1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মিউনিখে নজর কাড়ছে মেরিনা তাবাসসুমের স্থাপত্য প্রদর্শনী

১৮ এপ্রিল ২০২৩

অনবদ্য ও নান্দনিক স্থাপত্যকর্ম দিয়ে আগেই স্থাপত্যপ্রেমীদের হৃদয় জয় করেছিলেন মেরিনা তাবাসসুম৷ এখন জয় করছেন জার্মানি৷

https://p.dw.com/p/4QFA8
Marina Tabassum, Architektin
ছবি: Marina Tabassum Architects | MTA

মিউনিখে ৯ ফেব্রুয়ারি শুরু হওয়া তার স্থাপত্য প্রদর্শনীটি দেখেছেন প্রায় ২৫ হাজার দর্শক৷ চলবে আগামী ১১ জুন পর্যন্ত৷ মেরিনার স্থাপত্য প্রদর্শনীর মধ্য দিয়ে জার্মান দর্শক চিনছে বাংলাদেশকে৷

দূর থেকে দৃষ্টিগোচর হয় কাচের দেয়ালে জ্বলজ্বল করা একটি বিশাল পোস্টার! শিরোনাম ‘মেরিনা তাবাসসুম আর্কিটেক্টস: ইন বাংলাদেশ৷' জার্মানির মিউনিখে পিনাকোথেক ডার মডার্ন মিউজিয়ামে এ যেন একখণ্ড বাংলাদেশ! দর্শক ঘুরে ফিরে বিস্মিত হয়ে তাকিয়ে দেখছেন মেরিনা তাবাসসুমের সৃষ্টিশীল কর্মযজ্ঞ৷ তার স্থাপত্যগুলোর মধ্যে স্থানান্তরযোগ্য বাড়ি ‘মুন্সিগঞ্জ-দোহার-বিক্রমপুর' আলাদা দৃষ্টি কেড়েছে দর্শকের৷ জাদুঘরের প্রবেশমুখে শোভা পাচ্ছে আস্ত বাড়িটি৷

মেরিনার চিন্তাশীল কর্মে উপাদান থাকে বাংলাদেশের ইতিহাস, প্রকৃতি, জলবায়ু এবং সংস্কৃতি৷ কাজের মধ্যে অনুসন্ধানমূলক প্রক্রিয়ার ব্যবহারের জন্য তাকে সমকালীন সেরা স্থপতিদের একজন মনে করা হয়৷ চরের মানুষের জন্য তৈরি প্রমাণ সাইজের স্থানান্তরযোগ্য এ বাড়ির নকশা তৈরি হয় বাঁশ আর ইস্পাত দিয়ে৷ রোহিঙ্গাদের জন্য তৈরি জনপরিসর বা কমিউনিটি স্পেসের নমুনা প্রদর্শনীর উল্লেখযোগ্য স্থাপত্য৷

স্থানীয় পত্রিকাগুলোর খবরে জানা গেছে, তার স্থানান্তরযোগ্য বাড়ি তৈরির একটি ইতিহাস৷ বেশ কয়েক বছর আগে চর ও চরের মানুষদের নিয়ে একটা গবেষণা করেছিলেন মেরিনা৷ সে গবেষণার ভিত্তিতে দোহারে তৈরি এ রকম তিনটি বাড়ির নকশা ২০১৯ সালে শারজা বিয়েনালে প্রথম স্থান পায়৷ চরের মানুষের কথা ভেবে ‘খুদে বাড়ি'র (ছোট বাড়ি) নকশা করেন৷ করোনার বিধিনিষেধে প্রথম এর নমুনা তৈরি করেছিলেন ঢাকায়৷ যমুনার চর হিজলায় পরপর আরও চারটি৷ সেগুলোও প্রদর্শনীতে রয়েছে৷

৯ ফেব্রুয়ারি শুরু হওয়া প্রদর্শনীটি আয়োজন করতে সময় লেগেছে প্রায় এক বছর৷ মেরিনা ১৯৯৫ সালে স্থপতি কাশেফ মাহবুব চৌধুরীর সঙ্গে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন আরবানা৷ ২০০৫ সালে প্রতিষ্ঠা করেন নিজের প্রতিষ্ঠান ‘মেরিনা তাবাসসুম আর্কিটেক্টস'৷ ২৮ বছরের কর্মযাত্রায় মেরিনা সৃষ্টি করেছেন অসংখ্য স্থাপত্য৷ তার উদ্ভাবনা থেকে বাছাই করা নকশা নিয়ে তিন কক্ষজুড়ে চলছে তার প্রথম একক প্রদর্শনী৷ এটি ছবি, অডিও–ভিজ্যুয়াল উপস্থাপনা আর বিরাটকায় বা ক্ষুদ্রাকার বিচিত্র স্থাপনা দিয়ে সাজানো হয়েছে৷

প্রদর্শনীতে স্থান পেয়েছে ২০১৬ সালে আগা খান পুরস্কার পাওয়া ঢাকার দক্ষিণ খানের বায়তুরক; রউফ মসজিদ, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের স্বাধীনতা স্তম্ভ, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য নির্মিত বাড়িসহ শহরতলি আর শহরের শতাধিক নকশা৷ তার এই প্রদর্শনী দর্শকদের কাছে অর্থবহভাবে তুলে ধরতে কিউরেট করেছেন জার্মানির স্থাপত্য–ইতিহাসবিদ ভেরা সিমোন বাডের৷ প্রদর্শনী উপলক্ষে মেরিনা তাবাসসুমের সৃষ্টিশীল কর্মযাত্রা নিয়ে প্রকাশিত হয়েছে একটি বইও৷

২০২০ সালে মেরিনা তাবাসসুম এই জাদুঘরে বক্তৃতা দেয়ার সময় তার কাছে জাদুঘরের পরিচালক একটি প্রদর্শনীর প্রস্তাব দেন৷ করোনায় তা সম্ভব হয়নি৷ যদিও করোনা চলাকালে তিনি অনন্য এক সম্মাননা পেয়েছেন৷ টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি অব মিউনিখ তাকে সম্মানজনক ডক্টরেট ডিগ্রি দিয়েছে৷ এই প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তার হাতে ডক্টরেট উপাধির অভিজ্ঞানপত্র তুলে দেয়া হয়৷

জানা গেছে, ১১ জুন মিউনিখে প্রদর্শনী সমাপ্ত হলে যাবে হল্যান্ডে রটারডামে৷ তারপর যাবে পর্তুগালের লিসবনে৷ মেরিনা প্রদর্শনীটি লন্ডন, নিউইয়র্কসহ আরও কয়েকটি শহরে নিয়ে যেতে চান৷ উল্লেখ্য, মেরিনা তাবাসসুম প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক স্বাধীনতা স্মৃতিস্তম্ভ ও মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর পুরস্কার (১৯৯৭), ভারতে সেরা স্থপতি পুরস্কার (২০০১), আর্নল্ড ডব্লিউ ব্রুনার মেমোরিয়াল প্রাইজ (২০২১), পুর্তগালে আজীবন সম্মাননা পুরস্কার (২০২২) সহ বেশ কয়েকটি সম্মাননা ও পুরস্কার পেয়েছেন৷

জেকে/কেএম (জার্মান-আর্কিটেক্টস্ ডটকম, বাস্টলার ডটনেট)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য