মহারাষ্ট্র থেকে গ্রেপ্তার ১৭ জন বাংলাদেশি নাগরিক
২৬ ডিসেম্বর ২০২৪মহারাষ্ট্রের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বুধবার ১৭ জন বাংলাদেশি নাগরিককে পুলিশের বিশেষ স্কোয়াড গ্রেপ্তার করেছে বলে মুম্বই পুলিশ জানিয়েছে। এর মধ্যে ১৪ জন পুরুষ এবং তিনজন নারী আছেন। তাদের থানায় নিয়ে গিয়ে জেরা করা হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে।
মুম্বই পুলিশ জানিয়েছে, অ্যান্টি টেররিস্ট স্কোয়াড (এটিএস) এই অভিযান চালিয়েছে। মুম্বই, নভি মুম্বই, থানে এবং নাসিকে একযোগে অভিযান চালানো হয়। একই দিনে এই বিভিন্ন জায়গা থেকে ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। কারো কাছেই ভারতে থাকার বৈধ কাগজ পাওয়া যায়নি।
ধৃতদের নাম এবং পরিচয় এখনো পর্যন্ত গোপন রেখেছে পুলিশ। তবে জানানো হয়েছে, মহারাষ্ট্রে তারা পরিচয় গোপন করে থাকছিলেন। অন্য নাম ব্যবহার করে তারা থাকছিলেন এদেশে। কোন পথ দিয়ে তারা ভারতে প্রবেশ করেছিলেন, কীভাবে তারা মহারাষ্ট্রে এসে পৌঁছালেন, কাদের সাহায্যে তারা ভারতে ঢুকলেন এই সব বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে।
বস্তুত, চলতি সপ্তাহেই দিল্লিতে পুলিশের বিশেষ বাহিনী একটি অভিযান চালিয়েছিল। দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, একটি দালালচক্র কাজ করছে এখানে। যারা অবৈধভাবে প্রবেশ করা বাংলাদেশি নাগরিকদের ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে দিচ্ছে। অভিযান চালিয়ে বেশ কিছু ব্যক্তিকে পুলিশ গ্রেপ্তারও করে। তবে এই চক্র দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে আছে বলে মনে করা হচ্ছে। তারই জেরে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে গত কয়েকসপ্তাহ ধরে পুলিশ বিশেষ অভিযান চালাচ্ছে। স্থানীয় পুলিশের সাহায্য নিয়ে গোয়েন্দারা অভিযান চালাচ্ছেন। মহারাষ্ট্রের অভিযানও তেমনই এক ঘটনা।
মহারাষ্ট্র পুলিশ জানিয়েছে, যে ১৭ জনকে বুধবার গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাদের কাছ থেকে ভুয়া আধার কার্ড এবং প্যান কার্ড পাওয়া গেছে। কারা তাদের এই ভুয়া পরিচয়পত্র তৈরি করে দিল, তার খোঁজ চালানো হচ্ছে। পুলিশ এখনো পর্যন্ত ওই ধৃতদের বিরুদ্ধে ১৯৪৬ সালের নাগরিক আইনের ভিত্তিতে মামলা করেছে। এছাড়াও পাসপোর্ট আইনেও তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সাবেক পুলিশ কর্তা সন্ধি মুখোপাধ্যায় ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, ''ভারতে অবৈধ অনুপ্রবেশের বিষয়টি নতুন নয়। এর আগেও এমন বহু ঘটনা ঘটেছে। বিশেষত, সীমান্ত সংলগ্ন রাজ্যগুলিতে বরাবরই অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে অনুপ্রবেশ বেড়েছে।'' তার বক্তব্য, বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতির কারণেই অনুপ্রবেশ বেড়েছে বলে গোয়েন্দারা মনে করছেন। ফলে বিভিন্ন রাজ্যে বিশেষ দল গঠন করে অভিযান চালানো হচ্ছে। যারা ধরা পড়ছেন, তাদের অনেকেই সাম্প্রতিক সময়ে ভারতে ঢুকেছেন বলে জানা যাচ্ছে।
তবে সন্ধি মনে করেন, যারা ধরা পড়ছেন, তারা সকলেই অসৎ উদ্দেশ্যে ভারতে এসেছেন এমন মনে করার কারণ নেই। বহু সাধারণ মানুষও এসেছেন। সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত এমন ব্যক্তিও যেমন ধরা পড়েছে, তেমন সাধারণ মানুষও ধরা পড়েছে। দুইটি বিষয়কে একভাবে দেখলে ভুল হবে।
এসজি/জিএইচ (পিটিআই)