1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ভারতের সঙ্গে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বাড়াতে চান শলৎস

২৮ অক্টোবর ২০২৪

জার্মানির চ্যান্সেলর শলৎসের তিনদিনের ভারত-সফর শেষ হলো। ভারতের সঙ্গে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বাড়াতে চাইলেন শলৎস।

https://p.dw.com/p/4mILW
প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে জার্মানির চ্যান্সেলর শলৎস হ্যান্ডশেক করছেন।
ভারতের দক্ষ শ্রমিকের জন্য দরজা খোলা থাকছে বলে জানিয়েছেন জার্মান চ্যান্সেলর শলৎস। ছবি: AP/picture alliance

এটা ছিল ভারত ও জার্মানি দুই দেশের মধ্যে সপ্তম আন্তঃসরকার আলোচনা। তাই শলৎস একা আসেননি। তার সঙ্গে ছিলেন অর্থ ও পরিবেশ মন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী, শ্রম ও সামাজ বিষয়ক মন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী, একাধিক সংসদীয় কমিটির প্রধান এবং উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তারা।  নরেন্দ্র মোদী ছাড়াও ভারতের পক্ষে ছিলেন প্রতিরক্ষা, পররাষ্ট্র, শিল্প ও বাণিজ্য, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, স্কিল ডেভলাপমেন্ট মন্ত্রী।

আলোচনার পর দুই দেশের মধ্যে ২৭টি চুক্তি সই হয়েছে। সেগুলি মূলত নবায়নযোগ্য বা পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি, গবেষণা ও ক্রিটিক্যাল টেকনোলজির ক্ষেত্রে।

শলৎস জানিয়েছেন, তিনি ভারতের সঙ্গে সামরিক, বিশেষ করে অস্ত্র ক্ষেত্রে সহযোগিতা আরো বাড়াতে চান। ২০ বছর আগে দুই দেশের মধ্যে স্ট্র্যাটেজিক পার্টনারশিপ চুক্তি সই হয়েছিল। সেই সম্পর্ককে আরো বাড়িয়ে নিয়ে যেতে চেয়েছেন শলৎস ও মোদী

শলৎস যা বললেন

এশিয়া-প্যাসিফিক কনফারেন্স অফ জার্মান বিজনেস ২০২৪-এ শলৎস বলেছেন, ''ভারত থেকে আরো দক্ষ শ্রমিক চায় জার্মানি। জার্মানির শ্রম বাজারে প্রতিভাকে স্বাগত জানানো হয়। দক্ষ শ্রমিকদের জন্য জার্মানির দরজা খোলা আছে। অনিয়মিত অভাবাসনের উপর জার্মানি কড়াকড়ি করলেও দক্ষ শ্রমিকদের জন্য তা করা হচ্ছে না।''

মোদীর সঙ্গে আলোচনার পর শলৎস বলেছেন, মেডিসিন, নার্সিং ও তথ্যপ্রযুক্তির ক্ষেত্রে জার্মানি জরুরি ভিত্তিতে দক্ষ শ্রমিক চায়।

শলৎস বলেছেন, ''ভারত গ্রিন হাইড্রোজেনের ক্ষেত্রে গ্লোবাল হাবে পরিণত হচ্ছে। আমরা তার অংশীদর হতে চাই। এই সফরে ভারত ও জার্মানির মধ্যে যে চুক্তি ও সমঝোতা হয়েছে, তার অনেকগুলিই গ্রিন এনার্জি নিয়ে।''

জার্মানির চ্যান্সেলর জানিয়েছেন, ইইউ-র মধ্যে জার্মানিই ভারতের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার। এই সম্পর্ক তিনি আরো বাড়িয়ে নিয়ে যেতে চান। তিনি চান, ভারতের সঙ্গে ইইউ-র উচ্চাকাঙ্খী বাণিজ্য চুক্তি হোক। এর ফলে সকলেই উপকৃত হবেন।

