1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মঞ্চ নাটকের সমঝোতা!

১০ সেপ্টেম্বর ২০১৮

মুক্তিযুদ্ধের পর বাংলাদেশে মঞ্চ নাটক একটি আন্দোলন হিসেবে শুরু হয়৷ কিন্তু নব্বইয়ের দশকে তা প্যাকেজ নাটকের কাছে কোণঠাসা হয়ে পড়ে৷ তবে মঞ্চ নাটক আবার ফিরে আসছে তার গৌরব নিয়ে৷ এই ফিরে আসায় আছে এক ধরনের সমঝোতা৷

https://p.dw.com/p/34Wq1
ছবি: Nagorik Natya Sampraday

জনি হক একজন তরুন সাংবাদিক৷ মঞ্চ নাটক দেখে বড় হয়েছেন৷ কিন্তু এখন আর তেমন দেখেন না৷ ডয়চে ভেলে'র সঙ্গে মঞ্চ নাটক নিয়ে কথা হলে তিনি বলেন, ‘‘মঞ্চে আমি প্রথম নাটক দেখেছিলাম প্রাচ্যনাটের ‘সার্কাস সার্কাস'৷ মহিলা সমিতি মিলনায়তনের সেই স্মৃতি এখনো মনে আছে৷ সিনেমা, গান কিংবা সাংস্কৃতিক অঙ্গনের অন্য যে-কোনো শাখার চেয়ে আমার কাছে মঞ্চনাটক ছিল আগ্রহের বিষয়৷ কিন্তু নানা কারণে সেই আগ্রহটা আর ধরে রাখতে পারিনি৷''

কেন আগ্রহ কমে গেছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘সময়ের অভাবে আর জ্যাম ঠেলে বেশিরভাগ মানুষই আগের মতো স্পৃহা পান না৷ আমাদের নাটক দেখা বা নাটক করার জায়গাও কিন্তু কম৷ বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিই বলা যায় সবেধন নীলমণি৷ এছাড়া মহিলা সমিতি মঞ্চে টুকটাক নাটক হয়৷ মহানগর নাট্যমঞ্চ আর জহির রায়হান সাংস্কৃতিক কেন্দ্র গড়ে তোলা হলেও সাফল্য এলো না৷ জ্যামের কারণে সেগুনবাগিচার আশেপাশের মানুষজনই এখন শিল্পকলার নিয়মিত দর্শক৷''

মঞ্চ নাটক নিয়ে তাঁর পর্যবেক্ষণও এড়ানো সম্ভব নয়৷ তিনি বলেন, ‘‘মঞ্চনাটকে আর্থিক সমস্যার কথা শুনছি শুরু থেকেই৷ এ কারণে মঞ্চে নজর কাড়লেই টিভি নাটকে ব্যস্ত হয়ে পড়েন নাট্যশিল্পীরা, নয়তো তাঁরা শুটিং ফেলে মঞ্চে কাজ করেন না৷ কারণ, শো করার খরচই টিকিট বিক্রি করে আসে না৷ নিজেদের গাঁটের পয়সা খরচ করে শো করতে হয়৷ সেই হিসেবে বোঝা যায়, মঞ্চনাটক এখনো আবেগ, ফ্যাশন ও ভালোবাসার তাগিদ থেকে হচ্ছে৷ কিন্তু টাকা ছাড়া ভালোবাসা কতদিন টেকে! রেপারটরি থিয়েটার ও পেশাদারিত্বের প্রসঙ্গ এসেছে এভাবে৷''

তিনি বলেন, ‘‘ক্রিকেট কিংবা ফুটবলে বাংলাদেশ জিতলেই লাখ লাখ টাকা দেওয়া হয়৷ কিন্তু একটা নাট্যদল আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেশের শিল্প-সংস্কৃতিকে তুলে ধরলে কিন্তু সরকারি-বেসরকারিভাবে স্বীকৃতি পায় না৷ বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোকেও আমাদের মঞ্চনাটকে পৃষ্ঠপোষকতা দিতে দেখিনি খুব একটা৷''

