1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সৌরশক্তির প্রয়োগ আরো বাড়াতে অরগ্যানিক সোলার সেল

২১ নভেম্বর ২০২৩

জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবিলা করতে বিকল্প জ্বালানির গুরুত্ব বেড়েই চলেছে৷ সৌরশক্তির প্রসার এখনো সীমিত রয়েছে৷ অরগ্যানিক সোলার সেলের মাধ্যমে জার্মানির এক কোম্পানি এ ক্ষেত্রে বিশাল পরিবর্তনের আশা করছে৷

https://p.dw.com/p/4ZH5F
বাড়ির ছাদে সৌর প্যানেল
জার্মানিতে সৌর প্যানেলের চাহিদা বেড়ে চলেছেছবি: ing Tang/NurPhoto/picture alliance

প্রায় দুই মিলিমিটার পুরু, নমনীয় ও স্থিতিশীল এক ফয়েল বিদ্যুৎ উৎপাদন করে৷ প্রচলিত সোলার প্যানেলের তুলনায় এই ফয়েল দশ গুণ হালকা৷ সব জায়গায় এই ফয়েল বসানো যায়৷ ভবনের গায়ে, ছাদে, সাইলোসে, উইন্ড টারবাইনে – এমনকি কাচ ও তাঁবুর গায়েও এমন প্যানেল কাজে লাগানো সম্ভব৷

ড্রেসডেন শহরের প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থবিদ্যার অধ্যাপক কার্ল লেও অরগ্যানিক সোলার সেলের অন্যতম সেরা গবেষক হিসেবে পরিচিত৷ তিনি অন্য কয়েকজনকে নিয়ে হেলিয়াটেক নামের এক কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন৷ সেই কারখানায় প্রতি বছর ২০ লাখ বর্গ মিটার সোলার ফয়েল উৎপাদন করা হয়৷ ড্রেসডেনের এই কোম্পানি এ ক্ষেত্রে বিশ্ববাজারে অগ্রণী ভূমিকা নিচ্ছে৷ স্যামসাং, ইয়ন এবং একাধিক লজিস্টিক্স ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান এই পণ্যের গ্রাহক৷ হেলিয়াটেক কোম্পানির সিটিও ইয়ান বিয়র্নস্টক বলেন, ‘‘আমরা এমন সব জায়গায় সোলার সেল আনতে পারছি, যেখানে এখনো পর্যন্ত সেটা সম্ভব ছিল না৷ সব ভবন নিজস্ব চাহিদা পূরণ করবে, এমন আদর্শ পরিস্থিতির বিষয়ে সবাই কথা বলছে৷ ছাদ তো আছেই, জানালা এবং ভবনের গায়েও জায়গা আছে৷ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এমন অনেক জায়গা বর্তমানে কাজে লাগানো হচ্ছে না৷ প্রচলিত সোলার সেল কাজে লাগিয়ে সেটা সম্ভবও নয়৷''

হাইড্রোকার্বন দিয়ে সোলার ফয়েল উৎপাদন করা হয়৷ কৃত্রিমভাবে উপাদানগুলি তৈরি করে এই বহনকারী ফয়েলের উপর বাষ্পিভূত করে বসানো হয়৷ প্রযুক্তির গোপনীয়তার খাতিরে স্টিমিং প্রক্রিয়ার ছবি তোলা নিষেধ৷ এমন কৌশলের দৌলতে এই কোম্পানিকে চীন ও রাশিয়ার সরবরাহকারীদের উপর নির্ভর করতে হয় না৷ ইয়ান বিয়র্নস্টক বলেন, ‘‘আমাদের কাছে তথাকথিত ‘রেয়ার আর্থ' উপাদান নেই৷ ক্যাডমিয়াম বা সীসার মতো কোনো বিষাক্ত উপাদানও নেই৷ আমাদের প্রযুক্তির জন্য যা কিছু প্রয়োজন, পৃথিবীর বুকে তার কার্যত অফুরন্ত ভাণ্ডার রয়েছে৷''