দিললির হায়দরাবাদ হাউসে শলৎস ও মোদী কথা বলতে বলতে হেঁটে যাচ্ছেন।
ভারতের সঙ্গে সামরিক সহযোগিতা বাড়াতে চান শলৎস। ছবি: Sajjad Hussain/AFP/Getty Images

শলৎস বলেছেন, দক্ষিণ এশিয়ার স্থায়িত্বের প্রশ্নে ভারতের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। জার্মানির চ্যান্সেলর বলেছেন, ভারত যেভাবে ইউক্রেনের সমস্যা সমাধানে উদ্যোগী হয়েছে, তাতে তিনি খুশি। তবে ইউক্রেনের স্বাধীনতা ও অখণ্ডতা বজায় রেখে সমাধান করতে হবে বলে তিনি মনে করেন।

শলৎস বলেছেন, মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা কমানো দরকার। এর জন্য যুদ্ধবিরতি ও বন্দিমুক্তি খুবই জরুরি। মধ্যপ্রাচ্য নিয়ে আলোচনা খুবই জরুরি বলে শলৎস জানিয়েছেন।

মোদীর বক্তব্য

প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেছেন, ''জার্মানির সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের মধ্যে স্পষ্টতা আছে। দুই দেশের ভবিষ্যৎ খুবই উজ্জ্বল।''

মোদীর মতে, ''ইউক্রেন এবং মধ্যপ্রাচ্য নিয়ে কূটনীতির মাধ্যমে সমস্যার সমাধান হওয়াটা জরুরি। যুদ্ধক্ষেত্র কোনো সমস্যা সমাধানের জায়গা হতে পারে না।''

মোদী বলেছেন, ''বিংশ শতাব্দীতে যে গ্লোবাল ফোরাম তৈরি হয়েছিল, তা একুশ শতকের সমস্যার সমাধান করতে পারছে না। সেজন্য জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সংস্কার দরকার। কয়েক দশক ধরে ভারত বলথে, ১৪০ কোটির দেশকে নিরাপত্তা পরিষদে স্থায়ী সদস্য করা উচিত।''

মোদী ইন্দো-প্যাসিফিকের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেোগ প্রকাশ করে বলেন, এখানে চীন তার প্রভাব বাড়াতে চাইছে।

প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, জার্মানির সঙ্গে ভারতের ঘনিষ্ঠ সামরিক সম্পর্ক আছে। এই ক্ষেত্রে দুই দেশের সহয়োগিতার যে শক্তি আছে, তার পুরো সদ্ব্যবহার করতে হবে।

প্রতিরক্ষা সহযোগিতা

শলৎস ও মোদী দুজনেই প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে একসঙ্গে কাজ করার বিষয়ে সম্মত হয়েছেন। ঠিক হয়েছে, দুই দেশের প্রতিরক্ষা শিল্পের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানো হবে।

যৌথ ঘোষণাপত্রে বলা হয়েছে. প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে প্রযুক্তি, উৎপাদন, এবং প্রতিরক্ষা সামগ্রী একসঙ্গে উৎপাদন করা হবে।

জার্মানির অর্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, এই বছরের প্রথম ছয় মাসে জার্মানির কাছ থেকে যে সব দেশ অস্ত্র পেয়েছে, তার মধ্যে ভারত তিন নম্বরে আছে। এর আগে জার্মানি ভারতকে ছোট অস্ত্র ও স্পেয়ার পার্টস বিক্রির ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়। দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক বাড়তে থাকায় জার্মানি এই সিদ্ধান্ত নেয়। না হলে তারা ন্যাটোর বাইরের কোনো দেশকে ছোট অস্ত্র বিক্রি করে না।

জার্মানি থেকে ছয়টি সাবমেরিন কেনা নিয়ে ভারতের আলোচনা চলছে। তাছাড়া এয়ারবাস তাদের এ৪০০এম বিক্রি করতে চায়। এনিয়েও কথাবার্তা চলছে।

জিএইচ/এসজি(পিটিআই, এএনআই, এপি, রয়টার্স)