মাসুম রেজা একজন খ্যাতিমান নাট্যকার৷ মঞ্চ নাটকের দ্বিতীয় প্রজন্মের পথিকৃতদের একজন৷ তাঁর গ্রুপের নাম ‘দেশ নাটক'৷ তিনি মনে করেন, ‘‘মঞ্চ নাটকের সুসময় আবার ফিরে আসছে৷ নানা সীমবদ্ধতার পরও যাঁরা মঞ্চ ছেড়েছিলেন, তাঁরা আবার মঞ্চে ফিরছেন৷ আর এজন্য এক ধরনের সমঝোতার প্রয়োজন হয়েছে৷''

তিনি ডয়চে ভেলেকে বলেন. ‘‘জীবিকার জন্য টেলিভিশন নাটক আজ প্রাণের জন্য, জানার জন্য মঞ্চ নাটক৷ এই দুইয়ের সমন্বয় ঘটানো গেছে৷ এটা এক ধরনের সমঝোতা৷'' তাঁর কথা, ‘‘আগে থিয়েটারের রিহার্সাল শুরু সন্ধ্যা ৬ টায় বলতে সন্ধ্য ৬টাই বোঝাতো৷ এক মিনিটও এদিক-ওদিক করার সুযোগ ছিল না৷ এখন আমরা বলি, তোমার সপ্তাহে চারদিন রুটি রুজির জন্য ব্যস্ত থাকতে হয় ঠিক আছে, বাকি তিন দিন মঞ্চে কাজ কর৷ সময়ও সুবিধা- অসুবিধার দিকে চিন্তা করে নির্ধারণ করা হয়৷''

‘থিয়েটার: স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশ' শিরোনামে এক লেখায় তিনি বলেছেন,‘‘১৯৭২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তঃহল নাট্য প্রতিযোগিতার ভেতর দিয়ে স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশের মঞ্চনাটকের ভ্রূণের সঞ্চার হয়৷ সে নাট্য প্রতিযোগিতার একটি বড় শর্ত ছিল, নাটকের পান্ডুলিপি হতে হবে দলের নিজস্ব নাট্যকারের লেখা৷ বিশেষ এই শর্তই সেদিন বদলে দিয়েছিল প্রতিযোগিতার চেহারা৷ আমরা পেয়েছিলাম বেশ কয়েকজন নাট্যকার, নাট্যনির্দেশক ও অভিনেতা৷ সেলিম আল দীন, আল মনসুর, হাবিবুল হাসান, নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু, ম. হামিদ, রাইসুল ইসলাম আসাদ, পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য৷ বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রিক এ নাট্যচর্চা মুদ্রার এক পিঠ৷

মুদ্রার অন্য পিঠে ছিলেন নাটকে নিবেদিতপ্রাণ আরো অনেকে৷ স্বাধীনতার অনেক আগে থেকেই যাঁরা নাটকের সঙ্গে নানাভাবে যুক্ত ছিলেন৷ বাংলার মঞ্চনাটকের জন্য একটা সুগম পথ যাঁরা রচনা করে চলেছিলেন৷ আব্দুল্লাহ আল মামুন, মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, মামুনুর রশীদ, আলী যাকের, রামেন্দু মজুমদার, ফেরদৌসী মজুমদার, আতাউর রহমান, মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, শিমুল ইউসুফ, নাজমা আনোয়ার, সারা যাকের তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য৷ স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে তাঁদের হাতেই গড়ে উঠল গ্রুপ থিয়েটারের চর্চা৷''