অর্গানিক সোলার সেলের ভবিষ্যৎ

সাড়ে চারশো পেটেন্টের জোরে হেলিয়াটেক নিজস্ব প্রযুক্তির সুরক্ষার ব্যবস্থা করছে৷ এখনো পর্যন্ত অরগ্যানিক ফয়েলের কার্যকারিতা আট শতাংশ, যা প্রচলিত সোলার মডিউলের ২০ শতাংশের তুলনায় অনেক কম৷ তবে কয়েক বছরের মধ্যে হেলিয়াটেক সেই ব্যবধান দূর করতে চায়৷ বিয়র্নস্টক মনে করেন, ‘‘চলতি শতাব্দীর বিশের দশকে অবশ্যই সেটা সম্ভব হবে না৷ তবে তিরিশের দশকে অবশ্যই কার্যকারিতা ও মূল্যের নিরিখে প্রতিযোগিতার বাজারে পাল্লা দিতে পারবো৷ তখনও আমাদের সুবিধাগুলি থাকবে বলে আমরা আশা রাখি৷ তখন ধাপে ধাপে প্রচলিত সোলার সেল প্রযুক্তি লোপ পাবে এবং আমাদের পণ্যই সেই জায়গা দখল করবে৷''

বাজার বিশেষজ্ঞদের মতে, অরগ্যানিক সোলার সেলের সাফল্য বেড়েই চলবে৷ ২০২০ সালে সেই মাত্রা ছিল নয় কোটি ৭০ লাখ মার্কিন ডলার৷ ২০৩১ সালের মধ্যে সেই মাত্রা ৮০ কোটি সত্তর লাখ মার্কিন ডলার ছোঁবার কথা৷

এই সাইকেলের গ্যারেজের মতো সেই ফয়েল প্রায় সব জায়াগায় কাজে লাগানো সম্ভব বলেই এমন সাফল্যের আশা করা হচ্ছে৷ সেখানে প্রতিদিন চারটি ইলেকট্রিক সাইকেল চার্জ দেওয়া সম্ভব৷ ড্রেসডেন শহরের ফলিত পদার্থবিদ্যা ইনস্টিটিউটের প্রো. কার্ল লেও বলেন, ‘‘অরগ্যানিক ফোটোভোল্টায়িক প্রযুক্তি বিভিন্ন স্তর, ছাদের ফয়েল ইত্যাদিতে সহজেই প্রয়োগ করা সম্ভব৷ ভবিষ্যতে ছাদের টালি এমন ফয়েলে মোড়া থাকবে, যার মধ্যে সোলার সেল আগেই বসানো রয়েছে৷''

আরো হালকা, আরো নমনীয় এবং অবশ্যই আরো টেকসই হবার কারণে এই প্রযুক্তি প্রচলিত সিলিকন সেলের তুলনায় অনেক বেশি সুবিধা দিচ্ছে৷ প্রো. কার্ল লেও বলেন, ‘‘উৎপাদনের সময়ে সিলিকন পরিবেশের কিছু ক্ষতি করে৷ সে কারণে উৎপাদন ও পরিবেশ দূষণের প্রশ্নে অরগ্যানিক ফোটোভোল্টায়িক নীতিগতভাবে অনেক এগিয়ে রয়েছে৷''

ফয়েলের চাহিদা বেড়েই চলেছে৷ হেলিয়াটেকের পক্ষে বর্তমানে তা সামাল দেওয়া সম্ভব নয়৷ সে কারণে এই কোম্পানি শুধু কৌশলগত কারণে বাছাই করা কিছু গ্রাহকদের সরবরাহ করছে৷ আরও ১০টি নতুন কারখানা তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে৷ তখন সাধারণ মানুষও অরগ্যানিক সোলার সেলের নাগাল পাবেন৷

ফাবিয়ান ডিটমান/এসবি

বাড়ির ছাদে বাগান ও বিদ্যুৎ উৎপাদন

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য