1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ঢাকার বার্তার প্রাপ্তি স্বীকার, তবে মন্তব্য করছে না ভারত

২৪ ডিসেম্বর ২০২৪

শেখ হাসিনাকে ফেরত চেয়ে দিল্লিকে বার্তা পাঠিয়েছিল ঢাকা। ভারত নোট ভার্বাল পেয়েছে বলে জানিয়েছে। এরই মধ্যে অ্যামেরিকা যাচ্ছেন জয়শংকর।

https://p.dw.com/p/4oXPS
বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
শেখ হাসিনাছবি: Munir uz Zaman/AFP/Getty Images

সোমবার সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফেরত চেয়ে ভারতকে একটি 'নোট ভার্বাল' পাঠিয়েছিল বাংলাদেশ। অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হাসান একথা জানিয়েছিলেন। হাসিনার বিচারের জন্যই তাকে ফেরত চাওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছিলেন তিনি।

বাংলাদেশ সংবাদমাধ্যমকে একথা জানানোর পর ভারত ঢাকার বার্তা পাওয়ার কথা স্বীকার করেছে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল জানান, ''শেখ হাসিনাকে ফেরত চেয়ে বাংলাদেশের বার্তা আমরা পেয়েছি বাংলাদেশ হাই কমিশনের মাধ্যমে। কিন্তু এবিষয়ে এই মুহূর্তে আমরা কোনো মন্তব্য করতে চাই না।''

ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বক্তব্য, এবিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে, তা নিয়ে সর্বস্তরে আলোচনা চলছে। বস্তুত, এরই মধ্যে ছয়দিনের অ্যামেরিকা সফরে যাচ্ছেন ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শংকর। দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে হাসিনার বিষয়টিও উঠতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। যদিও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তরফে এবিষয়েও কোনো মন্তব্য করা হয়নি।

গত ৫ অগাস্ট বাংলাদেশ ছেড়ে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর থেকেই বার বার প্রশ্ন উঠেছে ভারত তাকে অনির্দিষ্টকালের জন্য আশ্রয় দেবে কি না। বাংলাদেশের তরফেও কার্যত স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছিল যে, সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে ফেরত পাঠানোর চিঠি দিল্লিকে দেওয়া হবে। সোমবার নোট ভার্বালের আকারে সেই চিঠি পাঠানো হয়েছে।

বস্তুত, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস জানিয়েছিলেন, ''প্রতিটি হত্যার বিচার হবে।'' হাসিনার বিরুদ্ধে শতাধিক মামলা হয়েছে বাংলাদেশে। সেই মামলার বিচারের জন্যই তাকে দেশে ফেরানোর চেষ্টা শুরু হয়েছে।

ভারতের অবস্থান

হাসিনা ভারতে আশ্রয় নেওয়ার পর পার্লামেন্টে বিবৃতি দিয়ে সে কথা জানিয়েছিল ভারত সরকার। এস জয়শংকর জানিয়েছিলেন, মানবিক কারণেই বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। তবে তিনি কতদিন ভারতে থাকবেন, সে বিষয়ে সে সময় কোনো মন্তব্য করা হয়নি। ঢাকা সরকারিভাবে হাসিনাকে ফেরত চেয়ে পাঠানোর পর বিশ্বের মঞ্চে এবিষয়ে ভারত আলোচনার রাস্তা তৈরি করবে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। অ্যামেরিকায় সেই আলোচনার সূত্রপাত হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

বস্তুত, জয়শংকর অ্যামেরিকা যাওয়ার ঠিক আগেই বাইডেন প্রশাসনের তরফে মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সুলিভান সোমবার রাতে ফোন করেন ইউনূসকে। সেখানে মূলত মানবাধিকার প্রসঙ্গে আলোচনা হয়েছে বলে অ্যামেরিকা জানিয়েছে।

এদিকে মঙ্গলবার অ্যামেরিকা যাচ্ছেন জয়শংকর। ছয়দিনের সফরে একাধিক প্রশাসনিক কর্তার সঙ্গে বৈঠক হওয়ার কথা জয়শংকরের। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তরফে যে বিবৃতি দেওয়া হয়েছে, তাতে বলা হয়েছে, ''দ্বিপাক্ষিক, আন্তর্জাতিক এবং আঞ্চলিক বিষয়ে বৈঠক করবেন জয়শংকর।'' বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, বাংলাদেশ প্রসঙ্গকে গুরুত্ব দেওয়ার জন্যই আঞ্চলিক শব্দটি যুক্ত করা হয়েছে ওই বিবৃতিতে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানিয়েছে, বর্তমান প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকের পাশাপাশি পরবর্তী মার্কিন প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গেও আলোচনায় বসার কথা জয়শংকরের। অর্থাৎ, ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে ঢোকার আগেই তার প্রশাসনের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে আসতে চাইছে ভারত। এবং সেই বৈঠকে বাংলাদেশ গুরুত্ব পেতে পারে বলেও মনে করা হচ্ছে।

এদিকে, ঢাকার তরফে জানানো হয়েছে, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বন্দি প্রত্যার্পণ চুক্তি আছে। সেই চুক্তি মেনেই হাসিনাকে ফেরত চাওয়া হয়েছে।

এসজি/জিএইচ (পিটিআই, রয়টার্স)