মঞ্চ নাটকের বিভিন্ন সময়ে যাঁরা যুক্ত ছিলেন তাঁদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ১৯৭২ সালেই বাংলাদেশে দর্শনীর বিনিময়ে নাটক শুরু হয় বেইলি রোডের মহিলা সমিতি মঞ্চকে কেন্দ্র করে৷ যাঁরা মঞ্চ নাটক শুরু করেন, তাঁদের প্রায় সবাই মুক্তিযুদ্ধ করেছেন৷ তাঁরা মঞ্চ নাটককে দেখেন নতুন আরেকটি সংগ্রাম হিসেবে, সমাজ বদলের হাতিয়ার হিসেবে৷ তাই মঞ্চ নাটক বা থিয়েটার একটি আন্দোলনে রূপ নেয়৷ সেই সময়ে থিয়েটার, আরণ্যক, নাগরিক, নাট্যচক্র, ঢাকা থিয়েটার-এর মতো নাটকের গ্রুপ গড়ে ওঠে৷ আর বেশিরভাগ ‘নাট্যযোদ্ধা' মুক্তিযোদ্ধা হওয়ায় মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ নাটকের  প্রধান উপজীব্যে পরিণত হয়৷ সৈয়দ শামসুল হকের ‘পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়', আব্দুল্লাহ আল মামুনের ‘আয়নায় বন্ধুর মুখ', মামুনুর রশীদের ‘জয়জয়ন্তী' ,ড. এনামুল হকের ‘সেইসব দিনগুলো', এসএম সোলাইমান আহমেদের (অনুবাদ) ‘কোর্ট মার্শাল', নাসিরউদ্দিন ইউসুফের ‘একাত্তরের পালা', মমতাজউদ্দিন আহমেদের ‘সাতঘাটের কানাকড়ি', ‘কী চাহো শঙ্খচিল', ‘স্বাধীনতা আমার স্বাধীনতা' ,মান্নান হীরার ‘একাত্তরের ক্ষুদিরাম'ও উল্লেখযোগ্য৷ 

মুক্তিযুদ্ধ ছাড়া ভিন্ন বিষয় নিয়ে আরো অনেক নাটক রচিত হয়৷ সেনাপতি, সুবচন নির্বাসনে, অরক্ষিত মতিঝিল, চোর চোর, ওরা কদমআলী, ইবলিশ, ওরা আছে বলেই, সমতট, সাতঘাটের কানাকড়ি, নূরলদীনের সারা জীবন, হাত হদাই, কিত্তনখোলা, চাকা, যৈবতি কন্যার মন, ময়ূর সিংহাসন, ফণিমনসা, নিত্যপুরাণ, আরজ চরিতামৃত, নানকার পালা, সাত পুরুষের ঋণ, খনা'র কথা উল্লেখ না করলেও স্বর্ণোজ্জল অতীতের অনেকটা অসম্পূর্ণ থেকে যায়৷

 আশির দশকে এরশাদের স্বৈর শাসনের বিরোধিতা করতে গিয়ে গ্রুপ থিয়েটারগুলো মঞ্চ নাটকের মাধ্যমে প্রতিবাদের ভাষা তৈরি করে৷ আর তখন থেকেই পথ নাটকের ধারা তৈরি হয়৷ সুনির্দিষ্ট কোনো মঞ্চ নয়, পথে পথে প্রদর্শিত হয় নাটক৷ রাস্তাই হয়ে ওঠে মঞ্চ৷ ওই সময়ের অনেক নট্যাকর্মীকে গ্রেপ্তারও করা হয়৷  ‘দেশ নাটক' তপন দাশ রচিত খেলা নাটকের প্রদর্শনী করতে গিয়ে পুলিশি হয়রানির শিকার হয়েছিল৷ আসে অভিনয় নিয়ন্ত্রণ আইন৷ এ প্রসঙ্গে মাসুম রেজা বলেন, ‘‘স্বৈরাচারবিরোধী পথনাটক রচনায়  তখন আসেন মান্নান হীরা, আব্দুল্লাহ হেল মাহমুদ, তপন দাশ, শংকর সাওজাল আব্দুল হালিম আজিজসহ আরো অনেকে৷ আমার লেখা কাকলাস ও জীবন্ত পোস্টার সে সময় দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রদর্শিত হয়েছে৷''

তিনি বলেন, ‘‘১৯৮২ সালের দিকে গঠন করা হয় বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশন৷ তখন সারা বাংলাদেশে থিয়েটারের চর্চা ছড়িয়ে পড়ে৷ এরমধ্যে  জামিল ভাই, কামাল উদ্দিন নিলু, তারেক আনাম খান, সদরুল পাশাসহ আরো অনেকে ভারত থেকে নাটক বিষয়ে পড়াশুনা করে আসেন৷ তাঁরা এসে মঞ্চ নাটকে আরো এক ধরনের পরিবর্তন আনেন৷ তাঁরা মডার্ন সেট, লাইট ও কস্টিউমে বড় ধরনের পরিবর্তন নিয়ে এলেন৷ আগে এগুলোর প্রতি আলাদাভাবে নাজর দেয়া হতো না৷''  

