রবির থেকে শেখা
২১ ডিসেম্বর ২০১২গত ১১ই ডিসেম্বর ৯২ বছর বয়সে মারা যান ‘সেতারের জাদুকর' পণ্ডিত রবি শঙ্কর৷ বাংলাদেশের কাছে তিনি শুধু সংগীত সাধকই নন, তার চেয়ে অনেক বেশি কিছু৷ একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধে তাঁর ভূমিকার কথা কী করে ভোলে বাংলাদেশ! বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় রবি শঙ্কর সারা বিশ্বে পৌঁছে দিয়েছিলেন মুক্তিকামী বাঙ্গালিদের কথা৷ পাক বাহিনীর বর্বরতার খবর বিশ্বের সব মানবতাবাদীর কাছে পৌঁছৈ দিতে বড় ভূমিকা রেখেছিল নিউ ইয়র্কে তাঁর উদ্যোগেই আয়োজিত ‘কনসার্ট ফর বাংলাদেশ'৷
তাঁর ডাকেই ছুটে এসে বিটলস তারকা, বন্ধু জর্জ হ্যারিসনও দাঁড়িয়েছিলেন পাশে৷ বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় পণ্ডিত'জির যে স্মরণসভা হলো সেখানে এসেছিলেন হ্যারিসনের স্ত্রী অলিভিয়া৷ রবি শঙ্করের স্ত্রী সুকন্যা, দুই মেয়ে নোরা জোনস ও অনুশকা শঙ্করসহ অনেকেই হাজির ছিলেন সেখানে৷ প্রয়াত সুরসাধকের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে আবেগ সামলাতে পারেননি বহু মানুষ৷ জর্জ হ্যারিসনের স্ত্রী তাঁর বক্তব্য শুরুই করেন বিটলস, সংগীত এবং মানবতার প্রতি রবি শঙ্করের অসাধারণ অবদানের অকুণ্ঠ প্রশংসা দিয়ে৷
অলিভিয়া হ্যারিসন বলেন, ‘‘হ্যারিসন আর রবি শঙ্কর ছিলেন পিতা-পুত্র বা সহোদর ভাইয়ের মতো৷ দুজন দুজনকে মাতিয়ে রাখতেন৷ দুজনে প্রায়ই সংগীত সম্পর্কে নানান ধারণা বিনিময় করতেন৷ এই দুই বন্ধুর কাছ থেকে বিটলস অনেক কিছু শিখেছে৷''
কথাগুলো নতুন নয়৷ রবি শঙ্করকে জর্জ হ্যারিসন ‘গডফাদার অফ ওয়ার্ল্ড মিউজিক' বলতেন, বিশ্ববিখ্যাত বেহালা বাদক ইয়েহুদ মেনুহিন তাঁকে তুলনা করতে মোৎসার্টের সঙ্গে – এসব কে না জানেন!
তাই সে কথাগুলোই ফিরে ফিরে এসেছে নানাজনের স্মৃতিচারণায়৷ এসেছে বাংলাদেশের হয়ে ৪০ বছর আগে নিউ ইয়র্কের বুকে কনসার্ট আয়োজন করে বিশ্বকে নাড়িয়ে দেয়ার প্রসঙ্গও৷ এডি জিমেনেজ একজন ট্রাম্পেট বাদক৷ রবি শঙ্কর সম্পর্কে এ সব কথা ফুটে উঠেছে তাঁর শ্রদ্ধার্ঘ্যেই৷ ৬১ বছর বয়সি জিমেনেজ মনে করেন, ‘‘রবি শঙ্কর শুধু পূর্ব আর পশ্চিমকে মিলিয়ে দেয়া সেতু নয়, তিনি আসলে মানবতারও সেতুবন্ধন৷ তাঁকে শ্রদ্ধা জানাতেই আমি আজ এখানে এসেছি৷''
এসিবি/ডিজি (এএফপি)