম্বর ২০১১এই অবস্থায় এবার শান্তির কথা শোনা গেল ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহুর মুখে৷ রোববার কায়রোয় ইসরায়েলি দূতাবাসের সামনের রাস্তা ছিল অন্যদিনগুলোর মতই স্বাভাবিক৷ যান চলাচলের মাঝেও সড়কের নানা জায়গায় চোখে পড়ছিলো ভাঙ্গা দেয়ালের টুকরো যা মনে করিয়ে দিচ্ছিলো শনিবারের সহিংসতার ঘটনার কথা৷ গত শনিবার বিক্ষুব্ধ জনতা ওই দূতাবাসে হামলা চালিয়ে ভেতরে ভাঙ্গচুর চালায়৷ তারা ভেঙ্গে ফেলে দূতাবাস ঘিরে রাখা নিরাপত্তা দেয়াল৷ তাদের হামলার মুখে ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূত ইটঝাক লেভানন কায়রো ছেড়ে তেল আভিভে চলে যেতে বাধ্য হন৷ এই ঘটনার পর মিশরের অন্তর্বর্তী সামরিক সরকার ইসরায়েলি দূতাবাসের নিরাপত্তা রক্ষার্থে ওই এলাকায় মোতায়েন করেছে ১৬ ট্রাক পুলিশ৷ তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে তিনটি বাস ভর্তি মিলিটারি পুলিশ৷ আরও মোতায়েন করা হয়েছে বেশ কিছু সামরিক যান৷ সব মিলিয়ে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা এখন কায়রোর ইসরায়েলী দূতাবাসের আশেপাশের এলাকাতে৷
এদিকে এই ঘটনার পেছনে জড়িতদের গ্রেফতার এবং তাদের সামরিক আইনের অধীনে বিচারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে মিশরের সরকার৷ ইতিমধ্যে কমপক্ষে ১৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে৷ শনিবারের সহিংস ঘটনায় অন্তত তিন ব্যক্তি নিহত হয়েছে এবং এক হাজার মানুষ আহত হয়েছে বলে জানা গেছে৷
এই ঘটনার পরও মিশরের সঙ্গে শান্তি চুক্তি অব্যাহত রাখার কথা জানিয়েছেন ইসরায়েলী প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু৷ তিনি আরও জানিয়েছেন, যে রাষ্ট্রদূতকে কায়রোতে ফেরত পাঠানোর জন্য তাঁরা চেষ্টা করছেন৷ এছাড়া সেখানকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েও তাঁরা যোগাযোগ করেছেন মিশর সরকারের সঙ্গে৷ নেতানিয়াহু বলেন, যারা ইসরায়েলের পতাকা ছিঁড়েছে তারা এই শান্তি চুক্তিকে অগ্রাহ্য করেছে৷ তবে মিশরে এর বাইরে আরও অনেক মানুষ রয়েছে যারা এই শান্তির প্রতি আগ্রহী৷
উল্লেখ্য, গত মাসে ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে পাঁচ মিশরীয় নিরাপত্তা কর্মী নিহত হওয়ার পর থেকে গোটা দেশে ইসরায়েল বিরোধী মনোভাব তীব্রভাবে মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে৷ ওই সময় মিশরের সরকার জানিয়েছিলো তারা ইসরায়েল থেকে রাষ্ট্রদূত প্রত্যাহার করে নেবে৷ কিন্তু পরে তা আর হয়নি৷ মিশর সরকারের এই নতজানু অবস্থান সেখানে জনরোষ তৈরি করেছে৷ অন্যদিকে সম্প্রতি ন্যাটোর অন্যতম সদস্য দেশ তুরস্কের সঙ্গেও ইসরায়েলের সম্পর্কের অবনতি হয়েছে৷ গত বছর গাজামুখী ত্রাণবাহী জাহাজে ইসরায়েলি সেনাদের হামলার পর এখনও দেশটি ক্ষমা চায়নি৷ এর প্রতিবাদে তুরস্ক ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক দ্বিতীয় স্তরে নামিয়ে এনেছে৷ তুরস্ক এবং মিশরের কারণে আঞ্চলিক রাজনীতিতে এই মুহুর্তে বেশ চাপের মুখে রয়েছে ইসরায়েলের নেতানিয়াহু সরকার৷
প্রতিবেদন: রিয়াজুল ইসলাম
সম্পাদনা: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়