‘এখন প্রচারটাও ভালো করা যায়’: মাসুম

বাংলাদেশে ১৯৯৪ সালে বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্যাকেজ নাটক শুরু হয়৷ আর ১৯৯৬ সালে প্যাকেজ নাটকের জোয়ার শুরু হয়৷ বাইরে তৈরি করা নাটক বাংলাদেশ টেলিভিশনে বিক্রির জন্য অনেক প্রোডাকশন হাউজ গড়ে ওঠে৷ আর প্যাকেজ নাটকে ভালো টাকাও পাওয়া যায়৷ মঞ্চ নাটকে যেখানে অর্থের যোগ নেই বললেই চলে, সেখানে প্যাকেজ নাটকে অর্থযোগের বিষয়টি নাটকে নতুন এক পরিস্থিতি তৈরি করে৷ আরো পরে আসে বেসরকারি টেলিভিশন, যাদের সম্প্রচার সময়ের একটি অংশ জুড়ে থাকে নাটক৷ আর টেলিভিশন নাটকে ধারাবাহিক নাটক ছাড়াও নানা ফর্মের নাটক আসতে শুরু করে, যার মধ্যে অন্যতম হলো টেলিফিল্ম৷

আরো অনেক কারণের সঙ্গে এই কারণগুলো মঞ্চ নাটককে ধাক্কা দেয়৷ মঞ্চের অনেকেই জীবিকার তাগিদে টেলিভিশন নাটকের দিকে ঝুঁকে পড়েন৷ মঞ্চ ছেড়ে নিয়মিত হন টিভি নাটকে৷ মাসুম রেজা বলেন, ‘‘শুধু নাট্যশিল্পী নয়, যাঁরা নির্দেশনা দিতেন, যাঁরা নাটক লিখতেন, তাঁরা টেলিভিশন নাটককেন্দ্রিক হয়ে পড়েন৷ ফলে নতুন নটাকেরও সংকট হয় মঞ্চে৷ এর সঙ্গে আরো কিছু কারণ আছে৷ তারমধ্যে আছে যানজট৷ যানজটের কারণে রিহার্সালে ঠিকম সময় অনেকে আসতে পারেন না৷ আবার উত্তরা থেকে মহিলা সমিতি বা শিল্প কলায় দু'ঘণ্টার নাটক দেখতে হলে রাস্তায় ব্যয় হয় চারঘণ্টা৷''  

কিন্তু এই পরিস্থিতির উন্নতি হওয়া শুরু করেছে৷ যাঁরা মঞ্চ ছেড়ে গিয়েছিলেন, তাঁরা আবার মঞ্চে ফিরছেন৷ মঞ্চে নতুন নাটক আসছে৷ তরুণরাও মঞ্চ নাটকে আগ্রহ দেখাচ্ছেন৷ দর্শকরা ফিরতে শুরু করেছেন৷ এটা কিভাবে সম্ভব হলো? মাসুম বলেন, ‘‘বেশ কিছু দল নাটকের রিহার্সাল থেকে শুরু করে সব কিছুর মধ্যেই অ্যাডজাস্টমেন্ট এনেছেন৷ যেমন ধরুন, আমার নাটকের গ্রুপের ৮-১০ জন আছেন যারা টেলিভিশন নাটকে ভীষণভাবে ব্যস্ত৷ এখন আমি যেটা করি, ওদের সঙ্গে একটা টাইম ম্যানেজমেন্ট করি, ওরা যাতে জীবিকার জন্য টেলিভিশন নাটক করতে পারে, আবার সময় বের করে মঞ্চ নাটকও করতে পারে, রিহার্সালে আসতে পারে৷ আমার নৃত্যপুরাণ নাটকে চারজন দ্রৌপদী  বিভিন্ন সময়ে মঞ্চ ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন৷ কিন্তু তাঁরা অনেক দিন পর আবার ফিরে এসেছেন৷ এ কারণেই তাঁদের দিয়ে আমি নাটক করছি বহুবর্ণে এক দ্রৌপদী৷ তাই আশার আলো দেখছি৷ দর্শকদেরও সাড়া পাচ্ছি৷ আমার নতুন এক নাটকে হলভর্তি দর্শক পাচ্ছি৷ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ নানা কারণে এখন প্রচারটাও ভালো করা যায়৷''

