প্রজাপতি উড়তে পারে চার হাজার কিলোমিটার!
১১ মার্চ ২০১৫‘‘আপনি ঈশ্বরে বিশ্বাস না করলেও প্রজাপতিগুলোর আচরণ দেখার পর ঈশ্বরের অস্তিত্ব নিয়ে ভাবতে শুরু করবেন৷ এদের সৌন্দর্য বিস্ময়কর, ''বলেন গ্লোরিয়া টাভেরা৷ মেক্সিকোর মিচোয়াকানে মনার্ক বাটাইফ্লাই বা প্রজাপতির অভয়াশ্রমের দায়িত্বে রয়েছেন তিনি৷ বেশ কয়েক বছর ধরে এই দায়িত্বে থাকলেও প্রজাপতির আচরণ এখনও বিস্মিত করে তাঁকে৷
প্রতি বছর চার হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে কোটি কোটি প্রজাপতি এখানে আসে৷ ‘মারিপোসা মনার্কা'-র প্রধান গ্লোরিয়া টাভেরা বলেন, ‘‘তাদের মৌসুমী দেশান্তর তিন দেশে বিস্তৃত: ক্যানাডা, যুক্তরাষ্ট্র এবং মেক্সিকো৷ মনার্ক বাটারফ্লাই হচ্ছে একমাত্র পতঙ্গ, যারা অল্প সময়ের মধ্যে দীর্ঘপথ পাড়ি দিতে পারে৷ এই আচরণ অনেক প্রশ্নের জন্ম দেয়৷ তারা কীভাবে এমন এক জায়গায় আসে, যেখানে তারা আগে কখনো আসেনি? তাদের পূর্বপুরুষের পথ ধরেই তারা আসে৷ আর এটাই তাদের মাইগ্রেশনের অসাধারণ দিক৷ একই প্রজাপতি কখনো দ্বিতীয়বার আসে না৷''
ইকোসিস্টেমের উপর প্রজাপতির প্রভাব
প্রজাপতিরা অবশ্যই সুন্দর৷ কিন্তু ইকোসিস্টেমের উপর তারা কি কোনো প্রভাব ফেলছে? অবশ্যই৷ জার্মানির অর্থায়নে এবং ইন্টারন্যাশনাল ক্লাইমেট ইনিশিয়েটিভের উদ্যোগে পরিচালিত এক পাইলট প্রকল্পের মাধ্যমে প্রকৃতিতে প্রজাপতির অবদান তথ্য, উপাত্ত দিয়ে প্রমাণের চেষ্টা চলছে৷
জিআইজেড এর ফিডেরিকো স্টার্নফেল্ড এই বিষয়ে বলেন, ‘‘মনার্ক বাটারফ্লাই একটি প্রতীক৷ আর স্থানীয়দের কাছে এই জঙ্গল এক প্রাকৃতিক চিড়িয়াখানা৷ তবে এটার অন্যান্য গুরুত্বও রয়েছে৷ এখানকার গাছগুলো কার্বন ডাই অক্সাইড শুষে নিয়ে আমাদের উপকার করছে৷ এখানে নিউট্রিয়েন্ট সাইকেল সচল রয়েছে৷ তাছাড়া পানি পরিশোধন ব্যবস্থাসহ সকল প্রাকৃতিক প্রক্রিয়াই এখানকার জঙ্গল এবং পর্বতমালায় ঠিকভাবে কাজ করছে৷''
জঙ্গলের অর্থনৈতিক গুরুত্ব
তবে জঙ্গলটির অর্থনৈতিক গুরুত্ব অনেক৷ মোনার্ক বাটারফ্লাই দেখতে অনেক পর্যটক এখানে আসেন৷ তাদের কেউ কেউ মনে করেন, এটা অনেকটা রূপকথার জঙ্গল৷
মনার্ক বাটাইফ্লাইয়ের আবাসনের আশেপাশে বসবাসরত মানুষদের অর্থ আয়ের এক উৎস এই পর্যটকরা৷ ফলে এই জঙ্গলকে রক্ষা করা নিজেদের দায়িত্ব মনে করে তারা৷