চাঁদপুরের নৌযানে ৭ খুন, মুমূর্ষু ১
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪সোমবার এমভি আল-বাখেরা পাঁচটি মরদেহ উদ্ধার করা হয়৷ রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়া হয় তিনজনকে৷ সেখানে মৃত্যু হয় দুজনের৷ বাকি একজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে৷
সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) বিকেল তিনটার পরে নিহত ও আহতদের উদ্ধার করে কোস্টগার্ড ও নৌ পুলিশ৷
সবার শরীরে ধারালো অস্ত্রের আঘাত ছিল৷ কারো কারো গলাও কাটা ছিল৷ নৌ পুলিশ চাঁদপুর অঞ্চলের পুলিশ সুপার (এসপি) সৈয়দ মোশফিকুর রহমান এসব তথ্য জানান৷
নিহতরা হলেন জাহাজের মাষ্টার কিবরিয়া, ইঞ্জিন চালক সালাউদ্দিন, সুকানি আমিনুল মুন্সি, গ্রিজার সজিবুল, আজিজুল ও মাজেদুল ইসলাম৷ নিহত একজনের নাম এখনো জানা যায়নি৷ আহত অবস্থায় চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিয়ে যাওয়া ব্যাক্তির নাম জুয়েল৷ আহত ও নিহত সবার বাড়ি নড়াইল জেলায় বলে জানা গেছে৷
মেসার্স বৃষ্টি এন্টারপ্রাইজের অপর জাহাজ মুগনি-৩-এর মাষ্টার বাচ্চু মিয়া ও গ্রিজার মো. মাসুদ জানান, সারবহনকারী আল বাখেরাহ রোববার (২২ ডিসেম্বর) সকাল ৮টায় চট্টগ্রাম ছেড়ে আসে৷ যাত্রা শুরুর পর কোম্পানির মালিক বাখেরাহ জাহাজের কর্মীদের সঙ্গে কথা বললেও সোমবার সকালে ফোন করে কারো সাড়া পাননি৷ দুশ্চিন্তা হওয়ায় মুগনি জাহাজ থেকে যোগাযোগের চেষ্টা করতে বলেন৷ ওই সময় মুগনি জাহাজটি ঘটনাস্থল অতিক্রম করছিল৷ বাখেরাহ জাহাজটি দেখতে পেয়ে তারা সেখানে যান৷ জাহাজে কয়েকজনের রক্তাক্ত দেহ পড়ে থাকতে দেখে তারা ৯৯৯ নাম্বারে কল দিয়ে পুলিশকে জানান৷
নৌ পুলিশ চাঁদপুর অঞ্চলের পুলিশ সুপার (এসপি) সৈয়দ মোশফিকুর রহমানের উপস্থিতিতে কোস্টগার্ড ও নৌ পুলিশ মৃত অবস্থায় ৫ জন এবং গুরুতর আহত অবস্থায় তিনজনকে উদ্ধার করে৷ আহত তিনজনকে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে পাঠালেও দুজনকে বাঁচানো যায়নি৷ চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার(আরএমও) ডা. আনিসুর রহমান বলেন, ‘‘জুয়েল নামে আহত একজনের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গলা ও শ্বাসনালি (আংশিক) কাটা ছিল৷ প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করা হয়৷ উদ্ধার করে আনা সজিবুল ও মাজেদুলকে মৃত অবস্থাতেই আনা হয়৷ তাদের মাথায় ও শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে৷’’
নৌ পুলিশ চাঁদপুর অঞ্চলের পুলিশ সুপার (এসপি) সৈয়দ মুশফিকুর রহমান বলেন, ‘‘জাহাজে ডাকাতি করতে বাঁধা দেয়ায় তাদেরকে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে৷ ঘটনাটির তদন্ত চলছে৷’’
চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন৷ সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘‘আহত একজন হাতের ইশারায় জানিয়েছেন, তারা ৮জন ছিলেন৷ ঘটনাটির কারণ এই মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না৷ ডাকাতি, কিংবা অন্য কোনো কারণে হতে পারে৷ তদন্ত করার পরে জানা যাবে৷’’