‘মঞ্চ নাটককে পেশা হিসেবে নিয়ে টিকে থাকা কঠিন’: বন্যা

বন্যা মির্জা একজন খ্যাতিমান নাট্য শিল্পী৷ তাঁকে সবাই টেলিভিশন নাটকের জন্যই বেশি চেনেন৷ কিন্তু তিনি শুরু করেছিলেন মঞ্চ নাটক দিয়ে ১৯৯২ সালে৷ ১৯৯৭ সালে তিনি টেলিভিশন নাটকে অভিনয় শুরু করেন৷ কিন্তু মঞ্চ ছাড়েননি কখনো৷ তাঁর কথায়, ‘‘মঞ্চ হলো আমার প্রাণ৷ এখানেই আমি নাটক শিখেছি৷ আর টেলিভিশন নাটকে যাঁরা এসেছেন, তাঁদের বড় অংশই মঞ্চ থেকে গিয়েছেন৷''

তিনি বলেন, ‘‘এখন বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে নাটক একটি বিষয় হিসেবে পড়ানো হয়৷ কিন্তু শুরুতে সেটা ছিল না৷ তাই তখন থিয়েটার ছিল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মতো৷ কিভাবে অভিনয় করতে হয়, কিভাবে হাঁটতে হয়, অঙ্গভঙ্গি সব কিছু শেখা যেতো সেখানে৷''

বন্যা আরো বলেন, ‘‘অভিনয় করতে হলে থিয়েটার করতেই হবে সেটা বলা ঠিক হবে না৷ থিয়েটারের লোকজন যেমন টেলিভিশন নাটকে কাজ করেন, থিয়েটার না করেও করেন৷ কিন্তু মঞ্চ নাটককে পেশা হিসেবে নিয়ে টিকে থাকা কঠিন৷ এখনো টিকেটের দাম ১০০-২০০ টাকার বেশি নয়৷ ঢাকায় মহিলা সমিতি মঞ্চ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল, এখন আবার চালু হয়েছে৷ আর আছে শিল্পকলা একাডেমি৷ এর বাইরে ঢাকায় কোনো মঞ্চ নেই৷ ৬৪ জেলায় শিল্পকলা একাডেমির মঞ্চ আছে৷ সেখানে নাটক হয়৷ তবে দরকার পৃষ্ঠপোষকতা৷''

তিনি মনে করেন, ‘‘বাংলাদেশের থিয়েটার একটা চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে৷ মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে থিয়েটার আন্দোলন ৯০-এর দশকে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে আরো গতি পায়৷ এখন সময় এসেছে ভিন্ন ধরনের নাটকের৷ কারণ, পরিস্থিতি পালটে গেছে৷''

জনি হকের কথা দিয়ে শুরু হয়েছিল এ প্রতিবেদন৷ শেষেও ফিরে যাওয়া যাক তাঁর কথায়৷ মঞ্চ নাটকের জন্য বিকল্প চিন্তার কথা বলেন তিনি৷ তিনি বলেন, ‘‘ঢাকা কিংবা জেলা পর্যায়ের নাট্যদলগুলো ইউটিউব কনটেন্ট নিয়ে ভাবতে পারে৷ নিজেদের মহড়ার ক্লিপিং, নাট্য প্রদর্শনীর উল্লেখযোগ্য অংশ কিংবা পুরো নাটক ইউটিউবে দেখিয়ে অর্থ উপার্জন করা সম্ভব৷ টিভি নাটক কিন্তু দর্শকরা এখন ইউটিউবেই বেশি দেখেন৷ মঞ্চনাটকেরও এক্ষেত্রে সম্ভাবনা দেখি আমি৷''

 

মঞ্চ নাটক নিয়ে আপনার কোনো মন্তব্য থাকলে লিখুন নীচের ঘরে৷ 

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান